সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইংরেজ শাসন হিন্দুদের জন্য আশীর্বাদ?

ইংরেজ শাসন হিন্দুদের জন্য আশীর্বাদ?

Was British rule a blessing for Hindus?

অনেকেই মনে করেন, ইংরেজ শাসন ছিল হিন্দুদের জন্য আশীর্বাদ। এর কারণ, ইংরেজরা চলে যাওয়ার পর এদেশের শাসন ক্ষমতায় হিন্দুদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইংরেজরা না এলে ভারত এখনও মুসলমানদের শাসনাধীনেই থেকে যেত। মজার কথা হল, ঠিক এ কারণেই হিন্দুত্ববাদীরা আজ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলে না, এবং এই ভাবনা থেকেই তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণও করেনি। আজ ইংরেজদের বাদ দিয়ে প্রায় ৩০০ বছর আগের মুসলিম শাসকদের অযৌক্তিকভাবে, ইতিহাস বিকৃত করে, কাঠগড়ায় তুলছে। অথচ প্রায় ১০০ বছর ধরে (১৭৫৭-১৮৫৭) ইংরেজদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে গেছে যারা, তাদের বড় অংশ এই মুসলিম শাসকরাই, যারা ইংরেজদের মতো এদেশের সম্পদ লুটেপুটে নিঃস্ব করে দেশের বাইরে নিয়ে যায়নি।

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে হিন্দুত্ববাদীদের এই ভাবনাকে সত্য বলে মনে হয়। তথ্য ও যুক্তির নিরিখে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার বিশ্লেষণ করলে এই ভাবনার মধ্যে গভীর দুর্বলতা ধরা পড়ে। 

কারণ, প্রধান শাসক মুসলিম হলেই সেটা মুসলমানদের শাসন হয়ে যায় না। যদি তাই হতো, তাহলে স্বাধীনতা উত্তর ভারতবর্ষ তো হিন্দুদের শাসনের মধ্যেই রয়েছে। কারণ, এযাবৎ যত জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন (প্রধান শাসক) তারা সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সুতরাং উপরের যুক্তিকে মান্যতা দিলে স্বাধীনতার পর থেকে ভারত তো হিন্দু রাষ্ট্রই হয়ে আছে? প্রশ্ন হল, তাহলে বিজেপি তথা হিন্দুত্ববাদী দলগুলো নতুন করে হিন্দু রাষ্ট্র করার কথা বলছে কেন?

দ্বিতীয়ত, এই ভাবনাটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং কল্পনা প্রসূত। কারণ, প্রধান শাসক হিসেবে মুসলিমদের কর্তৃত্বের দিন শেষ হয়েছে অনেক আগেই। প্রকৃতপক্ষে ওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর যে শাসনব্যবস্থা এখানে গড়ে উঠেছিল তার গভীর দুর্বলতা এবং আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যার ফলে মুসলিমদের প্রধান শাসকের ভূমিকা থেকে বিদায় নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই তাদের সরে যাওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা। মূলত সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল। একইভাবে স্পেন, গ্রিস সহ ইউরোপের একাধিক দেশ থেকে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়। সেই জায়গারও দখল নেয় ইউরোপীয়রা।

প্রসঙ্গত মনে রাখা প্রয়োজন ১) সেময় মুসলিম শাসকদের সরিয়ে হিন্দু শাসকদের সমগ্র ভারতের কর্তৃত্ব নেওয়ার মত সামরিক শক্তি, রাজনৈতিক দুরদৃষ্টি, প্রয়োজনীয় ঐক্য এবং প্রচলিত রাষ্ট্রদর্শন কোনোটিই তাদের অনুকূলে ছিল না। তা থাকলে ইংরেজরা নয়, মুসলিম শাসকদের দুর্বলতার সুযোগে, তারাই ক্ষমতায় আসতেন। ২) সেই একই পরিস্থিতি এক সময় (আন্তর্জাতিক ও রাজনৈতিক) ইংরেজদেরকেও ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে। 

কী সেই পরিস্থিতি?

ইউরোপীয় নবজাগরণের হাত ধরে ইউরোপীয় চিন্তাবিদ ও শাসকরা যে উন্নত ও আধুনিক যন্ত্র শিল্পের জন্ম দিয়েছিল এবং তাকে কেন্দ্র করে যে উন্নত প্রযুক্তির অধিকারী হয়ে উঠেছিল, তাকে রুখে দেয়ার মত ক্ষমতা (প্রযুক্তি) মুঘল শাসকদের ছিল না। শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর যে যে অংশে মুসলমান শাসকরা ছিলেন প্রত্যেক জায়গায় (স্পেন গ্রিস ইত্যাদি) একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। 

মধ্যপ্রাচ্যে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তন এবং পরবর্তীকালে তাকে কেন্দ্র করে আরবিয় নবজাগরণ ঘটেছিল। ফলে ভূমধ্যসাগরকে কেন্দ্রে রেখে তার তিনদিকে এক বিরাট ইসলামীয় সাম্রাজ্যের সূত্রপাত ঘটেছিল। মুসলিম শাসক মুয়াবিয়ার সময় থেকে যুক্তিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ডেভলপমেন্টের উত্তরোত্তর উন্নতির কারণে তাদের এই সাফল্য পেয়েছিল। মুসলিম শাসকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে তা ক্রমশ পৌঁছেছিল ইউরোপে। পরবর্তীকালে যা ইউরোপীয় নবজাগরণের জন্ম দেয়। 

কিন্তু পরবর্তীকালে মুসলিম শাসকদের অন্তর্দ্বন্দ্ব তাদের অগ্রগতির পথের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এই দ্বন্দ্বের সঙ্গে যুক্ত হয় শরীয়তী শাসন ব্যবস্থার জটিল আবর্ত। জনগণের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার জন্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার গবেষণা ছেড়ে, তারা ঢুকে পড়ে ধর্মতত্ত্বের গবেষণায়। নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে থাকা ধর্মতাত্ত্বিকদের দিয়ে নতুন নতুন শরীয়ত বা আইন শাস্ত্র তৈরির দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করে। তৈরি হয় নানান শাসকের অধীনে নানান ধরনের হাদিস ও শরীয়ত গ্রন্থ, যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে ইসলামের সৌরভ্রাতৃত্ববোধ ক্রমশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকে। 

এভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণা থেকে সরে এসে ইসলাম ধর্মের প্রকৃত দর্শনকে শাসকের ইচ্ছামত পরিবর্তন ও পরিবর্তনের ফলে মুসলিম শাসকদের মধ্যে অনৈক্য এবং প্রযুক্তিগত দুর্বলতা প্রকট হয়ে ওঠে। 

এভাবে একদিকে মুসলিম শাসকদের পিছিয়ে পড়া, অপরদিকে ইউরোপীয় শাসকরা ইতালীয় নবজাগরণের হাত ধরে আধুনিক রাষ্ট্র, সমাজ ও ধর্ম দর্শনের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার গবেষণায় আত্মনিয়োগ করার ফলে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে আধুনিকতার জোয়ার শুরু হয়। এই জোয়ারে ভেসে যায় ইউরোপের মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি। ফরাসি বিপ্লব তার অন্যতম ফসল। ফরাসি বিপ্লবের মূলমন্ত্র সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার বাণী, যা সমাজকে নতুন রূপ দিয়েছিল। ফরাসি বিপ্লবের সূত্র ধরেই ইউরোপে জন্ম নেয় নতুন রাজনৈতিক দর্শন, যা একাধারে জাতীয়তাবাদ, উদারনৈতিক ধারণাকে শক্তিশালী করে তোলে। সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়া এই জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণা অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া সহ ইউরোপের সমগ্র সাম্রাজ্যকে ভেঙে ফেলে। একের পর এক জন্ম হয় জাতি রাষ্ট্রের। এটাই ছিল সময়ের দাবি, আধুনিক যুগের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

অস্ট্রিয়া সাম্রাজ্যের চ্যান্সেলর ক্লেমেন্স ভন মেটরনিক ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেও যুগের এই দাবিকে দাবিয়ে রাখতে পারেননি। জাতীয়তাবাদী, উদারনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে হাতিয়ার করে একের পর এক বিপ্লবী কর্মকান্ড ঘটে যায় ইউরোপ জুড়ে। জুলাই বিপ্লব, ফেব্রুয়ারি বিপ্লব সহ একাধিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ইউরোপে জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেয়। ইতালি, জার্মানির সহ একাধিক বলকান রাষ্ট্রের জন্ম হয় এই সূত্রেই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তা চূড়ান্ত চেহারা নেয়। সমগ্র ইউরোপ ছোট ছোট জাতিরাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে যায়, যা আজও বিদ্যমান। ফলে ধর্মকেন্দ্রিক সাম্রাজ্যের ধারণা ইউরোপ থেকে বিদায় নেয়। শুধু ইউরোপ নয়, এই অভিঘাতে মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক সাম্রাজ্যও (তুরস্ক সাম্রাজ্য) ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। ধর্ম এক হয়েও মধ্যপ্রাচ্য তাই একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে গেছে।

১৮৫৭ পরবর্তী সময়ে এই ইউরোপীয় জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণা ভারতে ইউরোপীয় ইতিহাস চর্চার হাত ধরে ঢুকে যায় ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত জনগণের চেতনায়। সুতরাং ভারতে ইসলামী সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ছিল যুগের চাহিদা। এবং তা অবশ্যম্ভাবী। ইংরেজরা এদেশে না এলেও এ ঘটনাকে রোখা যেত না। বর্তমান পৃথিবী জুড়ে তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত রয়েছে ভুরি ভুরি। 

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ ...

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে, ...

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা? বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

ইতিহাস কী?

ইতিহাস কী? ইতিহাস হচ্ছে মানুষের তৃতীয় নয়ন। এই তৃতীয় নয়ন মানুষকে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বিষয়ে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই পর্যবেক্ষণই জগত এবং জীবনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। একজন মানুষ, জগত ও জীবন সম্পর্কে  প্রকৃত সত্য যতটা উপলব্ধি করতে পারেন, তিনি ততটাই শিক্ষিত বলে বিবেচিত হন। তাই ইতিহাস জানা এবং বোঝা ছাড়া একজন মানুষ পূর্ণাঙ্গ শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারেন না। ইতিহাস কেন তৃতীয় নয়ন? একটা উদাহরণ নেওয়া যাক। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা ধরুন। আমরা এই ঘটনাকে যখন প্রত্যক্ষ করি, তখন দেখি দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংস হয়ে উঠছে। আমরা খুব সহজেই এই ঘটনাকে ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দিই এবং ধর্মকে এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করি। ধর্মীয় বিদ্বেষের ফল হিসেবে সেগুলোকে ব্যাখ্যা করি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ইতিহাসকে কার্যকারণ সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এই দাঙ্গাগুলোর পিছনে ধর্মের চেয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য খুবই শক্তিশালী ভূমিকায় রয়েছে। অর্থাৎ মূলত, ...

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষার প্রভাব দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে