টাকার মূল্য কত?
টাকা আসলে মূল্যহীন এক টুকরো কাগজ। কারণ, সে নিজে সক্রিয় হয়ে কখনোই কোন সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে না। মানুষের জীবনের কোন প্রয়োজন সে মেটাতে পারেনা। একে মূল্যবান করে তোলে মানুষের শ্রম এবং কর্মকৌশলতা। সুতরাং শ্রমজীবী মানুষের শ্রম ও কর্মকৌশলতাই হল প্রকৃত সম্পদ।
মানুষের শ্রম এবং তার কর্মকুশলতা যখন প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা উপাদানগুলিকে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে তখন তা সম্পদে রূপান্তরিত হয়। এই সম্পদের সঙ্গে কাগজের টুকরোকে সম্পর্কমক্ত করে দিলে তার আর কোন মূল্য থাকে না।
সুতরাং টাকা বা অর্থ হল এমন একটা মাধ্যম যার সাহায্যে, মানুষের শ্রম ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে প্রাকৃতিক উপাদানকে সম্পদের রূপান্তরিত হওয়ার পর, তা হস্তান্তর করা হয় মাত্র।
এই মাধ্যমকে বৈধ কিংবা অবৈধ পথে যদি কেউ জমা করে এবং তাকে ব্যবহার করে সম্পদের দখলদারিত্ব নেয়, তবে সেই মালিকানা কতটা বৈধ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠা মোটেও অবৈধ নয়।
কিন্তু মজার কথা হল, রাষ্ট্রশক্তি তার পেশি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের শ্রমের চেয়ে মূল্যহীন কাগজের টুকরোকে দামি করে তুলেছে। ফলে শ্রমের চেয়ে কাগজের টুকরার, যা বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই সংগৃহীত হোক না কেন, তার মূল্য বেশি হয়ে গেছে।
ফলে, মানুষের শ্রম এবং তার দ্বারা সৃষ্ট সম্পদ নয়, মূল্যহীন কাগজের টুকরোই মূল্যবান হয়ে উঠেছে। মানুষের শ্রম তথা সম্পদকে অবৈধভাবে শোষণ ও দখল করার এটা একটা বৈধ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে শ্রম বিমুখ কিছু চতুর মানুষের কাছে।
তাই আজ শ্রমের মূল্যের চেয়ে টাকার মূল্য বেশি। আর সে কারণেই শ্রমজীবীরা অনাহারে অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় কিংবা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে শ্রম বিমুখ মানুষ সমস্ত কিছুর ভোগ দখল এবং নিয়ন্ত্রণকারী হয়ে উঠেছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন