সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হিন্দু কি ধর্ম?

হিন্দু কী ধর্ম?

Is Hindu a religion?

লেখাটা পড়ার আগে সুরঞ্জন অধিকারীর মন্তব্যটি, লেখার শেষ অংশে আছে, একটু দেখে নিন।

Suranjan Adhikari আমি ভারতীয় সংস্কৃতির পক্ষে বিপদজনক? আপনি বলছেন? তার মানে, আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন?😄 যারা যুক্তি তর্কে ও তথ্যে পারেন না, তারা ভয় দেখান। ওটাই তাদের শেষ অস্ত্র। এটা আমি জানি। সেই সঙ্গে এটাও জানি এবং বুঝিও যে :

সততার শক্তি কত, অসৎ জনে জানে না, শিক্ষার শক্তি কত, অশিক্ষিত বোঝে না।

সুতরাং ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। 

আসুন মূল কথায় আসা যাক। আপনি সনাতন ধর্মকেই হিন্দু ধর্ম বলছেন? 😄 আপনি তো নিজের ধর্মটাই ঠিকঠাক জানেন না বন্ধু। আমাকে কীভাবে ভালো ভাবে চর্চা করার পরামর্শ দিচ্ছেন? আগে তো নিজে ভালো করে জানুন। আসুন জেনে নেই।

সনাতন হল একটা ধর্ম দর্শন, যার আর এক নাম ব্রাহ্মণ্য ধর্ম। আরও পূর্বে এটাই বৈদিক ধর্ম নামে পরিচিত ছিল। এর কোন প্রবর্তক নেই। ধর্ম গ্রন্থের নাম হল বেদ, যার কোন লেখক নেই। বৈদিক ধর্মদর্শন অনুযায়ী এটি ঐশ্বরিক গ্রন্থ। ঐতিহাসিকদের মতে, যুগ যুগ ধরে অসংখ্য মনীষীর অবদানে তা গড়ে উঠেছে চতুর্বেদ। বেদটা পড়েছেন কখনও? না পড়লে পড়ে নিন। জানতে পারবেন। আপনি কতটা ভুল।

আর সংগে জেনে নিন, হিন্দু একটা জাতিসত্ত্বার নাম। ধর্ম নয়। এই নামটা বিদেশিদের দেওয়া। ধর্ম যে নয়, তার আর একটা বড় প্রমাণ হল শব্দটা আপনাদের মূল ধর্ম গ্রন্থের মধ্যে কোথাও নেই। সম্ভবত রামায়ণ মহাভারতের মত মহাকাব্যেও তার উল্লেখ পাবেন না। আমি যতটা জানি। ভুল হলে বলবেন, শুধরে নেবো। 

আর সম্প্রদায় অর্থে হিন্দু শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৪২৪ খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরের রাজা দ্বিতীয় কৃষ্ণদেব রায়ের ‘সত্য মঙ্গল’ তাম্রপট্টে। এখানে লেখা হয়েছে, ‘পররাজ্যভয়ংকরঃ হিন্দুরায় সুরতানো বন্দীবর্গেণ বর্ণ্যতে’ অর্থাৎ বন্দিরা হিন্দুরাজ সুলতানকে শত্রুরাজ্যের পক্ষে ভয়ংকর বলে বর্ণনা করে। এখানে শব্দটি ‘হিন্দুরায়’ অর্থাৎ ‘হিন্দুরাজ বা রাজ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ হিন্দু শব্দটি ধর্ম নয়, ভূখন্ড হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই ভূখণ্ড বা রাজ্যের রাজা ব্রাহ্মণ্য ধর্মের আর প্রজা নিম্ন বর্ণের ‘বহুজন’ বা হিন্দু জাতের মানুষ। দেখুন এপিগ্রাফিয়া ইন্ডিকা, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬ - ৪২।

অর্থাৎ হিন্দু জাতিসত্ত্বার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিভিন্ন ধর্মের ও বর্ণের মানুষ, যারা মূলত নিম্ন বর্ণের মানুষ। এককথায় সাধারণ প্রজা। সুতরাং হিন্দু বললে সনাতন, ইসলাম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সহ ভারত ভূখন্ড জুড়ে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী সমস্ত ধর্মের ও বর্ণের মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠা একটা জনগোষ্ঠীকে বোঝায়। সেই অনুযায়ী আমি আপনি সকলেই হিন্দু এবং একই পূর্বপুরুষের বংশধর। এটা ঐতিহাসিক ও নৃতাত্বিক দিক থেকে সত্যও। সম্ভবত আপনি তা জানেন না, অথবা মানেন না।

আর আপনার ধর্মদর্শন বলছে, সমগ্র মানব সমাজ এক ব্রহ্মার উত্তরসুরি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেউ বৌদ্ধ, কেউ জৈন, ইসলাম, খ্রিষ্টান, শিখ, বৈষ্ণব, শৈব ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে রামকৃষ্ণ, বালক ব্রহ্মচারী, লোকনাথ, হরিচাঁদ ঠাকুর প্রমুখের অনুসারী হিসাবে নতুন নতুন ধর্ম সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য আদিবাসি মানবগোষ্ঠীও রয়েছে এর মধ্যে। এরা সবাই একসঙ্গে হিন্দু হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন বিদেশিদের কাছে। আপনি এই বিদেশিদের দেওয়া পরিচয় নিয়ে গর্ব বোধ করেন। এতে আপনার কোন অসুবিধা নেই। অসুবিধা শুধু মুসলমানদের নিয়ে, যাদের সিংহভাগ আবার বংশগতভাবে এদেশের ভূমিপুত্র! কোন্ যুক্তিতে?

বেদান্ত দর্শনে শংকরাচার্য বলছেন সর্বজীবে ব্রহ্ম। এখানে মুসলমান কিভাবে বাদ যায়? মহাভারতের শান্তি পর্বে শরশয্যায় শুয়ে ভীষ্ম ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির কে বলছেন, “গুহ্যং ব্রহ্ম যদিদং তে ব্রবীমি, ন মানুষ্যচ্ছে্ষ্ঠতরং কিঞ্চিৎ।” অর্থাৎ তিনি যুধিষ্ঠিরকে বলছেন, “একটি গোপন তথ্য তোমাকে বলি, মানুষের চেয়ে বড় আর কিছুই নেই।” ভারতবর্ষের মুসলমান কি এই মানুষের তালিকায় পড়ে না? আপনি তো লেখাপড়া জানা মানুষ। আমি তো জানি আপনি শিক্ষিত এবং একজন শিক্ষক। তাহলে এই অজ্ঞতা কীভাবে ঢুকলো আপনার মধ্যে? কিভাবে ভুলে গেলেন স্বামী বিবেকানন্দের সেই অমোঘ বাণী “বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর? / জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।”

আর নিজ দেশের এতগুলো ধর্ম সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে একটা ক্ষুদ্র অংশকের মানুষ এবং তাদের বিশ্বাসকে (সনাতন / বৈদিক বিশ্বাসকে) ভারতের একমাত্র ধর্ম ও সংস্কৃতি বলছেন? কীভাবে, কোন্ যুক্তিতে? আপনার ধর্মগ্রন্থ কি এই ভাবনা সমর্থন করে, আপনার ধর্ম গ্রন্থই যেখানে বলছে, সমগ্র মানব সমাজ এক ব্রহ্মার উত্তরসুরি? 

আর গীতায় কী আছে জানেন? গীতা পড়েছেন কখনও? গীতার অধ্যায় চতুর্থ, শ্লোক - ১১ পড়ে আসুন। দেখুনতো সেখানে আপনার এই ভাবনার সমর্থন আছে কিনা? এটা দেখার পর না হয় আমাকে হিন্দু শাস্ত্র পড়ার পরামর্শ দেবেন।

সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল, এত ভিন্নতা নিয়ে ভারতবর্ষ দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। তেমন কোনো সমস্যা তো হয়নি! তবে এখন কেন এত সমস্যা? ১৮৫৭ পরবর্তী ভারতে একমাত্র ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়েই বা আপনাদের এত সমস্যা কেন? আধুনিক রাষ্ট্র দর্শনকে পাথেয় করে যে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে, যেখানে রাষ্ট ও ধর্মকে পৃথকভাবে থাকার সাংবিধানিক বিধান দেওয়া হয়েছে, তাকে অস্বীকার করছেন কেন? জনগনের ভোটে শাসক নির্বাচিত হবে এটাই যখন সাংবিধানিক বিধান, তখন মুসলমানকে এত ভয় পান কেন?

মুসলমানরা একটি বিদেশী ধর্মদশন ফলো করে বলে তাদের নিয়ে আপনার যত সমস্যা? অথচ এদের পূর্বপুরুষের সিংহভাগই ভারতীয় বংশোদ্ভুত? কেন, কোন যুক্তিতে আপনি এটা ভাবেন? কোন যুক্তিতে এতসব মানুষের ওপর আপনার ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত ধর্ম বিশ্বাস, যা আবার বিদেশিদের কাছ থেকে পাওয়া শব্দ নির্ভর, তাকে চাপিয়ে দিতে চান অন্য মানুষদের ওপর? স্বামী বিবেকানন্দ কি বলেছিলেন জানেন? বলেছিলেন, 

আমরা আমাদের ধর্মীয় নীতি অন্যদের উপর চাপিয়ে দিতে চাই না। আমাদের ধর্মের মৌলিক নীতি তার বিরোধী।

তাহলে  আপনার সমস্যা কোথায়?

আপনি ভারতে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে কিছু মানুষকে আপন ভাবতে পারছেন না, ভাবছেন বিদেশী। অথচ যে শব্দটাকে অবলম্বন করে আপনার এই গর্বের ধর্মীয় ভাবাবেগ গড়ে উঠেছে, সেটাই তো বিদেশী এবং মুসলানদের দেওয়া। এতে আপনার সমস্যা নেই? কোথায় লেখা আছে ধর্ম পরিবর্তন করলে তাদের জাতিসত্ত্বা পাল্টে যায়? কোন যুক্তিতে সেটা বলা যায়? আপনি কি জানেন, ভারত থেকে যারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যান, কাজ অথবা ধর্মীয় রীতনীতি পালনের উদ্দেশ্যে, ওখানকার নাগরিক ও সরকার ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে হিন্দু (জাতি) বলে পরিচয় দেয়?

আপনি কি ভাবেন, ধর্ম পাল্টে গেলে মানুষের নৃতাত্বিক গঠন কিম্বা DNA পাল্টে যায়? না যদি যায়, সে ভিন্ন জাতি হয় কী করে? আপনি যে ধর্ম দর্শনে বিশ্বাস করেন, সাঁওতাল কোল ভিল মুন্ডা সহ অসংখ্য দলিত জনজাতি তা বিশ্বাস করেনা। করে না বলে আপনি তাদের বিদেশি বলবেন? বলেন? ভারতীয় সংস্কৃতির পক্ষে তাদের বিপদজনক ভাবেন? ভাবেন না তো! যদি না ভাবেন, আমাকে ভাবেন কোন্ যুক্তিতে? একটি গ্রন্থের নামই তো শুধু জানতে চেয়েছি। বলতে পারলেই তা মেনে নেবো বলেছি। তাতেই আমি জেহাদি? 😄😄 বলছেন ‘এন আই আই নজর রাখছে আমার ওপর’!!!! ভালো ভালো। পারলে আপনিও একটু তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন।

আপনি অভিযোগ করেছেন আমি সনাতনীদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই? কীভাবে? মানে বলতে চাইছেন, সনাতন ধর্মে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র বলে যে বর্ণ বিভাজন করা হয়েছে, তা আমি করেছি? মাঝে মধ্যে দলিত মানুষজন যে বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে মিডিয়ায় দেখা যায়, তা আমার উৎসাহে হচ্ছে বুঝি! আপনি তো দেখছি মরা মানুষকেও হাসিয়ে ছাড়বেন! বন্ধু।

সবচেয়ে মজার কথাটা শুনুন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও মানেন, যে তাঁর ধর্ম হিন্দু নয়। আপনি তাঁর ভক্ত হয়েও তা জানেননা এবং মানেনও না? সুতরাং আপনি কী ভাবছেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কী বুঝলেন?

সবশেষে বলি, আপনি কী করেন আমি জানি না। কিন্তু এটা জানি আপনার মধ্যে কোন যুক্তিবোধ কাজ করে না। করলে, আমাকে একথা বলতেন না যে,

আপনার পূর্বসূরিরা তো কোন ভারতীয় ঐতিহাসিক ও তাদের গ্রন্থ বাঁচিয়ে রাখেনি যে তার উদাহরণ দেওয়া যাবে।

একথা বলার সময়, একবারও ভেবে দেখলেন না, যদি আপনার অভিযোগ মেনে নেওয়া হয়, তবে প্রশ্ন উঠবে, তাহলে কীসের ভিত্তিতে বলছেন, যে বখতিয়ার খিলজী নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করেছিলেন? কেননা, আপনার অভিযোগ মতে তো কোন ভারতীয় ঐতিহাসিক ও তাদের গ্রন্থ তো বেঁচে নেই। তাহলে পেলেন কোথায় এই তথ্য?

Whatsapp ইউনিভার্সিটিতে পড়ুন। আমি বারন করতে পারি না। কিন্তু অনুরোধ করতে পারি, সঙ্গে অন্য ইউনিভার্সিটিগুলোতেও একটু চোখ রাখুন। আর দেখার সময় যুক্তি বুদ্ধিটাকে একটু মুক্ত রাখুন, তাকে খোলা মনে ব্যবহার করুন। দেখবেন আমার সম্পর্কে আপনার ভুল ধারণাগুলো কেটে যাবে। আর অনুগ্রহ করে একটা বিষয়ের মধ্যে এভাবে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় ঢুকিকে দিয়ে নিজেকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না। অনুরোধ রইল। যতই হোক, মানুন বা না মানুন, আমি তো আপনাকে বন্ধু বলেই মানি। তাইনা?

ভালো থাকুন। সম্প্রদায় নয়, মানুষের সাথে থাকুন। শুভরাত্রি।

----------xx---------

Ali Hossain আপনার পূর্বসূরিরা তো কোন ভারতীয় ঐতিহাসিক ও তাদের গ্রন্থ বাঁচিয়ে রাখেনি যে তার উদাহরণ দেওয়া যাবে। আপনি সূক্ষ্মভাবে হিন্দু তথা সনাতনীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যেটা ভারত বিরোধী জেহাদিরা করে চলেছে সামাজিক মাধ্যমে। এন আই আই এই বিষয়ে সজাগ আছে, মাঝে মধ্যে তারা ধরা পড়ছে। আপনার কাজ আপনি চালিয়ে যান, আপনার মুখে এক, কাজে যে অন্য কিছু তা আপনার পোস্টগুলো পড়ে স্পষ্ট বুঝতে পারা যায়। আপনার হিন্দু বা সনাতন ধর্ম সম্পর্কে কিছু বলার আগে তা নিয়ে ভালোভাবে চর্চা করুন। যেটা জানেন না, সে সম্পর্কে বলবেন না। আপনি বরং আরবীয় মরু সংস্কৃতির কথা বলতে পারেন, কারণ এই বিষয়ে আপনার অনেক জ্ঞান আছে। আপনার মতো গুটিকয়েক মানুষ ভারতীয় সংস্কৃতির পক্ষে বিপদজনক।

প্রসঙ্গ জানতে ফেসবুক দেখুন

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে