সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

২০২২ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অশিক্ষিত কে?

আমি চাকরি করি। সরকারি কিম্বা সরকার পোষিত কোন সংস্থায়। মাইনে কত পাই? একটা বেসরকারি সংস্থার থেকে তিন থেকে চার গুণ। বিশাল ভালো না থাকলেও অনেকটাই নিশ্চিন্তে আছি। কারণ, চাকরি যাওয়ার ভয় নেই। মাইনে যা পাই তাতে অভাবটাও বুঝতে পারি না। কিন্তু কাজে ফাঁকি দেওয়া কিম্বা ঘুষ নেওয়ায় আমি ওস্তাদ। কারণ,তাতে আমার কোন ক্ষতি দেখিনে। উল্টে ঘুষ নিতে পারলে বাড়তি পাওনা। আমার মত চালাক কে আছে? ঠিক। আমি খুব চালাক। বুদ্ধিমান কি? আচ্ছা একটু ভেবে দেখি তো! দেবে দেখলাম। কী পেলাম?পেলাম - ১) আমার এই ফাঁকি দেওয়া দেখে আর একজন ফাঁকি দিতে অথবা ঘুষ নিতে উৎসাহিত হবে। কারণ,এই কাজে আমি আমার যদি কোন দোষ না দেখি, অন্য মানুষ কেন দোষ দেখবে?সেও আমারই মত সুযোগ পেলে আমার কাছ থেকেও ঘুষ চাইবে। না দিলে সময়মত কাজটা করে দেবে না। ২) সবাই আমার মত ফাঁকি দেয় না বা ঘুষ নেয় না জানি। আমার মত গুটিকতক চালাক লোকই এটা করতে পারে। বোকারা পারে না। আপনিও তাই ভাবেন?যদি ভাবেন, তাহলে আপনিও আমার মত মস্তবড় চালাক বটে,কিন্তু সেই সঙ্গে মস্তবড় লেখাপড়া জানা ও ডিগ্রিধারী একজন মানুষ। সেই সঙ্গে আমার মতই আপনিও মস্তবড় একজন অশিক্ষিত মানুষ। কেন? সেটাও ভেবে

নামাজ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার সঙ্গতি ও অসঙ্গতি

১) হযরত মুহাম্মদ এর জন্ম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ। ২) নবুয়ত পেয়েছেন ৬১০ খ্রিস্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে ৩) নবীজি মেরাজে গেছেন ৬২২ খ্রিস্টাব্দে নবুওয়াতের ১২ তম বছরে ৪) হিজরত করেছেন ৬২৩ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ মদিনায় গেছেন। বলা হয় নবীজি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে এসেছেন মেরাজে গিয়ে ( ৬২২সালে)  আল্লাহর কাছ থেকে। ---- সূত্র হলো  ১) বুখারী শরীফের 349 নম্বর হাদিস  ২) মুসলিম শরীফ 401 নম্বর হাদিস। বলা হচ্ছে  ১) সূরার রুম এর ১৭ এবং ১৮ নম্বর আয়াতে চার ওয়াক্ত নামাজের কথা বলা আছে। ২) সূরা তোহা ১৩০ নম্বর আয়াতে ৫ ওয়াক্ত নামাজের ইঙ্গিত করা হয়েছে ৩) সূরা নূরের 58 নম্বর আয়াতে এশার নামাজের কথা বলা হয়েছে। ৪) সূরা মায়েদার ২৩ নম্বর আয়াতে দায়নি সালাতের (সার্বক্ষণিক সালাত) কথা বলা হয়েছে। এই সালাতকে দু ভাগে ভাগ করে আদায়ের কথা বলা আছে। একটি প্রকাশ্য  অন্যটি অপ্রকাশ্য - আত্মসমালোচনা করার জন্য। ৫) সূরা নিসার ১৫১ ও ৫২ নম্বর আয়াতে নামাজের কথা বলা হয়েছে এখন দেখুন : ১) সূরা রুম নাজিল হয়েছে ৬১৫ সালে। অর্থাৎ নবুয়াতের পাঁচ বছর পর এবং মেরাজের ৭ বছর আগে। ২) সূরা ত্বহা আবির্ভূত হয়েছে ৬১৬ সালে। অর্থাৎ ন

চিন্তার রোগ কী?

চিন্তারও রোগ হয়  ফটাস করে বিশ্বাস, নয় তো ফটাস করে অবিশ্বাস - এটা আমাদের বহুচর্চিত বদ-অভ্যাস। এটা আসলে এক ধরণের রোগ। চিন্তা যখন রোগের কারণ হয়, তখন তাকে 'চিন্তারোগ' বলে। আর যখন চিন্তায় রোগ বাসা বাঁধে তখন তাকে বলে  ‘চিন্তার দৈন্যতা’ । এটাই চিন্তার রোগ । আসলে, চিন্তা করার একটি বিজ্ঞানসম্মত পন্থা আছে। সেই পন্থা অনুসরণ করেই সিদ্ধান্ত টানতে হয়। তারপর বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাস করতে হয়। সেটা না করলেই এটা রোগ হিসাবে  চিন্তায় বাসা বাঁধে।  আমরা অধিকাংশ মানুষই সেই পন্থা অনুসরণ করি না। করি না, তার কারণ, জানিনা।  চিন্তাকে ত্রুটিমুক্ত করতে গেলে তিনটি জিনিসের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। আর তা হল, যুক্তি, বুদ্ধি আর তথ্য। এই তিনটি বিষয়ের সঙ্গে পূর্ব অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে এবং তাঁকে সঠিক পন্থায় কাজে লাগাতে পারলে কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্য সিদ্ধান্ত টানতে সাহাজ্য করে। আর পূর্ব অভিজ্ঞতা সেই সিদ্ধান্তকে প্রামাণ্যতা দেয়। তাই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে গেলে মানুষকে যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে, তার সত্যাসত্য যাচাই করে, তবেই তা গ্রহণ অথবা বর্জন করতে হয় ।  আমরা অধিকাংশ মানুষই এই পদ

মানুষের প্রকৃত বন্ধু কে এবং কেন?

মানুষের প্রকৃত বন্ধ  Who is the true friend of man and why? শিক্ষাই একমাত্র বন্ধু, যে কখনো প্রতিদান চায়না। আমৃত্যু শুধু দিয়েই যায়: নিঃশর্ত সঙ্গ, সমর্থন ও সহযোগিতা। তাই বন্ধুত্ব যদি পাতাতেই হয়, তবে তা শিক্ষার সঙ্গেই পাতাও। কারণ, একমাত্র শিক্ষাই পারে তোমাকে বিপদে-আপদে, সংশয়ে-সংকটে - সব সময়ই নিঃশর্ত সঙ্গ দিতে। বিপদে পড়লে শিক্ষাই তোমাকে বাতলে দেবে কীভাবে তুমি সেই বিপদ থেকে মুক্তি পাবে। সাফল্য বা আনন্দের খবর এলে, সে-ই বলে দেবে কীভাবে তুমি তা উদযাপন করবে। আবার যদি গভীর সংকটে ডুবে যেতে থাকো, তবে তোমার শিক্ষাই তোমাকে বলে দেবে, এ সংকট মুক্তির প্রকৃত উপায় ও তা কার্যকর করার পদ্ধতি কী হবে। অর্থাৎ শিক্ষাই একটু একটু করে উন্মুক্ত করে দেবে জগত ও জীবনের মূল চালিকাশক্তির হদিস।  তাহলে প্রশ্ন হল শিক্ষা কী? কীভাবে তাকে অর্জন করতে হয়? বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

শান্তি স্থাপনের উপায় কী

শক্তি প্রদর্শন কী জয়লাভের একমাত্র চাবিকাঠি?  শক্তির আস্ফালন ও তার প্রদর্শনী যদি জয়লাভ ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হতো তবে আস্ত ভূগোলকটাই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্র হতো। এটা না বুঝে যারা কাশ্মীর, প্যালেস্টাইন মায়ানমার-সহ বিশ্বব্যাপী জাতি-সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন তাঁরা গহীন সমুদ্রে ডুব দিয়ে মুক্ত খোঁজার চেষ্টা করছেন। What is the way to make peace?

শিক্ষিত হওয়ার উপায়

শিক্ষিত হতে গেলে এমএ, বিএ, এমএসসি, এম কম ইত্যাদি পাস করতেই হয়, বিষয়টা মোটেই তেমন নয়। মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করলেই চলে। প্রয়োজন শুধু নিরন্তর পড়াশোনা (পড়া আর শোনা) করা। চাই জগৎ ও জীবনকে জানার উদগ্র বাসনা। ‘পড়াশোনা’ শব্দটার মধ্যে দুটো জিনিস আছে। একটা পড়া, অন্যটা শোনা। পড়া মানে নিজে নিজে পড়া। বিষয়ভিত্তিক বই, পত্রপত্রিকা, কিম্বা ম্যাগাজিন ইত্যাদি সংগ্রহ করে নিজে নিজে পড়তে থাকা। আর শোনা মানে, জানা-বোঝা মানুষের (বিভিন্ন বিষয়ে যারা বিশেষ পান্ডিত্ব অর্জন করেছেন) মতামত, বক্তব্য ইত্যাদি শোনার মাধ্যমে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সত্য উপলব্ধি করার চেষ্টা করা। এই দুটো পদ্ধতিতে একজন মানুষ সারা জীবন ধরে পড়াশোনা করতে পারেন। জগৎ ও জীবনের চালিকাশক্তিকে নিজস্ব যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে তার নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আমরা সাধারণত সেটা করি না। তাই লেখাপড়া শিখেও (এম এ বিএ এমএসসি এম কম পাস করেও) শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারি না। আমাদের ধারণা, শিক্ষিত হতে গেলে বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করতে হয় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এটা একটা পদ্ধতি বটে, কিন্তু একমাত্র নয়। শিক্ষা নিজে-নিজেই এবং নিজের

ধর্মের সঙ্গে গণতন্ত্র ও অসাম্যের সম্পর্ক

The-relationship-between-religion-and-democracy-and-inequality যে দেশের মানুষ যত বেশি ধর্মের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস অবলম্বন করে বাঁচে সেদেশের গণতন্ত্র তত দুর্বল হয় এবং রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য তত বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। আসলে ধর্ম ও অন্ধ বিশ্বাস পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে চলে। বলা ভালো, ধর্মের যারা ধারক ও বাহক বলে নিজেদের দাবি করে, তারাই এই দুটোকে পাশাপাশি রেখে দেয়। এই রাখার পিছনে তাদের প্রধানত দুটো উদ্দেশ্য কাজ করে। ১) আর্থিক এবং ২) রাজনৈতিক। ধর্মের ভিত্তি হচ্ছে একমাত্র বিশ্বাস। কারণ, বিশ্বাস বাদ দিলে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের আর কিছু থাকে না। কেননা, জাগতিক সব কিছুকে যুক্তি বুদ্ধি ও তথ্য দিয়ে বিচার করা সম্ভব। কিন্তু ঈশ্বেরর ধারণা এভাবে বিচার করা যায় না। বিচার করা যায় না তার বড় কারণ, ধর্ম দর্শন অনুযায়ী স্বয়ং ঈশ্বর-ই এ বিষয়ে গোপনীয়তা অবলম্বন করেন। তার স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁকে নিশর্ত বিশ্বাস করতে হবে। কোনো প্রশ্ন বা সংশয় প্রকাশ করা যাবে না। এই বিশ্বাসের দর্শন সবচেয়ে সহজ একটা পন্থা যা দিয়ে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ধর্মের এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর আদি লগ্ন থেকে এক শ্রেণির মানুষ তাদের আর্থি

পৃথিবী কেমন, সুন্দর না অসুন্দর?

পৃথিবীর সব কিছুই সুন্দর। যা কিছু অসুন্দর তা কেবল মানুষেরই তৈরি।

স্বামীজির সমাজ দর্শনের মূল কথা

স্বামীজির সমাজ দর্শনের মূল কথা The-essence of Swamiji's social philosophy আপনি কি স্বামীজির ভক্ত? বেশ। তাহলে তো স্বামীজির সমাজ ও ধর্ম-দর্শনকে শ্রদ্ধা করেন। তাই তো? তাহলে আগামীতে ভারতে শূদ্রদের আধিপত্য কায়েম হবে। মানতে পারবেন? এটা তাঁর ভবিষ্যৎবাণী এবং তাঁর একান্ত চাওয়া। আপনি কি সেই চাওয়াকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন? কী? উত্তর দিতে সমস্যা হচ্ছে? তাহলে স্বামীজির 'বর্তমান ভারত' পড়ুন। বর্তমান ভারতে স্বামী বিবেকানন্দ বৈদিক যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসন পর্যন্ত ভারতের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস পর্যালোচনা করেছেন। এই পর্যালোচনার মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণ পুরোহিত, পরে শক্তিশালী যোদ্ধা বা ক্ষত্রিয়রা এবং সবশেষে বৈশ্যরা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। ইতিহাসের এই ব্যাখ্যা শেষে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে, চক্রাকার পথে বৈশ্যের পর এবার ভারতীয় সমাজে শূদ্রের জাগরণ ঘটবে এবং তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। শুধু হবে না, তার ভাবনায় এবং চাওয়ায় - এটা হতে বাধ্য। এভাবে সমাজের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হাতেই ভবিষ্যত ভারতীয় সমাজ গড়ে উঠবে - এটাই ছিল তার ভবিষ্যৎবাণী। তিনি এই গ্রন্থ

শিক্ষার দৈনতা

শিক্ষার দৈনতা কী? What is the poverty of education? যিনি যতটুকু জানেন তিনি ততটুকুই বলেন। কিন্তু ভুলে যান যে, তার বাইরেও অনেক কিছু থাকতে পারে, যা তিনি জানেন না। এই ভুলে যাওয়াটা আসলে তার শিক্ষার দৈন্যতা।

স্বাধীনতার আগের ও পরের শাসনের পার্থক্য

১৯৪৭ সালের আগে প্রায় ২০০ বছর দেশ শাসন করেছে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি । কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টররা সরাসরি এই শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকত না। তারা তাদের সমর্থক রাজনিতিকদের দেশ শাসনের দায়িত্বে বসাতেন। তাদের দিয়েই কোম্পানি ভারত সহ অন্যান্য উপনিবেশগুলোর নীতি নির্ধারণ ও তার প্রয়োগ ঘটাতেন। বলা বাহুল্য, এই নীতি নির্ধারণ ও প্রয়োগের মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক লাভ। ভারতীয় অর্থনিতির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ক্ষেত্র যেমন শিল্প নীতি, কৃষি নীতি, বাণিজ্য নীতি - সবই নির্ধারিত ও পরিচালিত হত ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির স্বার্থকে সামনে রেখে। ভুরিভুরি উদাহরণ রয়েছে কোম্পানির সঙ্গে তৎকালীন ভারত সরকারের এই অশুভ আঁতাতের। মাত্র দুটো উদাহরণ দেখুন।  ১৮৩২ সালে ভারতে রেলপথ স্থাপনের প্রস্তাব ওঠে। কেন? ব্রিটিশ পুঁজির বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা এবং বিদ্রোহ দমন সহ অন্যান্য সামরিক প্রয়োজন মেটানো। ভারতের সাধারণ মানুষের ভালোমন্দের বিষয় এখানে একরত্তিও গুরুত্ব পায়নি। ইচ্ছা করলেই রেলপথ নির্মাণের দায়িত্ব সরকার নিতে পারত। কিন্তু নেয় নি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের পুঁজিপতিদের চাপে এই দায়িত্ব বেসরকারি ক

নিজের সমস্যা সম্পর্কে মানুষের ধারণা

প্রায় সব মানুষই ভাবে, তার জীবনের সমস্যাটাই পৃথিবীর সব মানুষের সব সমস্যার চেয়েও বড় সমস্যা। এমন ভাবার কারণ হল, এক-জীবন সময়টা এত ছোট যে তা দিয়ে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে আসা মানবজীবন ও তার মনস্তত্ত্ব বুঝতে পারা প্রায় অসম্ভব। ফলে আমাদের এই জীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে এ বিশাল জগৎ ও জীবন জুড়ে যে জটিলতা বর্তমান তা বুঝতে পারাও প্রায় অসম্ভব। তবু আমরা চেষ্টা করি বোঝার। বুঝতে বুঝতে এমন একটা সময় আসে যখন আমার মনে হয় যে, এখন আমি সব বুঝতে শিখেছি। এটা একটা মারাত্মক ভ্রান্তি। এই ভ্রান্তিই আমাদের ভুলিয়ে রাখে যে, জীবনের শেষ ক্ষণে এসেও জগৎ ও জীবন সম্পর্কিত শিক্ষার শেষ হয়েছে ভাবাটা মস্ত বড় বোকামি। People's-perceptions-of-their-own-problems People's perceptions of their own problems

আপনি কী চালাক?

 কাছের লোকের অপরাধ বা ভুল দেখতে পান যিনি, তিনি হয় সৎ, নয় তো বোকা। চালাক মোটেও নয়। Are you clever? Are-you-clever

চালাক ও বুদ্ধিমান শব্দের পার্থক্য কোথায়?

চালাক হওয়ার চেয়ে বুদ্ধিমান হওয়া জরুরি। কারণ, চালাকির মধ্যে অসততার আস্ফালন থাকে আর বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে থাকে বৈধ যুক্তিবোধ, সততা ও সারল্যের প্রাচুর্যতা। এরাই সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি। ফলে সততা সাফল্য বয়ে আনে আর চালাকি আনে অধঃপতন। চালাকির ভিত্তি হচ্ছে অসততা, আর বুদ্ধিমত্তার ভিত্তি সততা। তাই চালাক হওয়ার চেয়ে বুদ্ধিমান হওয়া জরুরি। কারণ, অসৎ  অসততা আরও এক অসত্যকে ডেকে আনে। ফলে সমস্যা আড়ে-বহরে বাড়তেই থাকে। অন্যদিকে সততা সমস্যাকে ডেকে তো আনেই না বরং তাকে সমূলে উৎখাত করতে সাহায্য করে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, একটা মিথ্যাকে ঢাকতে আরও চারটে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। কিন্তু সত্যকে কখনোই মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় না। কারণ, সততার সঙ্গে সত্যের গভীর সম্পর্ক থাকে। সততাকে বাদ দিয়ে সত্য এক পা-ও চলতে পারে না। তাই বুদ্ধিমান লোকেরা কখনোই সততাকে উপেক্ষা করে না। উল্টোদিকে, মিথ্যাকে সব সময় অসততাকে আশ্রয় করেই চলতে হয়। কেননা, মিথ্যার সঙ্গে অসততার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। মিথ্যা ছাড়া অসততা আর অসততা ছাড়া মিথ্যা কখনোই সক্রিয় হতে পারে না। সোজা কথায় এরা একে অপরের পরিপূরক। Where-is-the-difference-betwe

বর্তমান সময়েও ধর্মের টিকে থাকার কারণ

ধর্ম দু'ধরনের। একটা মানসিক বা মানবিক। অন্যটা প্রাতিষ্ঠানিক। মানবিক ধর্মের জন্ম হয় মানুষের অন্তরে। এর কোন প্রতিষ্ঠাতা নেই। মানুষের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই তার অন্তরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জন্ম নেয় এই ধর্মবোধ। অন্যদিকে, পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষ তার অন্তরে জীবন ও জগত সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা, ভালোলাগা, ভালোবাসা ইত্যাদির জন্ম হয়, তার উপর ভিত্তি করে তার যে বিশ্বাস গড়ে ওঠে, তা-ই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম। তাই এর প্রতিষ্ঠাতা আছে। আছে প্রচারক সংগঠন। একজন মানব শিশু যখন জন্মায় তখন তাকে শিখিয়ে দিতে হয় না মানুষকে ভালোবাসার কথা, টিফিন ভাগ করে খাওয়ার কথা। এগুলো তার মানবিক ধর্মের প্রতিফলন। এগুলো নিয়েই সে জন্মায়। কিন্তু তাকে শিখিয়ে দিতে হয় কে আপন, কে পর। তাকে শিখিয়ে দিতে হয় তার প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম কী। কীভাবে চালাকির আশ্রয় নিয়ে, সত্য গোপন করে, নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে হয়। মৃত্যু ভয় ও রোগ-ব্যাধির ভয় আছে বলেই ধর্ম নামক প্রতিষ্ঠানটা এখনো টিকে আছে। যারা এই ভয় পায় না, তারাই প্রাতিষ্ঠানিক ধার্মিকদের কাছে নাস্তিক নামে পরিচিতি পেয়ে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম তারা পালন করে না। অন্যদিকে মানব ধর্মকে তারা অক্ষরে অ

ধর্ম সম্পর্কে শিবাজী

ধর্ম সম্পর্কে শিবাজীর বক্তব্য ছত্রপতি শিবাজী অন্য কোন ধর্মের বিরুদ্ধাচারণ করার অর্থ নিজের ধর্ম পরিত্যাগ করা। জানেন, কে বলেছিলেন? বলেছিলেন ছত্রপতি শিবাজি। পাঠকের প্রতিক্রিয়া দেখুন ফেসবুকে

সত্য উপলব্ধির উপায় কী?

আমরা যা কিছু দেখি বা শুনি তাকে যুক্তি, বুদ্ধি এবং তথ্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তার সত্য সত্য যাচাই করে তবে তাকে গ্রহণ বা বর্জন করতে হয়। এটাই সত্য উপলব্ধির একমাত্র উপায়। যারা এই উপায় অবলম্বন করে, তারাই প্রকৃত সত্যের সন্ধান পায়। এবং যারাই জগৎ ও জীবন সম্পর্কে এই চরম পরম প্রকৃত সত্যের সন্ধান পায় বা পাওয়ার চেষ্টা করে তারাই শিক্ষিত। What-is the-way-to-realize-the-truth

ধর্ম সম্পর্কে ঔরাংজেবের বক্তব্য

১৬৫৮ সাল। মেবারের রানা তখন রাজসিংহ। মুঘল সম্রাট লিখছেন রাজসিংহ কে, “বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তিতে দিন কাটাতে হলে একে অপরের ধর্মকে গ্রহণ করতে হবে। তবেই দেশের সমৃদ্ধি আসবে।” বলুন তো কে এই মুঘল সম্রাট? শুনলে বিভেদপন্থী রাজনীতিকরা চমকে যাবেন। নাম ঔরঙ্গজেব। প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন তথ্যসূত্র : Nargis Akhter আবুল ফজলের লেখা পড়ুন।  অথবা, ন্যাশনাল বুক এজেন্সি একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বই প্রকাশ করেছে। ওটা পড়তে পারেন। নাম ‘ভারতীয় সভ্যতার বিকাশের ধারা’।  এছাড়া মধ্যযুগের ভারত - সতীশ চন্দ্র, মধ্যকালীন ভারত - সম্পাদনা ইরফান হাবিব পড়ুন।

ইতিহাস কী?

ইতিহাস কী? ইতিহাস হচ্ছে মানুষের তৃতীয় নয়ন। এই তৃতীয় নয়ন মানুষকে অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই পর্যবেক্ষণই জগত এবং জীবনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। একজন মানুষ জগত ও জীবনের প্রকৃত সত্য যতটা উপলব্ধি করতে পারেন তিনি ততটাই শিক্ষিত। তাই ইতিহাস জানা এবং বোঝা ছাড়া একজন মানুষ পূর্ণাঙ্গ শিক্ষিত হতে পারেন না। খেয়াল করলেই বুঝতে পারি, জগতের সব বিষয়েরই ইতিহাস হয় বা আছে। অর্থাৎ সমস্ত বিষয়কে ঠিকঠাক বুঝতে আপনাকে ইতিহাসের সাহায্য নিতে হবে। যেমন, বিজ্ঞানকে বুঝতে বিজ্ঞানের ইতিহাস জানতে ও বুঝতে হবে, সাহিত্যকে বুঝতে সাহিত্যের ইতিহাস। একমাত্র ব্যতিক্রম ইতিহাস নিজেই। ইতিহাসকে বুঝতে অন্য কাউকে নয়, ইতিহাসেরই সাহায্য নিতে হয়। এই কারণে আমরা বিজ্ঞানের ইতিহাস আছে বলে জানি, সাহিত্যের ইতিহাস আছে জানি। কিন্তু উল্টোটা জানি না। অর্থাৎ ইতিহাসের বিজ্ঞান বা ইতিহাসের সাহিত্য আছে বলে কিছু হয় না। তাই, এককথায় ইতিহাসকে ধরতে হলে বলতে হবে, ইতিহাস হল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণ। উল্লেখ্য, অনেকেই ইতিহাসের সংজ্ঞায় বিবরণের জায়গায় কাহিনি শব্দ ব্

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে