সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমি কি সত্যিই সাম্প্রদায়িক?

"আপনারা এই কিছু মুসলিম বুদ্ধিজীবী এত সাম্প্রদায়িক আর নির্দয় কেন !  যে মানুষগুলো জান, মান ধর্ম রাখতে পালিয়ে এসে ছিন্নভিন্ন উদ্বাস্তু জীবন পালন করলেন তাঁদের প্রতি কোনও মায়া নেই ?  সব কিছু ছেড়ে মানুষ কখন উদ্বাস্ত হয় সেটা উপলব্ধি করেন না ! এই নিম্ন, নির্দয় উপলব্ধি নিয়ে আপনি কি সাহিত্য করবেন যদি মানুষের কষ্ট না বুঝলেন।  জন্মসূত্রে মুসলমান বলে আপনাদের তো কেউ দেশ ভাগের জন্য দায়ি করেন নি, তা যিনি করবেন তিনিও সাম্প্রদায়িক। যে মুসলিম লিগ নেতারা আলাদা জাতি এ বিধায় পাকিস্তান সৃষ্ট করেছিনেন এবং হিন্দু বলেই মেরে, ভয় দেখিয়ে, দখলদারি করে তাড়িয়েছিলেন তাঁদের দায়ি করা হচ্ছে। ও বিসর্জনে আপনারা কাঁধ দিতে হাজির হচ্ছেন কেন ? আর ওই একই কারণে অভিন্ন বাংলা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। খ্যাদানি খেয়ে এসে এখানে সর্বস্ব দখল করা কিছু বাঙাল কমিউনিস্ট আর সেকুলার অভিনেতা গোঁড়া মুসলমান ছাড়া অমন অন্যায় কথা কেউ বলেন না।" ---- গৌতম রায়।
গৌতম বাবুর মন্তব্য এই👇লিঙ্কে : 
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=3462640180524283&id=100003350041426

সাথি গৌতম বাবু,
আপনার মন্তব্য পড়ে রাগবো না হাসবো বুঝতে পারছি না। ..... ঠিক আছে, বুঝতে পাচ্ছি না যখন, তখন ও দুটোই মাথা থেকে সরিয়ে দিলাম। আসুন, মাথা ঠান্ডা করে আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন করি। আপনার কাছে উত্তর থাকলে অবশ্যই আপনিও মাথা ঠান্ডা করে আমাকে তা জানাবেন।

১) আপনি আমাকে সাম্প্রদায়িক বলেছেন। কেন? আমি যা বলেছি এবং নকুল বাবু যা ব্যাখ্যা করেছেন তা তো যথা ক্রমে সত্য এবং ইতিহাস। সত্য তুলে ধরাকে কীভাবে, কোন যুক্তিতে সাম্প্রদায়িকতা বলে, একটু ব্যাখ্যা করে জানাবেন?

২) আপনি কি জানেন না, এই বিষয়টি নিয়ে এদেশের একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল  লাগাতার অপপ্রচার করে চলেছে। আমি-আপনি যদি তাদের এই মিথ্যা প্রচারকে তথ্য ও যুক্তি দিয়ে মিথ্যা বলে প্রমাণ না করি, তাহলে তো তা সাধারণ মানুষের কাছে সত্য বলেই বিবেচিত হবে। আপনি যদি সেটাই চান, তাহলে কি আপনি সাম্প্রদায়িকতা দোষে দুষ্ট বলে প্রমাণিত হয় না? আপনি যদি মুখ বুজিয়ে থাকেন সাম্প্রদায়িকতার প্রচার চালাচ্ছে যারা তাদের বিরুদ্ধে, তাহলে কি পরোক্ষে সাম্প্রদায়িকতাকে আপনিও সমর্থন করছেন, একথা বোঝায় না? আপনি মানেন আর না মানেন, সেটাও এক ধরণের সাম্প্রদায়িকতা। সুপ্ত সাম্প্রদায়িকতা।

২) এই সাম্প্রদায়িকতাকে আপনি রুখবেন কী করে, যদি সত্য ইতিহাস বলতে গেলেই আপনি কাউকে সাম্প্রদায়িক বলে অভিযুক্ত করেন। যারা সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়, তারা সাম্প্রদায়িক। সাম্প্রদায়িকতা ছাড়ানোর জন্য মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করে যারা, তারাও সাম্প্রদায়িক। কিন্তু আপনার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, যারা এই সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে এবং বিরোধিতার স্বপক্ষে যুক্তি ও তথ্য তুলে ধরে তাদেরকেও আপনি সাম্প্রদায়িক বলছেন। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব হাস্যকর লাগছে। আপনার কাছে লাগছে না?

৩) আচ্ছা আপনি কি নিজেকে অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করেন? প্রসঙ্গত বলে রাখি আমি কিন্তু আপাদমস্তক একজন অসম্প্রদায়িক মানুষ। তবে অসাম্প্রদায়িক হতে গেলে যে সত্য গোপন করে যেতে হয় এ শিক্ষাটা আমার মধ্যে নেই। আমি সেটা মানিও না। দুঃখিত। সত্যকে গোপন করা বা চেপে যাওয়া যদি অসাম্প্রদায়িকতার কোনো শর্ত হয় তাহলে তা আমি মানি না। এটা আপনাকে গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি। জগতের কোনো শিক্ষিত মানুষও তা মানবেন না। আপনি কীভাবে মানেন জানি না!

৪) আপনার মন্তব্য পড়ে উল্টে আমার মনে হচ্ছে আপনি বোধ হয় সাম্প্রদায়িক। যেটা আপনি গোপন রাখার চেষ্টা করেন। হতে পারে আমার ভাবনা ভুল, কিন্তু আপনার মন্তব্য এবং তা প্রকাশের ভঙ্গি তারই প্রমাণ দিচ্ছে। আপনি যদি অসাম্প্রদায়িক হন তাহলে আপনি আমাকে বারবার 'মুসলিম বুদ্ধিজীবী' বলেন কেন? আমি কি আপনাকে 'হিন্দু বুদ্ধিজীবী' বলি? আমি বলি না কিন্তু আপনি বলেন। কোন যুক্তিতে বলেন? মনের অন্দরের কোন ভাবনা থেকে আপনার এই বিশেষণ ব্যবহার? জানাবেন আশা করি।

আসলে সাম্প্রদায়িকতা আপনার মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় আছে অথবা প্রকটভাবেই আছে, ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করে রেখেছেন আপনার ভিতরের গেঁড়ে বসে থাকা সাম্প্রদায়িক চেতনাকে। এটা আমার ধারণা। সত্যের মুখোমুখি হলেই সেই চেতনা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে এবং তা আছড়ে পড়ে আমাদের উপর, যারা প্রকৃতপক্ষে অসাম্প্রদায়িক এবং সত্যকে সত্য বলতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে না। একই কারণে আপনি কমিউনিস্টদেরও সহ্য করতে পারেন না।

৫) আপনি আমাকে নির্দয় বলেছেন? ভিটেমাটি ছেড়ে আসা উদ্বাস্তুদের প্রতি আমার কোন মায়া নেই বলেছেন। আমার কোন কথা থেকে আপনি এটা উপলব্ধি করলেন?  অথবা নকুল বাবুর কোন কথা থেকে আপনার তা মনে হল? আপনি কি জানেন নকুল বাবুরাও  আসলে উদ্বাস্তু হয়ে এখানে এসেছেন? আপনি কি জানেন, টানা দশ বছর আমি আমার এলাকার  উদ্বাস্তু মানুষদের  ভোটার লিস্টে নাম তোলা,  রেশন কার্ড করে দেয়া, তাদের বাচ্চাদের জন্ম সার্টিফিকেট  তৈরি করতে সাহায্য করা ইত্যাদি কাজ করেছি। জানি আপনার কাছে এর কোন উত্তর নেই।

জানি এ উত্তরও আপনার কাছে নেই যে, ঠিক একই রকম পরিস্থিতিতে পড়ে এপার থেকে অসংখ্য মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে ওপারে (বাংলাদেশ) গিয়ে একই রকম সংকটের মধ্যে পড়েছিল। তারাও তো উদ্বাস্তু। তাদের নিয়ে কখনো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আপনার কোনও লেখায়? বলতে পারবেন এপারের কতজন লেখক এই উদ্বাস্তুদের নিয়ে কলম ধরেছেন?

অথচ বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অসংখ্য উদ্বাস্তুদের দুঃখ দুর্দশার কথা বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী তাদের কবিতা গল্প সিনেমা উপন্যাসে নিঃসংকোচে তুলে ধরেছেন। আপনি কি পেরেছেন এ ধরনের কোন কাজ করতে? পারেননি। সৌমিত্র দস্তিদার ছাড়া কেউ এ ধরনের বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো কাজ করেছেন বলে আমার অন্তত জানা নেই। বলুনতো কেন আপনারা স্বাধীনতার এত বছর পরও সেই ইতিহাস লিখলেন না। কোন অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য আপনি বা আপনার মত অসংখ্য বুদ্ধিজীবী একাজ করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। আপনাদেরই দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণেই বিজেপির অসত্য প্রচার এতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বাংলায় শক্ত মাটি পেয়েছে। তাই বিজেপির উত্থানে আপনাদেরও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে। অস্বীকার করতে পারেন? পারেন, অনৈতিহাসিক ভাবে পারেন। কিন্তু জেনে রাখুন, ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।

গৌতম বাবুর মন্তব্য এই👇লিঙ্কে : 
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=3462640180524283&id=100003350041426
অথবা

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন