সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া বা না হওয়া স্কুল না মাদ্রাসায় পড়ছি শুধুমাত্র তার ওপর নির্ভর করে না

বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া না হওয়া স্কুল না মাদ্রাসায় পড়া তার ওপর নির্ভর করে না 

আনন্দবাজার ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে ঃ
"টাকা কি আটকাতে পারবে স্বপ্নকে?"
"দশের মধ্যে স্থান, আজিজা-রৌনক-সানিয়াদের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে টাকা" - খবরটি আনন্দবাজার পত্রিকা ফেসবুক পেজে শেয়ার করলে Anindita Dey মন্তব্য করেছেন,
“মাদ্রাসা থেকে পাশ ডাক্তার হলে সেটা যেন লেখা থাকে ডিগ্ৰীতে” 😌
আমি লিখলাম,
“বোন Anindita Dey তোমার প্রোফাইলের নিচে যে বিখ্যাত কবিতার লাইনটি লিখে রেখেছো, তুমি কি জানো, ওই লাইনের স্রষ্টাও একজন মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন?"
Anindita তার উত্তরে যা লিখল তার মূল কথা  হলো : মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করলে কেউ বিজ্ঞানমনস্ক হয়না, হয় সন্ত্রাসী।


✒️ এ প্রসঙ্গেই নিচের লেখাটা লেখা হয়েছে।✍️


✍️ অনিন্দিতা কে খোলা চিঠি:

আজ আনন্দবাজার অনলাইন খবর করেছে “দশ এর মধ্যে স্থান পাওয়া আজিজিয়া রৌণক ও সানিয়াদের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে বাধা হতে পারে টাকা।” ফেসবুক পেজে এই খবর শেয়ার করায় Anindita Dey মন্তব্য করেছেন :
“মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ডাক্তার হলে সেটা যেন লেখা থাকে ডিগ্রিতে”।
অনিন্দিতার প্রোফাইল লক করা। কিন্তু প্রোফাইল-এর নিচে গর্বের সঙ্গে লেখা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার একটি বিখ্যাত লাইন। 
“আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস, আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ”। 
অনিন্দিতা বোধহয় জানেন না যে বিখ্যাত লাইনটি যার কাছ থেকে গর্ব ভরে ধার করেছেন, তিনিও একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন।

আমি একথা উল্লেখ করায় সে যা লিখেছে তার মূল কথা হলো, মাদ্রাসা থেকে পাস করা ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞানমনস্ক হয় না, হয় সন্ত্রাসী।

আসলে Anindita Dey হয় তো জানেন না (?), যারা বিজ্ঞান মনস্ক হবেন না, তাদের কেউ জোর করে বিজ্ঞান মনস্ক করতে পারবেন না। সে তিনি যেখান থেকেই লেখাপড়া করুন না কেন?আর যে ধর্মের মানুষই হন না কেন?

অসংখ্য... অসংখ্য মানুষ আছেন যারা মাদ্রাসায় পড়েন নি। কিন্তু তারা আগাগোড়া অন্ধবিশ্বাস ও কুয়াংস্কারে মোড়া। বিজ্ঞান মনস্কতার বিপরীত মেরুতে অবস্থান ধর্ম বিশ্বাসের। যারা ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে নামাজ বা পূজা করেন তারা তো বিশ্বাসী মানুষ। তারা কীভাবে বিজ্ঞান মনস্ক হবেন?দেশের প্রতিটি স্কুলে সরস্বতী পুজো হয়। তা যদি হয়, তবে কীভাবে বিজ্ঞান মনস্ক হবে সেই সব স্কুলে পড়া ছেলেমেয়েরা? এক্ষেত্রে কোথায় পার্থক্য মাদ্রাসার সঙ্গে এই স্কুলগুলোর?

সাধারন স্কুলের সঙ্গে পার্থক্য তো শুধু এক জায়গায়। স্কুলে অতিরিক্ত ভাষা হিসাবে সংস্কৃত ভাষা পড়ানো হয়, আর মাদ্রাসায় আরবি ভাষা পড়ানো হয়। এর সঙ্গে বিজ্ঞান মনস্ক হওয়া আর না হওয়ার সম্পর্ক কোথায়?এই যুক্তিবোধ যদি আমার বা আপনার মধ্যে না থাকে তবে আমি-আপনিই বা বিজ্ঞান মনস্ক হতে পারলাম কোথায়? কী বলেন বোন?

আসলে আমাদের কিছু মানুষের ‘মাদ্রাসা’ শব্দটায় এলার্জি আছে। এই শব্দটির অর্থ বাংলা করলে বিদ্যালয়ই বোঝায়। আমরা অনেকেই তা জানি না। এটা আমাদের অজ্ঞতা।

এখানে যে কেউ পড়তে পারে, আবার যে কেউ পড়াতে পারেন। ধর্ম কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। আমরা তা হয় জানি না, না হয়, না জানার ভান করি, বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য।

আপনি কি জানেন, এ বছর ইউ পি এস সি পরীক্ষার শীর্ষ স্থানে থাকা শ্রুতি শর্মা জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া একাডেমিতে পড়েছেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে? জানেন না বোধ হয়।

বোমা সন্ত্রাস সংক্রান্ত যে কথা বললেন, তা তো একপেশে ন্যারেটিভ। হত্যা বা ষড়যন্ত্রে যুক্ত ব্যাক্তি মুসলিম হলেই তাকে সন্ত্রাসী বলে দেওয়া হয় আর অমুসলিম হলেই বলা হয় সাধারন হত্যাকারী। আসলে দুটোই তো সন্ত্রাস বা সন্ত্রাসী। আমাদের যুক্তিবোধের রাডার এতই শক্তশালী যে এক্ষেত্রে নিখুঁতভাবে বেছে নিতে পারে একটি বিশেষ সন্ত্রাসীকে যার গায়ে বিশেষ ধর্মীয় এসেন্স আছে।

আচ্ছা,গৌরী লঙ্কেশকে যারা হত্যা করেছিল তারা কি সন্ত্রাসী নয়?সন্ত্রাস শব্দের অর্থ ঠিকঠাক জানলে এবং বুঝলে এই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় না আমার বা তোমার মত মানুষদের। তাই না?

আশা করি বোঝাতে পেরেছি। তবে যে জেনে বুঝে না বোঝার ভান করে সে বুঝবে না। জানি না, তুমি এই পর্যায়ের মানুষ কিনা।

প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে