রাজনৈতিক দল তৈরি করে সংখ্যালঘু স্বার্থরক্ষার স্বার্থক সমাধান আদেও কি সম্ভব? স্বার্থক হয়েছে, এমন কোনো উদাহরণ কি আছে পৃথিবীতে? মনে হয় নেই।
আমার ধারণা, এটা একটা ভুল ভাবনা। তাই সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বিশেষ করে ধর্মগুরুদের দ্বারা পরিচালিত হলে তো তা একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ, তাতে সংখ্যাগুরুর সাম্প্রদায়িক মানসিকতা বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
সাম্প্রদায়িকতা এমন অস্ত্র যা কেবলমাত্র সংখ্যাগুরুর জন্যই কিছুটা হলেও সুযোগ তৈরি করে। যদিও তা যে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কখনোই হিতকর হতে পারেনা। বর্তমানে আমাদের দেশের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অতীতে জার্মানির ইতিহাস উদাহরণ হিসেবে সামনে রয়েছে। তাই শিক্ষিত ও সচেতন সংখ্যাগুরু মানুষজন কখনই একে সমর্থন করবেন না। কারণ, আধুনিক রাজনৈতিক দর্শনে সাম্প্রদায়িকতা কিংবা রাজনীতির সঙ্গে ধর্ম ও জাতিগত সেন্টিমেন্ট-এর মেলবন্ধন সম্পুর্ন অযৌক্তিক ও অনুপযুক্ত।
যেখানে বিজেপির মত সরাসরি সাম্প্রদায়িক তাস খেলায় মত্ত একটি রাজনৈতিক দল ও কিছু সংগঠন অতি সক্রিয় রয়েছে (ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে), সেখানে সংখ্যালঘুর পৃথক রাজনৈতিক সত্তা অর্থহীন। উল্টে এতে সংখ্যালঘুরা আরও সমস্যার সম্মুখীন হবে বলে আমার ধারণা। মায়ানমারের রহিঙ্গা সমস্যা এর জলন্ত উদাহরণ।
এক্ষেত্রে সংখ্যালঘুর ভোট ব্যাংককে এমনভাবে কাজে লাগানো উচিৎ যাতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল শক্তি আরও শক্তিশালী হয়। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী (Pressure Group বা Associated Interest Group) হিসাবে সক্রিয় থাকাই বাঞ্চনীয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এমন ভাবনার বিস্তার সংখ্যালঘুদের এই ভূমিকায় থাকার পক্ষে অন্তরায় হবে বলেই আমার ধারণা।
সেই সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার বিকাশ ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করা জরুরি। একমাত্র আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষার হাত ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মেরুদন্ড সোজা করে উঠে দাঁড়াতে পারে। এটাই একমাত্র ও উত্তম পথ বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও বিশ্লেষণ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন