সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সৈয়দ কাউসার জামাল ও আমার মতামত

শ্রদ্ধেয় সুভাষ দাস আমার ইনবক্সে শ্রদ্ধেয় সৈয়দ কওসর জামাল ভাইয়ের একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, যে উনি আমার মতামত জানতে চান। আমি তাঁকে আমার মত জানিয়েছি।

( জামালদার লেখার লিঙ্ক হল

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1449002371828364&id=100001558441443

লেখাটি আমার পোষ্টের নিচেই দেখা যাচ্ছে। ওটা পড়ে আমার লেখাটা পড়বেন আশা করি।)

লেখাটা পড়ে আমি যে মতামত দিয়েছি তা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলাম, আমার ভাবনার ত্রুটিবিচ্যুতি কিম্বা যতার্থতা খুঁজে পাওয়ার জন্য।....

সুভাস দা,

জামালদার পোষ্টটা আমি আগেই পড়েছি। উনি যথার্থই বলেছেন,'ওখানকার মুসলমানরা একটা অজুহাত খুঁজছিলেন'। কিন্তু যেটা উনি বলতে সাহস করলেন না, হয়তো বা ওনার গোচরে আসেনি তাহল...

১) ঠিক একই ভাবে ওই এলাকাজুড়ে লাগাতাড় একটি ক্ষুদ্র মৌলোবাদী হিন্দুগোষ্ঠি মুসলিম মৌলোবাদীদের উউত্তেজিত করে চলেছেন, এমন ঘটনা যাতে তারা (এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ) ঘটায়। (এমন কিছু হোয়াটস অ্যাপ পোষ্ট আমার কাছে আছে এখনও)। আর কিছু অশিক্ষিত গোঁয়ার মুসলিম ধর্মগুরু ঝোপবুঝে কোপ মেরেছেন। সাধারণ ও অসচেতন শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে থাকা মুসলমান এই ফাঁদে পা দিয়েছেন।

২) ঘটনাটা যেন এমন, একটা বাচ্চা ছেলে কোনো কুচক্রীর প্রোরচনায় তার পাশে বসে থাকা একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে লাগাতাড় চুপিসারে চিমটি কেটে ( পড়ুন অসম্মানিত করে) চলেছে, এবং একটা সময় ঐ মানুষটি সহ্য করতে না পেরে অবিবেচকের মত ঠাস করে একটি চড় কসিয়ে দিয়েছেন বাচ্চাটির গালে। আর তার কারণে দুটি পরিবার মারামারি বাধিয়ে দিয়েছেন। আর মজা লোটার চেষ্টা করছেন উভয় পক্ষের দুষ্টুজনেরা। এখানে পড়ুন মৌলোবাদীরা। ভুলে গেলে চলবেনা, এরা আসলে হয় রাজনীতির কারবারি, নয় ধর্মব্যবসায়ী। সমস্ত মুসলমানকে এভাবে দায়ী করা ঠিক নয়।

৩) উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে এমন কয়েকটা উদাহরণ :

ক) জাতীয় পতাকার উপর কাশ্মীরী মুসলিমরা গোমাতাকে বলি দিয়েছেন এমন একটা পোষ্ট; যা পূরোপুরি মিথ্যা।

খ) ঈদের দিন মসজিদে পাকিস্তানি পতাকা তুলেছেন। যা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।

গ) ভারত পাকিস্তান ক্রিকেট খেলায় ভারতের পরাজয়ে মুম্বাইয়ে মুসলিমরা আনন্দ উল্লাস করেছেন মসজিদের সামনে। এবিপি আনন্দ তা মিথ্যা বলে প্রমাণ করে দিয়েছে।

ঘ) ঐ এলাকায় একটি ফুটবল খেলায় নাকি পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো হয়েছে। আমার কাছে প্রমাণ আছে সেটাও মিথ্যা।

এমন অসংখ্য অপপ্রচার করা হয়েছে নিয়োমিতভাবে। সাধারণ খেটে খাওয়া হিন্দু-মুসলিম সেই অপপ্রচার ( পড়ুন টোপগুলি) সেভাবে খায়নি।

অবশেষে মুসলিম সম্প্রদায়ের 'পবিত্র কাবা' শরীফ নিয়ে একটি বিকৃত পোষ্ট দেখে মাথামোটা মুসলিমরা আর মাথা ঠিক রাখতে পারলেননা। শুরু হয়ে গেল পাশাপাশি বসবাসকারী মানুষের মধ্যে মারামারি, যারা হাজার বছর ধরে ভাই-ভাইয়ের মত থেকেছেন।

৪) জামাল ভাই তাঁর লেখায়,

ক) বাচ্চা ছেলেকে ক্ষমা করেছেন। এটা যথাযথ। কিন্তু তার কচি মাথাটা যারা নষ্ট করার চক্রান্ত করলেন তাদেরকে যেন কিছুটা ছাড় দিয়ে গেলেন। এটা যথার্থ নয় বলে আমার মনে হয়েছে।

খ) বলেছেন, ওখানকার মুসলমানরা সুযোগ খুঁজছিলেন। কথাটা ঠিক। কিন্তু আংশিক। কারণ, ওখানকার সব মুসলমান এমন অপকর্মের সামিল হয়েছেন বলে যে সাধারণীকরণ করে ফেলেছেন তা আমার কাছে যথাযথ মনে হয়নি।

গ) এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন সে খবর জামালদার কাছে পৌঁছায়নি। যদিও তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

জামালদা শ্রদ্ধেয় ও সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁকে জ্ঞান দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখাবো সে যোগ্যতা ও ইচ্ছা কোনটারই অধিকারী আমি নই। মিডিয়ার মানুষ বলে মিডিয়াকে সত্য গোপন করার মাপকাঠি সম্পর্কে যে কথা বলেছেন এবং সমালোচনা করেছেন, আমার মনে হয়েছে সেই একই সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে জামালদাকেও। কারণ, তিনিও কিছু সত্য গোপন করেছেন কিম্বা এড়িয়ে গেছেন। তাই সংবাদ মাধ্যমকে সমালোচনা করলে তার দায় তাঁর কাঁধেও এসে পড়বে ঐ একই যুক্তিতে।

পরিশেষে একটা প্রশ্ন, টোপ দেওয়া ও টোপ খাওয়া এবং তার কারণে যদি কোন সমস্যা হয় তার দায় কি উভয়েরই ঘাড়ে চাপে না?

যদি আমি শান্তি চাই, নির্ভিকভাবেই এই অপকর্মের সামনে এবং নেপথ্যে যারা আছেন তাদের উভয়কেই শক্ত হাতে শাসন করতে হবে। তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে সমানমাত্রায় গলা তুলে সোচ্চার হতে হবে। নাহলে পক্ষপাতিত্বের অজুহাতে যেকোন একটা পক্ষ এমন অপকর্ম ঘটানোর পুনরায় সুযোগ পেয়ে যাবে।

লেখাটি দেখুন ফেসবুকে

০৬/০৭/২০১৭

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে