শিক্ষিত মানুষ সম্পর্কে আলী হোসেন যার কথায় ও কাজে মানবতা স্থান পায় না, উল্টে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি হয়, সে আর যাই হোক, শিক্ষিত মানুষ নয়। — আলী হোসেন শিক্ষা এক ধরণের আলো যা সব রকমের অন্ধকার থেকে মানব আত্মাকে মুক্তি দেয়। এই আলো যদি আপনার মধ্যে পড়ে আপনার ভেতরে থাকা জাত, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় ইত্যাদির মধ্যে যে বিষাক্ত অংশ আছে তা মুছে যাবে। ধুয়ে যাবে মনের কোণে জমে থাকা মানুষে মানুষে বিদ্বেষের বিষ। কোন অবস্থাতেই, কোন মানুষের প্রতিই আপনি বিদ্বেষ ভাষণ দিতে পারবেন না। আধুনিক শিক্ষার আলো আপনার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা এই বিদ্বেষভাবকে মুছে দেবে। যদি তা না হয়, তবে আপনি শিক্ষিত মানুষ নন। লেখাপড়া জানা একজন অশিক্ষিত মানুষ। আপনার সঙ্গে অন্য প্রাণীর তেমন কোন পার্থক্য থাকবে না। পার্থক্য সেটা থাকবে, তা হল মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীদের পরস্পরের মধ্যে যে প্রকৃতি প্রদত্ত আকারগত ও স্বভাবগত যে পার্থক্য থাকে, সেটুকুই।
ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ ...