সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বামপন্থীদের পরাজয়ের কিছু কারণ

এবারের বিধান সভার নির্বাচন দ্বিমুখী লড়াই। এই দুটো মুখ হলো বিজেপি বিরোধী মুখ ও বিজেপির মুখ। মূলতঃ এই দুইভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন বাংলার মানুষ।

বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে তৃণমূল নিজেকে যতটা শক্তিশালী পক্ষ হিসাবে তুলে ধরতে পেরেছে, বামপন্থীরা ততটা পারে নি। বলা ভালো, তুলে ধরে নি।

প্রশ্ন হচ্ছে, কেন ধরেনি? 
১) নিচতলার কর্মীরা বিজেপিকে প্রধান শত্রু হিসাবে ভাবেন নি। বিজেমূল শব্দটি তার বড় প্রমাণ।
২) নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করার মত ভুল রণনীতি। তৃণমূলকে আগে সরাও, তাতে বিজেপি আসে আসুক।

৩) বামপন্থীরা ভুলে গিয়েছিলেন যে, তাদের ৩৪ বছরের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অন্যতম প্রধান কারণ তাদের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি। বাংলার মানুষের এটা একান্ত নিজস্ব অর্জন। তৃণমূল বিজেপির সাথে জোট করেও সেই কারণেই ক্ষমতায় আসতে পারে নি।

৪) বামপন্থীদের অনেকেই ভুলতে বসেছেন যে, অসাম্প্রদায়িক বাঙালির যুগযুগ ধরে অর্জিত একটি স্বত্বা। শ্রীচৈতন্য, রামকৃষ্ণ, রবীন্দ্র-নজরুলের হাত ধরে আবহমানকাল ধরে এই ধারা চলে আসছে। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হওয়ার পরও বাংলাদেশে ইসলামিক মৌলবাদী শক্তি এখনও মাথা তুলতে পারেনি এই ধারার সক্রিয় অবস্থানের কারণে।

৪) বামপন্থীরা ভুলে গিয়েছিলেন, তাঁরা এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। পরীক্ষার খাতায় নির্দিষ্ট প্রশ্নের যথাযথ উত্তর লিখে তৃতীয় থেকে প্রথম হওয়া যায়, কিন্তু রাজনীতির খাতায় তা অসম্ভব। বিশেষ করে ময়দানে যেখানে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ রয়েছে দু-দুটো। এবং তাদের একটি জনকল্যাণমূলক নীতি ও অসাম্প্রদায়িক নীতিকে শক্ত হাতে ধরেছে বাংলার মাটির গন্ধ বুঝেই। ফলে বামপন্থীদের কাছে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ ছিল দ্বিতীয় হওয়ার লড়াই।
এভাবে ভাবতে পারলে বামন্থার লড়াইটা একমুখী হত। সর্বশক্তি দিয়ে বিজেপি বিরোধিতা করতে পারলে অসাম্প্রদায়িক সাধারণ ভোট অনেকটাই বামেদের ঝুলিতে পড়তো।

৫) বামপন্থীরা প্রথম হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে গিয়ে বিজেপির ব্যর্থতার কথা শুধুমাত্র গণশক্তির পাতাতেই থেকে গেছে। তৃণমূলস্তরের বামকর্মী ও সমর্থকদের কাছে পৌঁছয়নি। ফলে সর্বশক্তি নিয়োগ হয়েছে গিয়েছে প্রথম হওয়ার কাজে যেটা ছিল অযৌক্তিক ও অবাস্তব।

স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ, যারা রাজনীতিটা সরাসরি করেন না, তারা তৃণমূলকে উপযুক্ত প্রতিপক্ষ ভেবেছেন। স্বাভাবিকভাবে বিজেপি বিরোধী হওয়ার ফসল পুরোটাই চলে গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে