সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভারতীয় রাজনীতির একটি ভয়ঙ্কর দুর্বলতা

ভারতীয় রাজনীতির একটি ভয়ঙ্কর দুর্বলতা

Weaknesses of Indian politics

Aminuddin Seikh Aminuddin Seikh আপনি শিক্ষিত মানুষ, যতটুকু জানি আপনি একজন ইতিহাসের অধ্যাপক। আমার এক ইতিহাসের ছাত্র, যে আপনার সঙ্গে একই সময় অধ্যাপনার পেশায় নিযুক্ত হয়েছে। তার সাথে তার ভাইভার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং আপনার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। আমি সেদিন থেকে আপনাকে চিনি। (আপনি হয়তো আমাকে সেভাবে চেনেন না)।

আপনার শিক্ষা এবং রাজনীতি সংক্রান্ত পড়াশোনা, নিশ্চয়ই কী করতে হবে আর কী করা যাবেনা, তা বুঝতে সাহায্য করবে।

বিজেপি ও তৃণমূল দু'জনকেই হটানো সম্ভব কিনা এ প্রশ্নের উত্তর তাই আপনি নিজেই জানেন বলে আমার বিশ্বাস।

আপনি ভাবুন। শিক্ষিত মানুষের নিজের কাছেই নিজের প্রশ্নের উত্তর থাকে। ভাবতে থাকুন, নিশ্চয়ই উত্তর পেয়ে যাবেন।

আমি শুধু কয়েকটা কথা বলি আপনাকে।

১) রাজনীতি, তা যদি সত্যিকারের মানুষের কল্যাণের জন্য করা হয়, এবং মানুষ যদি সত্যিকারের রাজনৈতিক সচেতন হয়, তাহলে সে নিজেই বুঝতে পারবে এই মুহূর্তে তার কি করা উচিত। তাই মানুষ চাইলে দু'জনকেই হারাতে পারে। আমি আপনি সেটা ঠিক করে দিতে পারি না। আমরা শুধু আমাদের মতামতটা দিতে পারি মাত্র। তাতে কাজ হবে কিনা, তা জানাও আমার আপনার পক্ষে সম্ভব নয়।

২) বিজেপিকে তৃণমূল এনেছে এই কথাটা আমার কাছে বড্ড অযৌক্তিক ও হাস্যকর বলে মনে হয়। কারণ, কোন একটি রাজনৈতিক দল অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে ডেকে আনতে পারে না। অন্যদলের সাহায্য নিতে পারে নিজের ক্ষমতায়নে সাহায্য করার শর্তে। কিন্তু কখনোই নিজের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে অন্যদলকে ডেকে আনতে পারে না। বামফ্রন্ট যে 7 শতাংশে নেমে গেছে - এই নেমে যাওয়া কি বামফ্রন্ট চেয়েছিল? চায়নি। কিন্তু তবু চলে গেল। তার কারণ, বামপন্থীরা মানুষকে বোঝাতে পারেনি যে, তৃণমূলের বিকল্প বিজেপি নয়, আমরা। তৃণমূলও যদি বোঝাতে না পারে, তাহলে তৃণমূলকেও চলে যেতে হবে। অন্যদিকে বামপন্থীরা যদি তার বড় শত্রুকে চিনতে ভুল করে এবং তাকে গুরুত্ব কম দেয়, তাহলে তাদেরকেও তার ফল ভোগ করতে হবে।

তাই, কে শাসন ক্ষমতায় আসবে, ভারতীয় রাজনীতিতে তার গুরুত্ব কী এবং কতটা হবে, তা দুটো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এক) জনগণের সমর্থন এবং দুই) সেই রাজনৈতিক দলের নীতি কর্মসূচি এবং তাকে বাস্তবায়িত করার জন্য তার ক্যাডারদের সীমাহীন এবং যথাযথ পদ্ধতিতে পরিশ্রম। বিজেপির সাফল্যের চাবিকাঠি রয়েছে সেখানেই। তৃণমূলের ঘরে নয়।

৩) তর্কের খাতিরে যদি আমি ধরে নি, যে তৃণমূলের কারণেই বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। বিজেপি তৃণমূলের সাহায্য নিয়েই শক্তিধর হয়ে উঠেছে, তাহলে তো এটা মানতে হবে যে বিজেপি একটা শক্তিহীন এবং অন্তঃসারশূন্য একটি রাজনৈতিক দল। আর তা যদি হয়, তাহলে সারা ভারতবর্ষে বিজেপি ক্ষমতায় এলো কী করে? তাও আবার পরপর দুবার? পশ্চিমবঙ্গ থেকে তো মোটে আঠারোটা এমপি পেয়েছে ওরা। এবং হিসাব বলছে এর বড় অংশটাই চলে গেছে বামফ্রন্টের ঘর থেকে। তৃণমূলের ভোট তো সেভাবে কমেনি বললেই চলে।

৪) পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বিজেপির এই বাড়বাড়ন্তকে কোন তৃণমূল সাহায্য করেছে? কারণ, মমতার তৃণমূল তো পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আর কোন জায়গায় নেই। তাহলে সেখানে বিজেপি ক্ষমতায় এলো কার সাহায্য নিয়ে?

অমুক তমুককে ডেকে এনেছে - এসব বক্তব্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য প্রচার করে। এই কাজ ভারতবর্ষের প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল করে থাকে।  এটা তাদের একটা চালাকি। সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের এই চালাকি ধরতে পারেন না। তাই তারাও এভাবে বলতে শুরু করে। ভারতীয় রাজনীতির এটা একটা ভয়ঙ্কর দুর্বলতা।

https://alirkotha.blogspot.com/2020/11/blog-post_20.html

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে