হিন্দু কারা? তারা কীভাবে হিন্দু হল? অমিত শাহ। উনি হিন্দু হলেন কবে থেকে? তাঁর পদবী বলে দিচ্ছে উনি এদেশীয় নন। ইরানি বংশোদ্ভুত। কারণ, ইতিহাস বলছে পারস্যের রাজারা ‘শাহ’ উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং শাহ শব্দটি পার্শি বা ফার্সি। লালকৃষ্ণ আদবানি। আদবানি শব্দটিও এদেশীয় নয়। আরবি শব্দ আদবান থেকে উদ্ভূত। সুতরাং তাঁর উপাধিও বলছে, তিনিও এদেশীয় নন। আসলে এরা (উচ্চবর্ণের মানুষ) কেউই এদেশীয় নয়। এরা নিজেদের আর্য বলে দাবি করতেন এবং গর্ববোধ করতেন। সিন্ধু সভ্যতা পরবর্তীকালে তারা পারস্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে এদেশে অভিবাসিত হয়েছেন। আর মধ্যযুগে এদেশের আদিম অধিবাসীদের পারস্যের কিছু পর্যটক ঐতিহাসিক হিন্দু বলে তাচ্ছিল্য করেছেন। কারণ, অনার্য সভ্যতা (আদি ভারতীয় সভ্যতা) আর্যদের কাছে নিম্নস্তরের বলে বিবেচিত হতো আদিকাল থেকেই। সুতরাং তাদেরই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হিন্দু হল এদেশের আদিম অধিবাসী যারা, তারা। মনে রাখা দরকার, এই আদিম অধিবাসীরা কিন্তু নিজেদের কোনদিন হিন্দু বলে ভাবতো না, বিশ্বাসও করত না। মূল ধারায় যারা রয়ে গেছে এখনও, তারাও তা ভাবেন না। এটা তাদের চাপিয়ে দেয়া পরিচয়। ইরানিরা (অমিত শাহের পূর্বপুরুষ) এ দেশের আদি
ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ