ইতিহাসের কাজ বীর পূজা করা নয়, তার কাজ নির্মোহ এবং নৈর্ব্যক্তিকভাবে সত্যকে তুলে ধরা। একাজে দরকার যুক্তি, বুদ্ধি, ও তথ্যের সাহায্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে বিচার-বিশ্লেষণ করে সত্যে উপনীত হওয়ার মত মনস্তাত্ত্বিক শক্তি। এই শক্তির নাম বিজ্ঞান মানসিকতা বা বিজ্ঞানমনস্কতা। বীরপূজা রাজনীতিকের কাজ, বিশেষ করে দক্ষিণপন্থী রাজনীতিবিদরা এটাকে একটা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। বামপন্থী রাজনৈতিকরা যদি এই পথের পথিক হয়, তাহলে বুঝতে হবে এই বামপন্থা ক্রমশ দক্ষিণ পন্থার দিকে ঢলে পড়ছে। ঐতিহাসিকদের বা ইতিহাসবীদর কাজ হচ্ছে রাজনীতিকদের কবল থেকে ইতিহাসকে মুক্ত রাখা। ইতিহাসকে নৈর্ব্যক্তিক চেহারায় টিকিয়ে রাখা।
ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ ...