দেশে তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বেশি। এরজন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাই সবচেয়ে বেশী দায়ী। আর এগুলোকে চালায় সরকার তথা রাজনৈতিক দলগুলো। তারা চায় বলেই স্কুলগুলোতে এসব চলে।
এরা চায় শুধুমাত্র তাদের প্রশাসন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী তৈরি হোক, এই সমস্ত শিক্ষাকেন্দ্রগুলো থেকে। প্রকৃত শিক্ষিত মানুষকে এরা ভয় পায়। তাই তারা চায় না এখন থেকে ধর্মীয় সংস্কারমুক্ত নাগরিক সমাজ জন্ম নিক। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার সঙ্গে ধর্মকে সুক্ষভাবে যুক্ত রেখেছেন। ইংরেজরা যেমন শুধুমাত্র কেরানি তৈরির জন্য ইংরেজি শিক্ষা (পাশ্চাত্য শিক্ষা) চালু করেছিল, এটা তেমনি স্বদেশি শাসকদের একটা স্বদেশি সংস্করনমাত্র।
আমরা যাঁরা আজকের শিক্ষক, তাঁরাও তো এই শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়েই শিক্ষা পেয়েছি, যেখানে ধর্মচর্চাকেও শিক্ষার একটি অন্যতম অঙ্গ হিসাবে দেখানো ও শেখানও হয়েছে। তাই আমরাও বিশ্বাস করি, ভগবান বা আল্লা না চাইলে আপনার আমার কোনো উন্নতিই সম্ভব নয়। তাই আমাদের অনেকেই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সাথে সাথে ধর্মশিক্ষার মোড়ক থেকে বেরোতে পারিনা। তাই নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর নির্দিষ্ট কিছু নোট মুখস্ত করে পরীক্ষায় পাশ করেই আমরা আমাদের পড়াশোনার কাজ শেষ করে ফেলি আর ভগবান বা আল্লাকে সব কৃতিত্ব দিয়ে নিজেকে কৃতার্থ করে স্বস্তির ঢেকুর তুলি। জগৎকে জানা এবং বোঝার জন্য পড়াশোনার মধ্যে নিজেকে সারাজীবন নিযুক্ত রাখতে হয়, আর তবেই শিক্ষার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় ( শিক্ষা শেষ করা যায় না। কারণ, এটা শুধু চলমান নয়, আবহমানকাল ধরে চলমান একটা প্রক্রিয়া) একথা আমরা কজয় মানি? অথচ এটাই শিক্ষার মূল কথা। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা শিক্ষিত হওয়ার একটা ধাপমাত্র। আর আমরা এটাকেই এক ও একমাত্র এবং সর্বশেষ ধাপ বলেই মেনে চলি।
এই ভাবনা থেকে যাঁরা বেরতে পারেন না। তাঁরা শিক্ষার সঙ্গে ধর্মের সম্পর্কহীনতা মানতে পারেন না। নানারকম অযৌক্তিক যুক্তিকে সামনে এনে নিজেদের সমর্থনকে জাস্টিফাই করা ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও থাকে না। আর এরাই যখন শিক্ষক হবেন, তাঁরা সরস্বতী পূজা করা কিংবা শিক্ষাঙ্গনে (মাদ্রাসা সহ) ধর্মশিক্ষা প্রদানকে অস্বীকার করতে পারবেন না।
আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই; ইউরোপ-আমেরিকা কয়েক শতাব্দী আগে সেটা বুঝেছে। এবং এই সম্পর্ক তারা ছিন্ন করেছে। তাই তারা এখন পৃথিবীর দাদা হয়ে উঠেছে। কমিউনিস্ট চিনও আমাদের দুবছর পরে স্বাধীনতা পেয়েও এভাবেই পৃথিবীর দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। আর আমরা অন্ধকারে ডুবে আছি।
ক্ষমা করবেন, আপনি আমাদের মত অন্ধ মৌমাছির চাকে ঢিল মেরেছেন। এবার কামড় খাওয়ার জন্য তৈরি হন।
প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন