দেশভাগ। যন্ত্রণা শুধু ওপার বাংলার হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এপার বাংলার মুসলমানদেরও সমানভাবে কাতর করেছিল।
এই সহজ সত্যটা উপলব্ধি করার জন্য বিশেষ তাত্ত্বিক হওয়ার প্রয়োজন হয় না। সাধারণ যুক্তি বুদ্ধিতেই তা উপলব্ধ হয়। রাজনীতির জটিল ও কুটিল চক্রান্তে এই সত্য দীর্ঘ সাত দশক ধরে চাপা পড়ে আছে। দুটি সম্প্রদায়ের মানুষ তাই পাশাপাশি বাস করেও পরস্পর পরস্পরকে সন্দেহের চোখে দেখে। একজন মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষের কাছে এটা যে কত বড় লজ্জার এবং কষ্টের তা বুঝিয়ে বলা মুশকিল।
কেন এই পরিস্থিতি?
কারণ, ইতিহাস তো বটেই, সাহিত্য, সিনেমা, নাটক সহ এপার বাংলার কোনও সাংস্কৃতিক মঞ্চে এর একরত্তি ছোঁয়া পড়েনি। সেখানে মঞ্চস্থ হয়েছে স্বাধীনতা-উত্তর ও পূর্বের সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় মোড়া একই মুদ্রার বাছাই করা পিঠের ছবি নিয়ে তৈরি পান্ডুলিপির বাছাই করা পর্ব। অন্য পিঠে থাকা চিত্রগুলি পান্ডুলিপি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেনি আজও। ফলে অন্য পর্বগুলি তরুণ প্রজন্মের কাছে এসে পৌঁছায়নি। এই একপেশে চালচিত্র দেখে দেখে বড় হওয়া প্রজন্মের একজন জ্বলছে ঘৃণার আগুনে, অন্যজন সীমাহীন গ্লানির অতলে ডুকছে অসহায় ভাবে।
এই কারণেই এপার বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণ প্রজন্ম বড় হয় এই গ্লানি নিয়ে যে, তারই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের নির্মম ও নিষ্ঠুর অত্যাচারে প্রতিবেশী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ কী দুর্বিসহ জীবন যন্ত্রণা ভোগ করে এদেশে পালিয়ে এসেছেন। অথচ আমাদের পালাতে হয় নি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন