শিক্ষার কাজ কী?
“শিক্ষা সত্যের সন্ধান দেয়, অসত্যকে চিহ্নিত করে।”
জগৎ এবং জীবন পরিচালিত হয় দুই ধরনের নিয়ম অনুযায়ী। একটি প্রাকৃতিক নিয়ম, অন্যটি রাষ্ট্রীয় আইন। এই দুই আইন জানা বোঝা ও প্রয়োগ করার সক্ষমতাই হল শিক্ষা। এই সক্ষমতা অর্জন করতে পারলেই সত্যের সন্ধান পাওয়া যায়।
এই সত্যই মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহার করলে অসত্য খুঁজে পাওয়া যায়। তাই শিক্ষার কাজ হল সত্যের সন্ধান দেয়া এবং অসত্যকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করা।
যিনি এই কাজ সঠিকভাবে করতে পারেন তিনিই শিক্ষিত। মনে রাখতে হবে, এ পৃথিবীতে সম্পূর্ণ শিক্ষা অর্জন করা কোন ব্যক্তির পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষিত মানুষ আপনি পাবেন না এবং নিজেও হতে পারবেন না। অর্থাৎ শিক্ষা একটা চলমান এবং সীমাহীন প্রক্রিয়া, যা যুগ যুগ ধরে পরিমার্জিত ও পরিবর্তিত হচ্ছে। এই ধারা পৃথিবীর অস্তিত্ব যতদিন থাকবে ততদিন বজায় থাকবে।
সুতরাং সুতরাং, প্রতিটি মানুষের কাজ হল জগৎ ও জীবন পরিচালিত হবার নিয়ম অর্থাৎ প্রাকৃতিক ও রাষ্ট্রীয় আইন গুলো সম্পর্কে জানা বোঝা এবং তা প্রয়োগ করার সক্ষমতা অর্জন করার আজীবন প্রক্রিয়ায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা।
এই কাজ যে ব্যক্তি যতটা আয়ত্ত করতে পারবেন তিনি ততটাই শিক্ষিত।
এখন প্রশ্ন হল, এই শিক্ষা আমরা লাভ করব কীভাবে?
শিক্ষা লাভের দুটো উপায় আছে। একটি প্রাতিষ্ঠানিক। অন্যটি ব্যক্তিগত। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করতে গেলে আমাকে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হয়। সেখানে নির্দিষ্ট করা সিলেবাস অনুযায়ী পঠন পাঠন এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হয়। এর ভিত্তিতে পাওয়া যায় একটি শংসাপত্র যা প্রমাণ দেয় যে আপনি একটি সংগঠিত শিক্ষা অর্জন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন এবং নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নপত্রের উত্তর দানের স্বপক্ষে সাফল্য অর্জন করেছেন।
মনে রাখতে হবে, এই শংসাপত্র আপনি সম্পূর্ণ শিক্ষিত, বা কতটা শিক্ষিত তা নিশ্চিত করে না। আসলে এই শংসাপত্র প্রমাণ করে আপনি শিক্ষার অর্জনের একটা প্রাথমিক স্তর সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করেছেন। অর্থাৎ শিক্ষা অর্জনের একটা স্বীকৃত ভিত্তির উপর আপনি উপস্থিত হতে পেরেছেন।
একজন শিক্ষিত হয়ে উঠতে চাওয়া মানুষের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো প্রাপ্ত এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া এবং সমূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জনের প্রক্রিয়াকে চলমান রাখা।
এই প্রক্রিয়া সাফল্যের সঙ্গে চালু রাখার নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত বলা হয়। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, পর্যবেক্ষণ পরীক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং গৃহীত সিদ্ধান্তকে যাচাইকরণ। এই পদ্ধতি কতটা সাফল্য এনে দেবে তা নির্ভর করে যুক্তি বুদ্ধি ও তথ্যের নিরপেক্ষ ভাবে প্রয়োগ করার সক্ষমতার ওপর।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন