প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্বরূপ
আমরা সবাই স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করি। একটা সময় পাশ করে বের হই। প্রমাণ হিসেবে সঙ্গে থাকে একগুচ্ছ সার্টিফিকেট। শিক্ষা শেষে যদি নিজেকে প্রশ্ন করি, কী পেলাম? সহজ উত্তর হল, শিক্ষা। এই শিক্ষাটা, আসলে একটা খোসাওয়ালা রসুনের মত। বাইরে থেকে দেখলে পুরোটাই রসুন এবং রসুনের মত গুণমান সম্পন্ন বলে মনে হয়। প্রশ্ন হল, আসলেই কি তা-ই? উত্তর হল, ‘না’।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আসলে একটা খোসাওয়ালা আস্ত রসুনের মতো, যার সাথে কিছু অবাঞ্চিত এবং গুরুত্বহীন অংশ যুক্ত থাকে।
অর্থাৎ এর পুরোটাই রসুন নয়। রসুনের প্রকৃত সত্তায় পৌঁছাতে গেলে আমাদের তাকে বাড়িতে এনে সযত্নে একটা একটা করে তার খোসাগুলো ছাড়িয়ে ফেলতে হয়। অবাঞ্চিত অংশগুলো সাবধানে বাদ দিতে হয়। তারপর একটা সময় আমরা তার প্রকৃত-সত্তার সাথে পরিচিত হতে পারি।
ঠিক তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে প্রকৃত শিক্ষায় পৌঁছাতে গেলে আমাদের রসুনের খোসা ছাড়ানোর মত করে তার সংগে জড়িয়ে থাকা অসার বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলতে হয়। যুক্তি, বুদ্ধি এবং আরও আরও তথ্য সহযোগে বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন করতে হয়।
এই প্রক্রিয়ার সহজ অর্থ হল, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করে বাড়ীতেও নিরন্তর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে যত পড়াশোনা করা যায়, ততই একটু একটু করে সেই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত অপ্রয়োজনীয় ও অবাঞ্ছিত খোসাগুলো বিমুক্ত হয় এবং বিষয়ের মুলে পৌঁছানো যায়।
মনে রাখতে হবে, এটা (শিক্ষা) একটা জীবনব্যাপি প্রক্রিয়া। তাই শিক্ষা গ্রহণের কোন শেষ সীমা নেই। মনে রাখা প্রয়োজন, আমি কেবল ততটুকুই জানি, যতটুকু আমি পড়েছি। তার বেশিও নয়, কমও নয়। সেই সঙ্গে এও মনে রাখতে হবে, তার বাইরেও কিছু থাকতে পারে।
সুতরাং আমি সব জানি, এবং সব বুঝি ভাবাটা, শিক্ষাহীনতার লক্ষণ।
-----------xx-----------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন