hআমার জানা মতে (আমার জানার সীমাবদ্ধতার সম্ভাবনা কে মনে রেখেই বলছি), প্ৰকৃত নাস্তিকদের অভিধানে 'বিশ্বাস' শব্দটা বোধ হয় নেই। এর কাছাকাছি যে শব্দটা আছে তা হল 'অনুমান'। সুতরাং নাস্তিক হতে হলে 'ডারউইনবাদে বিশ্বাসী' হতেই হবে এমন দাবি যদি কেউ করে তা অযৌক্তিক বলে আমার মনে হয়।
এবার একটা ভ্রান্ত ধারণার কথা বলি। এর থেকে তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেলেও পেতে পারো।
সাধারণ ভাবে একটা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যে, ডারউইন বলেছেন, বনমানুষ, বানর, গোরিলা বা শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের জন্ম হয়েছে। কিন্তু ডারউইন এভাবে কোনো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত টানেননি। এটা অযৌক্তিক বলার কারন হল এভাবেই যদি মানুষের জন্ম হত তাহলে বানর বা শিম্পাঞ্জি সহ অন্যান্যরাও মানুষে রূপান্তরিত হয়ে যেত।
তাহলে প্রশ্ন হল ডারউইন ঠিক কী বলেছেন? খুব সহজ করে বললে দাঁড়ায় এই রকম একটি পরিষ্কার উক্তি, 'বর্তমান যুগের যেসব প্রাণী-প্রজাতির মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় তারা সুদূর অতীতে সম্ভবত একই সাধারণ কোন পূর্বপুরুষের থেকে উদ্ভূত হয়েছিল।'
এখানে 'সম্ভবত' কথাটা আর 'সাধারণ' কথাটা বাদ দিলেই ডারউইনবাদের ভুল ব্যাখ্যা হয়ে যাবে। যারা এটা করে থাকেন তারা হয় না বুঝে করেন আর না হয় ইচ্ছাকৃতভাবে কোন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করে থাকেন।
মনে রাখতে হবে ডারউইন বানর থেকে মানুষ হয়েছে এমন কোন সিদ্ধান্ত করে তার পাশে দাড়ি টেনে দেন নি। কারণ স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কোন বিজ্ঞানী এমন সিদ্ধান্ত করে দিয়ে যান না। যেতে পারেন না। কারন কোন সিদ্ধান্তে দাড়ি টেনে দিলে তা সীমাবদ্ধতা দোষে দুষ্ট হয়ে যায়। এমন সিদ্ধান্তের সাথে বিজ্ঞান, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং যুক্তিবাদের বৈপরীত্যের সম্পর্ক বর্তমান।
ল্যাবে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বিশেষ পদ্ধতিতে মেশালে জল হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রকৃতি বিজ্ঞান আর প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকা বিষয়ে অর্থাৎ নৃবিজ্ঞান কখনো এক পর্যায়ের নয়। তাই এখানে অত সহজে স্বতঃসিদ্ধ সিদ্ধান্ত টানা অত সহজ নয়। এবং এখনো তেমন সিদ্ধান্ত বিজ্ঞানীরা করে যেতে পারেন নি। এমনকি এই মুহূর্তে কেউ দাবি করছেন না। বিষয়টি এখনও গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে।
সুতরাং বুঝতেই পারছো বিজ্ঞান মানুষের উৎপত্তি (সূচনা নয়) বিষয়ে এখনও কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসেনি। আর নাস্তিকরা যেহেতু বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের বাইরে কথা বলেন না সেহেতু এ বিষয়ে তাদের অভিমত সহজেই অনুমান করা যায়।
উৎস : ফেসবুক
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন