বহুরূপে মানুষ, মানুষ শৈশবেই কেবল মানুষ থাকে। যৌবনে জন্তু হয়। বয়স যত বাড়তে থাকে, সিংহভাগই, ধার্মিক হওয়ার চেষ্টা করে। আসলে মানুষের মত বহুরূপী প্রাণী পৃথিবীতে দ্বিতীয় আছে বলে মনে হয় না। শৈশবে একজন শিশু আর একজন শিশুকে শুধু নিজের মত একজন মানুষ হিসেবেই দেখে (যদিও এ সময় তার জাতের নাম যে ‘মানুষ’, তাও তার অজানা থাকে)। এ ছাড়া তার কাছে অন্য কোন পরিচয় থাকে না। তাই তারা খুব দ্রুত পরস্পর পরস্পরের বন্ধু হয়ে যায়। কে কালো, কে সাদা; কে হিন্দু, কে মুসলমান; কে নারী কে পুরুষ ইত্যাদি -- কোন বিষয়ই তাদের কাছে কোন গুরুত্ব পায় না, প্রাধান্য তো পায়ই না। সে যত বড় হয়, তত সমস্যা বাড়ে। তাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়, তার সঙ্গে অন্যের পার্থক্য কোথায়। এই পার্থক্যবোধই বৈষম্যের জন্ম দেয়। বৈষম্য তৈরি করার উদ্দেশ্যেই এই পার্থক্যবোধ শিশুর মধ্যে গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই মানুষ যখন যৌবনে পদার্পণ করে, সে তখন জান্তব চেহারা নেয়। তার দৈহিক ও মানসিক শক্তি তাকে কিছু পরোয়া না করার পরামর্শ দেয়। বৈষয়িক ও চতুর যারা, তারা এদের উস্কে দেয় অসম্ভবকে সম্ভব করার, কখনও কখনও অনুচিতকে ঔচিত্যের মোড়ক দেওয়ার কাজে। ফলে তা
ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ