সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরর্থক বিতর্ক কী?

পৃথিবীর সবচেয়ে নিরর্থক বিতর্ক 

 লিখছেন আলী হোসেন।

পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরর্থক বিতর্ক হল ঈশ্বর-কেন্দ্রিক বিতর্ক। কারণ, ঈশ্বর আছেন অথবা নেই এই দুইয়ের কোনটারই প্রমাণ নেই। অদুর ভবিষ্যতে যে তাদের প্রমাণ পাওয়া যাবে এমন সম্ভাবনাও নেই। তাই অহেতুক এই বিতর্ক চালিয়ে যাওয়া পন্ডশ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়। লক্ষ কোটি বছর ধরে মানুষ এর পক্ষে-বিপক্ষে লড়াই করেছে এবং এখনও করে চলেছে। নিট ফল শুন্য।

ঈশ্বর থাকলে আছেন। না থাকলে নেই। যে যেভাবে ভাবতে চান, ভাবুন। সেই ভাবনা থাক নিজের মধ্যে। নিজের ভাবনাকে অন্যের ওপর চাপাতে গেলেই তৈরি হয় সঙ্কট।

নিজের ভাবনার বিষয় যদি হয় মানুষের মঙ্গল সাধন, আর যদি ঈশ্বর থাকেন, তিনি এতেই বেশি খুশি হবেন। কারণ, নিজের সৃষ্টিকে কেউ ভালবাসলে, তার মঙ্গলকামনায় কাজ করলে সৃষ্টিকর্তা খুশি না হয়ে পারেন না। কারণ, যদি তিনি তা না হন, তবে তিনি দাতা, দয়ালু ইত্যাদি বলে নিজেকে দাবি করতে পারবেন না।

অন্যদিকে, যিনি ভাবছেন নেই, তিনিও যদি মানুষের ভালোর জন্য জীবন উৎসর্গ করেন অথবা অন্যের ক্ষতি না করেন, তবে তিনিও কোন অন্যায় করছেন না। অন্যদিকে, ঈশ্বরকে স্বীকার না করেও তিনি যে কাজ করছেন, তা যে ঈশ্বরে বিশ্বাসী মানুষদের ঈশ্বরকেই পরোক্ষে খুশি করছেন, তা না বোঝার মত শক্তি তিনি হতে পারেন না। কারণ, তিনি তো সবজান্তা। ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের মতে, ঈশ্বর তেমনই একটি স্বত্ত্বা, যার নজর এড়িয়ে এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কিছুই হওয়ার জো নেই।

তাহলে যিনি কোন অন্যায় করছেন না, উল্টে এমন কাজ করছেন যা পরক্ষে সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার কাজটাই করছেন মনের আনন্দে, তাকে ঈস্বর শাস্তি দেবেন কীভাবে? যদি দেন, তবে তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক হবেন কীভাবে?

আসলে ঈশ্বর থাকলেও ক্ষতি নেই, না থাকলেও ক্ষতি নেই। কারণ, মানুষের এই বিশ্বাসের ওপর  তার থাকা-নাকা কোন ভাবেই নির্ভর করে না। যদি তিনি থাকেন, ক্ষুদ্র মানুষ তাকে স্বীকার করলেই বা কী, না করলেই বা কী? তিনি তো সর্বশক্তিমান। এ নিয়ে তার ভাবিত হওয়ার দরকার কোথায়?

আসলে ঈশ্বর থাকলেও নিজেকে নিয়ে এত ভাবার দরকার তার পড়ে না, আর নেই সত্যি হলে তো ভাবার সম্ভাবনাই নেই। তবু কিছু মানুষ তাঁকে নিয়ে অনেক বেশি ভাবেন। কারণ, নিজেকে নিয়ে ভাবনার ঈশ্বরের দরকার না পড়লেও মানুষের দরকার পড়ে। না হলে, মানুষের আধ্যাত্মিক অপেক্ষা বৈষয়িক লাভের ঘাটতি পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 বস্তুত, এই দুই ভাবনার বাইরে ভাবার ও করার প্রচুর বিষয় আছে। মানুষের ভাবার বিষয় হল, জগত ও জীবনের হাজারও সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়? এই সমস্যার সৃষ্টিকর্তা যেহেতু মানুষ, তার সমাধানও তাই মানুষকেই করতে হবে। ঈশ্বর ও ধর্মীয় অনুশাসন দিয়ে তা হওয়ার নয়।

তাই ঈশ্বর আছেন কি নেই, সেই বিতর্কের চেয়ে অনেক অনেক বেশি বিতর্ক ও আলোচনা হওয়া উচিৎ কীভাবে এই সব মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা হায়।
------x---------

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে