বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মূল্য বিশ্বাসের চেয়ে অবিশ্বাসের মূল্য বেশি। কারণ অবিশ্বাস সত্য অনুসন্ধানের সাহায্য করে এবং বিশ্বাস অন্ধত্বকে ডেকে আনে; বলা ভালো প্রশ্রয় দেয়। আমি যখন কোনো কিছুকে বিশ্বাস করি, তখন তা প্রশ্নহীন সিদ্ধান্ত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে যে কথাটা আমি বিশ্বাস করছি, সেই কথার বক্তার দ্বারা আমি সম্মোহিত হয়ে যাই। তাই প্রশ্ন করার অবকাশ এখানে থাকে না। যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্য দিয়ে যাচাই করার যুক্তিবাদী চিন্তাশক্তি এক্ষেত্রে কার্যকর থাকে না। তাহলে কি বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই? আছে। বিশ্বাস মানুষের মনকে শান্ত করে। আবার অশান্তও করে। কিন্তু যখন দুশ্চিন্তায় শরীর ও মনের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে অথচ দুশ্চিন্তার সত্যিই কোন কারণ নেই তখন বিশ্বাসই মনের জোর বাড়িয়ে দেয়। এসময় ঝাড় ফুঁক বা জল পড়া-পানি পড়াতেও কাজ হয়। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস এবং সেই বিশ্বাসে ভর করে প্রার্থনায় বসেও মানুষের মনের মুক্তি আসে। উল্টো দিকে, যদি স্বাস্থ্যহানির কারণ হয় শারিরীক, তবে এই বিশ্বাস সাময়িক কাজে আসলেও দীর্ঘমেয়াদী ফললাভ হয় না।
ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ