সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কারা কেন অশিক্ষিত বলে বিবেচিত হয়?

 Moti Lal Deb Nath ঠিকই, যিনি যেমন দেখবেন, এবং যেমন বুঝবেন, তেমনই বলবেন। এতে কোন দ্বিমত নেই। তা দোষেরও নয়। দোষের তখনই হয়, যখন কেউ অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে আনেন।

আমি আপনার ভিতরটা যদি স্পস্ট করে বুঝতে পারতাম, ‘অশিক্ষিত' এবং অথবা দিয়ে 'জেনে বুঝে না বোঝার ভান’ - এভাবে শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করতাম না। আমি যাকে যেভাবে বুঝি, তাকে সেভাবেই সোজা সাপটা বলতে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করি। আপনাকে ওই দুটোর কোনটাই বলিনি। কারণ, আমি এখনও বুঝিনি, কেন আপনি অপ্রাসঙ্গিক কথা টেনে এনে পোষ্টের মূল উদ্দেশ্যকে অন্যদিকে নিয়ে গেলেন। বুঝিনি বলেই আগের মন্তব্যে দু-দুবার ‘অবাক হওয়ার’ কথা উল্লেখ করেছি। যদি বুঝতাম, তাহলে সরাসরি আপনাকে হয় অশিক্ষিত বলতাম, আর না হয় ‘না বোঝার ভান করছেন’ বলে অভিযোগ করতাম। কারণ, মারপ্যাঁচ করে কথা বলা, আমার স্বভাবের বিরুদ্ধ। আমি শুধু বলেছি, এভাবে যারা প্রসঙ্গ ছেড়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিয়ে যায়, তারা ওই দুটোর কোন একটার কারণে নিয়ে যান। সেই অপশন দুটো আপনার সামনে তুলে এনেছি মাত্র। আপনি ওই দুটোর কোনটার মধ্যে পড়েন, অথবা আদৌ পড়েন কি না, সেটা তো আমি জানি না। কারণ, জানাটা অতটা সহজ কাজ নয়। ওটা আপনিই একমাত্র ভালো করে জানেন। আপনি আসলে কী! তাই ওটা আপনার কাছে ছেড়ে দিয়েছি। 

আমি জানতাম, এবং এখনও জানি, আপনি একজন বামপন্থী মানুষ। আর বিজেপির সমালোচনা করলে প্রকৃত বামপন্থীরা তাকে কাউন্টার করার চেষ্টা করেনা। কারণ, তারা জানে, তৃণমূল তাদের রাজনৈতিক শত্রু বটে, কিন্তু কখনোই বিজেপির মত ভয়ংকর শ্রেণি শত্রু নয়। আপনি বিচক্ষণ মানুষ। আপনি দেখে থাকবেন, তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে দুবেলা নেতার আদান-প্রদান হয়। কেন হয়? কারণ তারা একই মুদ্রার দুপিঠ। বামপন্থীদের মধ্য থেকে এভাবে আকসার তৃণমূল বা বিজেপিতে যায় না, বা আসেনা। কারণ ওই দুটো দল একই রকম ভাবে বামপন্থী দলকে শত্রুভাবে। এবং বামপন্থীরাও সেভাবেই ভাবে বলে আমার বিশ্বাস। আর আমার এই ভাবনার মূলে রয়েছে মতাদর্শগত ভয়ংকর বৈপরীত্যের বাস্তবতা। এই বৈপরীত্য-এর কারণ, তাদের মতাদর্শগত এবং শ্রেণীগত দ্বন্দ্ব, যা কোনদিন মিটবে না।

না সাথি, আর একারণেই, শেষ লাইনের মধ্যে কোথায় কীভাবে তৃণমূল এল, আমি এখনো তা বুঝতে পারিনি। হতে পারে সেটা আমার দুর্বলতা। যদি তা আমার দুর্বলতা বলে আপনি ভাবেন, তবে তা ব্যাখ্যা করা আপনার দায়িত্ব। আশা করি এই ব্যাখ্যা করে আমার ভুল ভাবনাটা ধরিয়ে দেবেন। মনে হল, আর বলে দিলাম। তার ব্যাখ্যা দিলাম না। এটা হয় না। আপনি যদি তাব ব্যাখ্যা না করেন, মারপ্যাঁচ আপনি করছেন বলে বিবেচিত হবে।

আমি এ ধরনের মারপ্যাঁচ করি না বলেই, মূল পোস্টের মূল ভাবনা এতটা সময় নিয়ে ব্যাখ্যা করেছি। আগের কমেন্টে এবং এই কমেন্টে। তারপরও যদি আপনি না বোঝেন, আমার দূর্ভাগ্য।

সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা সিপিএম কংগ্রেসকে পাত্তা দেয়নি তারা তো রাজনৈতিকভাবে অশিক্ষিতই। তারা তো তৃণমূল এবং বিজেপি উভয় দলের মধ্যেই আছে। মানুষ তৃণমূলের ভোট দিয়েছে বলে, আমি তাদের শিক্ষিত বলছি, একথা আপনি কীভাবে ভাবছেন? এবং আপনি আমার মুখের ওপর আপনার এই অবান্তর ভাবনা কোন যুক্তিতে বসিয়ে দিলেন? এই কথার মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র তৃণমূলকে শিক্ষিত দল বলা হচ্ছে - একথাই বা কীভাবে এলো বন্ধু?

আসলে আমার মধ্যে কি আছে সে সম্পর্কে আপনি যা বুঝেছেন, আপনি সেটাই আমার ভাবনা বলে আমার মুখের উপর বসিয়ে দিয়েছেন। সেটা আপনার শিক্ষার ফসল। আমার তাতে কিছু যায় আসে না। ঠিক একই রকম, আপনার মধ্যে কি আছে তা আপনিই ভালো করে জানেন। আমার পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়। তাই আপনার মুখের উপর আমি কোন কিছু বসিয়ে দিইনি। সম্ভাব্যতার কথা বলেছি আর আপনাকেই দায়িত্ব দিয়েছি আপনি এর মধ্যে কোনটায় পড়েন অথবা আদৌ পড়েন কিনা ভেবে দেখতে

মেজাজ হারানোর কথা বলছেন? 😄 ওটাও আপনি ভাবছেন। আমি এই সামান্য বিষয়ে কখনো মেজাজ হারাই না। যা ভাবি, তা এমন শক্ত মোডেই বলে থাকি। আমাকে কাছ থেকে যারা দেখেছে, তারা জানে, ইনিযে বিনিয়ে কথা বলা, ধরি মাছ না ছুই পানি গোছের কথা বলা আমার ধাতে নেই। আপনি আমাকে নিয়মিত ফলো করেন। আপনিও এটা জানেন। সাদাকে সাদা, আর কালোকে কালো বলতে, যেখানে যেমন টোন প্রয়োজন হয়, সেখানে তেমন টোনই ব্যবহার করি। আমার এই টোন যদি আপনাকে কষ্ট দেয়, আমি দুঃখিত। এটা পাল্টানো আমার কাছে অসাধ্য সাধন করার মত। পারবনা সাথি। ক্ষমা করবেন।

সবশেষে আপনাকে বলি, শেষ লাইন এ তৃণমূল কি করে এলো আমি এখনও বুঝিনি। তবে এটা বুঝেছি ওই লাইনটায় যা বলা হয়েছে, সেই কথার সঙ্গে আমি একমত। কেন জানেন? আপনার মনে থাকবে, বিজেপি দলকে জ্যোতি বসু অসভ্য বলতেন। অসভ্যের দল বলতেন। কেন বলতেন জানেন? এরা মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে। সাম্প্রদায়িকতা করে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত কোন মানুষ এই মতাদর্শকে সম্মান করতে পারে না। যারা এই দল করে, তারা তথাকথিত শিক্ষিত। মানব সভ্যতার ইতিহাস তারা পড়েনি। তাই বোঝেনা মানবতা কারে বলে। মানবতা ধ্বংস হলে তার কী ভয়ংকর প্রভাব পড়ে একটা দেশ ও জাতির উপর। এরা জানে না। তাই এরা কোনভাবেই প্রকৃত শিক্ষিত নয়। প্রকৃত শিক্ষা মানুষকে শুধু মানুষ হিসেবেই চিনতে বলে, চিনতে শেখায়। যারা এর উল্টো কাজ করে, তারা কীভাবে শিক্ষিত হয়? জ্যোতি বসু তাই তো তাদের বলতেন, অসভ্য।

আজকের বামপন্থীরা আসল শত্রুকে এড়িয়ে গিয়ে এভাবেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল শত্রুকে বেশী মাত্রায় গুরুত্ব দেয় বলেই সাধারণ মানুষের আস্থা তারা ফিরে পাচ্ছেনা। আরও কারণ আছে। এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ। আমরা এটা যত বুঝতে দেরি করব, বিজেপি বিরোধী ভোট তত তৃণমূলই পাবে। আমাদের হাত কামড়াতে হবে, আর ঝি মেরে বউ শাসন করার অপকৌশল নিয়ে দিন দিন ক্ষয়ে যেতে হবে।

ভালো থাকবেন। সাথি।

-------------xx------------

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে