অপরাধ কমানোর উপায় :
Ways to reduce crime
দেশে আর্থিক বৈষম্য বাড়লে অপরাধ বাড়ে। গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ‘আইনের শাসন’ এই গাল ভরা নীতির কথা বলে অপরাধ দমনের চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে অপরাধ কমেনা। কারণ যার উৎপত্তি হয় বৈষম্য থেকে, দমনপীড়ন চালিয়ে তাকে দমানো যেত না। বৈষম্যের অবসানই তার (অপরাধ দমনের) একমাত্র পথ।
গত রবিবার ২৯ জুন ২০২৫। আমেরিকার ইদাহোতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিল দমকলকর্মীরা। সেখানে গিয়েই আচমকা গুলিবৃষ্টির মুখে পড়ে তারা। দুজন দমকল কর্মী মুহূর্তেই প্রাণ হারান। অন্যজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
শেরিফ বব নোরিস বলেছেন, “একটি প্লটে আগুন লাগার খবর এসেছিল আমাদের কাছে। আমাদের ধারণা বন্দুক বাজই ওই আগুন লাগিয়েছিল। দমকলের টিম সেখানে পৌঁছতেই তাদের লক্ষ্য করে শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। দমকল কর্মীরা নিজেদের বাঁচানোর সময়টুকু পাননি।”
এই ঘটনার খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, একটি ২০ বছরের ছেলে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
প্রশ্ন হল, এই অপরাধের কোনো ব্যাখ্যা আছে আমাদের কাছে? ধণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পৃষ্ঠপোষক যারা, তারা বলবেন ছেলেটির মানসিক সমস্যা ছিল। হ্যাঁ, ছিলই তো। প্রশ্ন হল এই সমস্যা হল কেন? এর থেকে বেরোনোর উপায় কী?
তারা অপরাধকে দেখবেন, অপরাধীকে সাজা দেবেন। আর বলে বেড়াবেন অপরাধ কমে যাবে। আসলে তা হয় না। অপরাধ প্রবণতার মূল কারণকে উপেক্ষা করে অপরাধীকে সাজা দিলেই সমাজ বা দেশ থেকে অপরাধ দূর হয় না।
এই বাচ্চা ছেলেটি অপরাধ করে আত্মহত্যা করেছে। কেন করেছে? সে জানে ধরা পড়লে তার শাস্তি হবে। যে শাস্তি হবে, তার চেয়ে বেশি শাস্তি নিয়ে সে পৃথিবী ছেড়েছে। ছেড়েছে রাগে ক্ষোভে। আর সেই ক্ষোভের কারণ, তার চাহিদা পূরণ না হওয়া। আর মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা পূরণ না হওয়ার কারণ হল সমাজে সীমাহীন আর্থিক বৈষম্য। যার আছে তা যেমন সীমাহীন, যার নেই তাও তেমনই সীমাহীন। এই বিপরীত অবস্থানই হল বৈষম্য যা মানুষকে ক্ষুব্ধ করে অস্থির করে এবং জীবন দিয়ে হলেও তা প্রতিকারের এবং এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে।
এ হত্যার এটাই কারণ। এখন মূল কারণকে দূর না করে যদি শাস্তি দিলেই অপরাধ কমে যেত, তবে আমেরিকার মত শক্তিশালী দেশে অপরাধ বলে কিছুই ঘটতো না। অথচ পৃথিবীতে টিনেজ অপরাধীর সংখ্যা আমেরিকায় বোধহয় সবচেয়ে বেশি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন