সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

করপোরেট মিডিয়া আসলে তোতাপাখি : ইসরাইল, ভারতের সহ গোটা পৃথিবীতেই তারা এক সুরে গান গায়

ইসরাইলের তোতা পাখি পশ্চিমী মিডিয়া আর ভারতে বিজেপির তোতাপাখি ভারতীয় করপোরেট মিডিয়া যা নিন্দুকেরা 'গোদী মিডিয়া' নামে অভিহিত করে থাকে।

মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা সম্পর্কে ইসরাইল যা বলে ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া তোতা পাখির মতো তা-ই প্রচার করে। সাংবাদিকতার প্রধান প্রধান শর্তগুলোকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরাইলের দেওয়া তথ্যই তারা প্রচার করে অন্ধ ও নির্ল্জভাবে।

ভারতের ক্ষেত্রেও করপোরেট মিডিয়া সেটাই করে। আসলে মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন করপোরেট পুঁজির মালিক বা পুঁজিপতিরা। এরা কি কখনও নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় - এমন খবর, তথ্য বা তত্ত্ব প্রচার করবে? করবে না, করেও না। আর এটাই স্বাভাবিক।

আমরা দেশের অধিকাংশ মানুষই জানি না এই সত্য। এও জানি না যে, সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে কর্পোরেটদের স্বার্থ পরস্পর বিপরীত মেরুর। এরা একে ওপরের পরিপূরক নয়। যদিও পরিপূরক হিসেবেই ওরা দেখাতে চায়। প্রচারও সেভাবেই করে। কিন্তু সত্য হল,  কর্পোরেটরা চায় সমাজে আর্থিক বৈষম্য থাক। কারণ, বৈষম্য জন্ম দেয় অভাব। অভাব থাকলেই অভাবীকে কম মজুরিতে খাটানো যায় এবং তার ফলেই পুঁজির পাহাড় জমানো সম্ভব হয়। সুতরাং যেকোন মূল্যে বৈষম্য টিকিয়ে রাখাই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। পুঁজিপতিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকার সেটাই করে। চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য ছিটেফোঁটা দান খয়রাতও করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য।

আর এই সত্যটি ভুলিয়ে ও গুলিয়ে দেওয়াই করপোরেট মিডিয়ার প্রধানতম কাজ। একাজ তারা নিষ্ঠার সঙ্গে করে। সাধারণ মানুষ শিক্ষার অভাবে জানতে পারে না মিডিয়া এটা কিভাবে করে - এই কঠিন সত্য। জগত ও জীবনের চালিকাশক্তির আসল রহস্য তাদের কাছে ধরা পড়ে না। 

কর্পোরেট পুঁজির মালিকরা ধর্মগুরুদের সহায়তায় লাগাতার প্রচার করে যায়, তোমার ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হচ্ছেন ঈশ্বর। তিনি না চাইলে তোমার ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। সুতরাং সব কিছু ভুলে ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধর। টিভির খবরে, সিরিয়াল, সিনেমা, ধর্ম সম্মেলন ইত্যাদির পৃষ্পোষকতায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সেটাই প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা প্রতিদিন। প্রকৃত অর্থে অন্ধবিশ্বাসকেই তারা ধর্মবিশ্বাসে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে।

ধর্মগুরুদেরকেও পুঁজির মালিকরা কখনও প্রত্যক্ষ ভাবে আবার কখনও পরোক্ষভাবে কাজে লাগায় ধর্ম প্রচারের কিম্বা নিজেদের সংকৃতির পৃষঠপোষকতার নাম করে। ধর্মগুরুরা সুকৌশলে ধর্মের সাথেই যুক্ত করে দেয় ধর্মান্ধতা। সাধারণ মানুষ ধর্ম মানতে গিয়ে নিজের অজান্তেই ঢুকে পড়ে সেই ধর্মান্ধতার গভীর খাদে, যেখান থেকে বেরিয়ে আসা অশিক্ষার অন্ধকারে থাকা মানুষদের পক্ষে আর সম্ভব হয় না।

 প্রকৃত শিক্ষার আলো চিন্তা ও চেতনার গভীরে না পড়লে এটা বোঝা যায় না। বোঝা যায় না এই মিডিয়া কীভাবে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে জনগনকে বোকা বানিয়ে দেশের সম্পদকে নিজেদের কুক্ষিগত করছে। 

বর্তমান সরকার এবং তাদের বিভিন্ন অনুসারী ধর্মীয় সংগঠন হিন্দু ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করছে আর করপোরেট মিডিয়া সেগুলো নিয়ে মাতামাতি করে জনগনকে মাতিয়ে রাখছে। এবং সেই ফাঁকে অনুগত শাসকদলকে দিয়ে একের পর এক জনগনের সম্পত্তি (যা সরকারি সম্পত্তি নামে পরিচিত) পুঁজির মালিকদের হাতে তুলে দিচ্ছে।

আমরা ধর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে গণতন্ত্রের ককলেট বানিয়ে ধর্মান্ধতার ঝোলে মেখে খাচ্ছি আর খালি পেটে থাকার আনন্দে নাচছি। নাচতে নাচতে ভোট দিয়ে আসছি পুঁজির মালিকদের রাজনৈতিক এজেন্টকে। আর দিনান্তে অদৃশ্য ঈশ্বরকে সামনে রেখে ভাগ্য ফেরানোর মন্ত্র জপ করছি। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই দৃশ্য দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে আসে।

বিস্তারিত পড়ুন এখানে ক্লিক করে

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন