পরিবার ও নৌকা মধ্যে সাদৃশ্য
একটা পরিবার, আসলে একটা নৌকা। স্বামী-স্ত্রী যথাক্রমে তার দাঁড় ও হালের মত। সন্তানসন্ততি ও পিতামাতা, ওই নৌকার সহায়-সম্বলহীন সহযাত্রী মাত্র। আর প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান, অনেকটা পালের মতো।
দাঁড় ও হালের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় হলেই যেমন নৌকা সঠিক সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে, ঠিক তেমনই একটি পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মত ও পথ সংক্রান্ত ভাবনার সমন্বয় ঘটাতে (সমমনস্ক ও সমদর্শি হলেই) পারলেই পরিবারটি সঠিক সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। প্রতিষ্ঠিত হয় পারিবারিক শান্তি।
প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান হল নৌকার পালের মতো। পরিবেশের আবহাওয়া বুঝে তাকে অনুকূলে ব্যবহার করার কৌশল আয়ত্ত করতে পারলে (সমমনস্ক করে তুলতে পারলে) গন্তব্যে পৌঁছানোর কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। আর এ কাজে ব্যর্থ হলে অর্থাৎ আবহাওযার অনুকূলে না বইলে বা বওয়াতে না পারলে সলিল সমাধি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। প্রতিকূলে বইলে তো কথাই নেই, সলিল সমাধি নিশ্চিত।
এর থেকে মুক্তির উপায় আছে। এবং তা হল :
১) পরিবারের প্রতিটি মানুষের মধ্যে পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত (বিশ্বাসী হওয়া) থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা,
২) কোনও বিষয়ে একজন আর একজনকে কখনই গোপন না করা,
৩) সমস্ত বিষয়ে পরস্পরের (ছোট বড় সকলের) মধ্যে মতামত বিনিমযের সুযোগ থাকা।
৪) ‘একতাই বল’ বা ‘দশের লাঠি একের বোঝা’ এই প্রবাদকে জীবনে চলার পথের মূলমন্ত্র হিসাবে গ্রহণ করা,
৫) ‘আমি’ নয়, পরিবারের প্রত্যেকের পরিচয় প্রকাশে ‘আমরা’ শব্দের ব্যবহার সততার সঙ্গে নিশ্চিত করা এবং এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা।
৬) যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্যের মাধ্যমে সঠিক সত্যে পৌঁছানো অনুশীলন করা এবং তা সকলের মধ্যে মেনে নেওয়ার মতো ‘সৎ ও সাহসী মানসিক শক্তি’ অর্জন করা।
এর কোন একটায় ঘাটতি থাকলে, পরিবারে সকলের অজান্তে যন্ত্রণার যন্ত্র জন্ম নেয় এবং ট্রোজান হর্সের (এক ধরণের কম্পিউটার ভাইরাস, যার মাধ্যমে কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ হ্যাকারের হাতে চলে যায়, এবং মালিক ইউজার কম্পিউটারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে) মত স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা চলতে শুরু করে। ফলে, সংসার (খাদের) সীমান্তে এসে পৌঁছায়।
----------xx--------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন