ইরফান হাবিব ও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়
ইরফান হাবিব প্রথিতযশা ঐতিহাসিক। তাকে অশ্রদ্ধা জানানোর স্পর্ধা আমার নেই। কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে বলছি :
১) তিনি যখন এই গ্রন্থ লিখেছেন নিশ্চয়ই তার কাছে এ বিষয়ে আধুনিক গবেষণার ফলাফল ছিল না।
২) এই গ্রন্থটি নালানন্দ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো গবেষণা গ্রন্থও নয়। মধ্যযুগের ইতিহাস বর্ণনায় একটি সাধারণ তথ্য হিসাবে তিনি এ কথা বলেছেন, যেটা আমি আপনি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আসছি।
৩) আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন এই বিতর্কিত তথ্যের সমর্থনে তিনি কোন তথ্যসূত্র উল্লেখ করেননি।
সুতরাং ইরফান হাবিব বলেছেন বলেই তা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। এই আলোচনায় বেশ কয়েকজন মন্তব্যকারী বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করেছেন। সেগুলো দেখুন। আমার কাছেও প্রচুর তথ্য আছে যার ভিত্তিতে আমি আমার মতামত রেখেছি। সমসাময়িক কোনো ঐতিহাসিক আকর গ্রন্থ নেই যা দিয়ে প্রমাণ করা যায় বক্তিয়ার খিলজী নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধংস করেছেন।
উল্লেখ্য, এ কারণেই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ‘ইতিহাস এবং পুনরুজ্জীবন’ নামক পাতায় এই বিষয়টির উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি। দেখে নিন এক ঝলক এখানে ক্লিক করে।
আপনি যদি তা দেখাতে পারেন তবেই তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে। উল্টোদিকে এ বিষয়ে গবেষণা গ্রন্থগুলোর পাতা উল্টালে যে সমস্ত তথ্য বেরিয়ে আসবে যা দেখলে আপনি কষ্ট পাবেন। ভারতের মাটিতে জন্ম হওয়া একটি মানবতাবাদী ধর্ম সম্প্রদায় ও তাদের দর্শনকে, যা সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করেছিল, তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী আধিপত্য কায়েম করার জন্য শুধু নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সমগ্র বৌদ্ধ দর্শন ও দার্শনিক সম্প্রদায়কে নির্মূল করার চেষ্টা করে গেছেন যুগ যুগ ধরে। এই নির্মম সত্য চাপা দেওয়ার জন্য বখতিয়ারকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। এটা ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্রান্তের বিষ ফল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন