সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

“আমি ঈশ্বরের বরপুত্র” - নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। আপনি কি দৈব রাজতন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন?

“আমি ঈশ্বরের বরপুত্র” - নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। আপনি কি দৈব রাজতন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন?

পাঠকের মতামত ও তার উত্তর

১)

একটা কথা জানতে চাইছি আশা করি উত্তর দেবেন - বহুত্ববাদ/ দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যে এত কাঁদেন যেখানে মুসলমান সংখ্যবহুল হয়ে যায় সেখানে বহুতেবাদ থাকে নাহ রাষ্ট্রের প্রকৃতি ধর্ম নিরপেক্ষ থাকে ???

আছে তো আপনাদের ৫৭ টা দেশ কতগুলোয় বহুত্ববাদ অথবা রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধর্ম নিরপেক্ষ বলবেন একটু ?

ভারতবর্ষ হিন্দু মেজরিটি বলেই আজ বহুত্ববাদ ও আছে ধর্ম নিরপেক্ষতাও আছে - যেটায় আপনাদের কোনো contribution নেই সেটা নিয়ে অভাব অভিযোগ করা বন্ধ করুন
----------

Gorrila Nripen সুপ্রিয় সাথি, বিনয়ের সঙ্গে আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, ৫৭ দেশ আমাদের মানে কী? আমার দেশ তো একটাই। আর সেটা ভারতবর্ষ। এখানে জন্মেছি, এখানেই আছি। আর আজীবন এখানেই থাকবো। কী? ভুল বললাম?

আপনার বোধ হয় জানা নেই, হিন্দু কাদের বলে। হিন্দু কোন ধর্ম নয়। হিন্দু একটি জনগোষ্ঠীর নাম। সেখানে বহু ধর্মের (সনাতন, ইসলাম, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিষ্টান ইত্যাদি) মানুষ আছেন। তারা সবাই হিন্দু।

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা জানেন এবং মানেন। আপনি তাঁর ভক্ত হায়েও জানেন না? অবাক হলাম সাথি। অনুগ্রহ করে, জ্ঞান দিচ্ছি ভাববেন না, আরও একটু পড়াশোনা করা দরকার মনে করছি। রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে যদি শিখতে চান, তারা আপনাকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করবে। প্রায় প্রত্যেক দলই এটা করে। তাই বিনীত অনুরোধ রাখছি, একটু পড়াশোনা ও একটু যুক্তিবাদী মনোভাব নিয়ে বিষয়গুলো ভাবার চেষ্টা করুন, দেখবেন আপনি নিজে নিজেই আসল সত্য জেনে যাবেন।

আর রাজতন্ত্র, সে যে ধর্মের দ্বারাই আসুক না কেন, তার দ্বারা সাধারণ মানুষের কোন প্রাপ্তি হয় না। সে আপনার ধর্মের হোক, আর আমার ধর্মের দ্বারা হোক। কোন রাজতন্ত্রকেই কোন শিক্ষিত মানুষ মেনে নিতে পারবেন না। যারা রাজতন্ত্র দেখেছেন অথবা সে সম্পর্কে পড়াশোনা করেছে, তারা সবাই জানে।

আশা করি কিছুটা হলেও বুঝেছেন। ভালো থাকুন, সঙ্গে থাকুন আর সময় হলে, রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে নয়, নিজে নিজে পড়াশোনা করুন। অনেক কিছুই জেনে যাবেন। হয়তো বা আমার থেকেও বেশি। শুভকামনা রইল।

Gorrila Nripen আর হ্যাঁ, আমাদের কনট্রিবিউশন নেই — সেটা আবার কি? বুঝলাম না!

Gorrila Nripen ‘আমাদের দেশ’ আপনি বললেও আমি মানি না যে দুবাই আমার দেশ। দেশ ও দেশের নাগরিক কাদের বলে, কোন কোন শর্তে একজন মানুষ একটা দেশের নাগরিক হতে পারে, তা আপনি না জানলেও, আমি জানি। আপনি সনাতন ধর্মাবলম্বী। তাই বলে কি নেপালে ইচ্ছা করলেই আপনি নাগরিকত্ব পাবেন? পাবেন না। তেমনি আমিও মুসলিম হলেও কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ আমাকে নাগরিকত্ব দেবে না। আমি যেহেতু নির্বোধ নই, তাই আমি সেটা জানি। আপনি কেন জানেন না, সেটা আমি জানি না। তাই, ওই দেশগুলোকে আমি ‘আমার দেশ’ বলি না। কোন পিরিতও আমার নেই ওই দেশগুলোর সঙ্গে। আপনার কষ্ট কল্পনা করার অভ্যাস আছে বলে আপনি ওভাবে ভাবেন। আমি ভাবি না।

এবার আসল কথায় আসা যাক, কোন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশ যদি ধর্ম নিরপেক্ষ না হয়ে থাকে, তবে দুবাইতে এশিয়ার সর্ব বৃহৎ মন্দির বানালেন কীভাবে?

আচ্ছা, আপনি কি জানেন, সৌদি আরবে, বাচ্চাদের স্কুলে রামায়ণ মহাভারত পড়ানো হয়? জানেন না তো? জানবেন কীভাবে? Whatsapp university থেকে যদি ডিগ্রী নেন, আপনারা কোনদিনই এসব জানা হবে না।

তাই একটু জেনে বুঝে আসার অনুরোধ করছি। তাহলে আলোচনা করে আমি আপনি দুজনেই মজা পাবো। দুজনেই একে অপরের কাছ থেকে সমৃদ্ধ হব। যদি তা না পারেন, তবে বেকার সময় নষ্ট করবেন না। প্লিজ।

Ali Hossain আশা করি আমার মতামত টা পড়বেন এবং গঠনমূলক একটা উত্তর দেবেন - আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই - সেই সিদ্ধান্তে আপনি কীকরে পৌঁছলেন সেটা বোধয় pre conceived notion থেকে যাক খোলা মনে বিভিন্ন মতামত শুনুন , এইটুকুই আশা

Gorrila Nripen আমি আপনার লেখা তো মনোযোগ দিয়েই পড়েছি। উত্তরও দিয়েছি। অনুগ্রহ করে দেখেনিন। হতে পারে তা আপনার নজরে আসে নি, বা মনের মতো হয়নি। এখন সেক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই, তাই না।

আপনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তা তো আমি বলিনি। আমি বলেছি ভক্ত। ভক্ত মানে অনুসারী। আপনি যাকে অনুসরণ করবেন, মানুষ আপনাকে তার ভক্ত বলবে। এটাই তো স্বাভাবিক। আপনি মোদীজীর ভাবনাকে সমর্থন করেছেন বলে আমি তার ভক্ত কথা বলেছি। এর সঙ্গে দলের সমর্থন অসমর্থনের বিষয়টা আসবে কেন।

আসলে, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটা আপনি করলেন, ঠিক সেই অভিযোগটাই আমি আপনার বিরুদ্ধে বোধ হয় করতে পারি। কেন জানেন? কারণ, আপনি পূর্ব অনুমানের ভিত্তিতে ধরে নিয়েছেন যে, আমি আপনাকে বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থক ভেবেছি। ভাবলে তো সরাসরি বলেই দিতাম।

হ্যাঁ, হোয়াটস অ্যাপ ইউনিভার্সিটির কথা বলেছি। তার কারণ আপনার ব্যাখ্যাটা হুবহু বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রচারকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মতো। ওগুলো আমার কাছেও আসে। আমার কিছু বন্ধু যারা ওই সব গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তারা আমাকে এসব পাঠান। তাই জানি এবং সেজন্য গ্রুপের কথা বলেছি।

তাছাড়া আপনি যেকোন রাজনৈতিক দল করতে পারেন। সেটা আপনার ব্যাক্তিগত অভিরুচির ব্যাপার। সাংবিধানিক অধিকার। আমি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কে?। সুতরাং আপনি ঢেকে রাখছেন — এভাবেই বা আমি ভাবতে যাবো কেন? সুতরাং আমি আপনার সম্পর্কে যা ভেবেছি বলে আপনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তা আপনার পূর্বানুমান মাত্র।
--------------_-------++

২)

প্রথম কথা উনি এই কথা বলেননি. দ্বিতীয়ত যদি উনি বলে থাকেন তবে ঠিকই বলেছেন, উনিই তো তিন তালাক বন্ধ করেছেন, উনিই তো 370 উঠিয়েছেন, উনার আমনেই অযোধ্যা মামলার সঠিক রায়দান হয়েছে, উনার আমলেই ভারত বিশ্বের পষ্ণম অর্থনৈতিক উন্নত দেশ হয়েছে. জ্ঞান বিতরন করুন মৌলবিদের, জ্ঞান বিতরণ করুন মাদ্রাসা গুলোতে, যাতে ছাত্ররা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের দেশের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করতে পারে

Achinta Das আপনার প্রশ্নের কি উত্তর দেই বলুন তো? অথবা কেন দেবো বলুন তো? কারণ, আপনার প্রত্যেকটা প্রশ্নই অপ্রাসঙ্গিক। আমার লেখার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। আপনি যদি আমার লেখার সমালোচনা করতেন, প্রমাণ করতেন যে আমার কথাগুলো ভুল, তাহলে তার উত্তর দেয়ার দায় আমার থাকতো।

তবু আপনার প্রশ্ন করার অধিকারকে সম্মান জানানোর দ্বায় থেকে কিছু কথা বলি।

প্রথমত, আপনি একবার বলছেন উনি বলেননি। আবার বলছেন যদি বলে থাকেন, ঠিক বলেছেন। কেমন হলো কথাটা? একবার বলছেন বলেননি। পরক্ষণেই বলছেন, ঠিক বলেছেন। কথাটা স্ববিরোধী হয়ে গেল না? অর্থাৎ আপনি ঠিকঠাক জানেনই না যে, তিনি ঠিক কী বলেছেন।

যাই হোক, ধরে নিলাম যে আপনি তর্কের খাতিরে ধরে নিয়েছেন যে উনি বলেছেন। আর সেক্ষেত্রে আপনার মত হল, তিনি ঠিক বলেছেন। তার মানে দাড়াল, আপনি স্বীকার করছেন যে উনি ঈশ্বরের বরপুত্র।

আচ্ছা এবার বলুন তো,
১) কিভাবে প্রমাণ করবেন যে, উনি সত্যিই ঈশ্বরের বরপুত্র? কোন বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে এটা প্রমাণ করা সম্ভব যে উনি ঈশ্বরের তারাই প্রেরিত। ঈশ্বরই ওনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন দেশ শাসনের?

২) তিনি ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছেন। আর এই কাজটা করেছেন বলে তার দৈব রাজতন্ত্রের শর্তে রাজা হওয়ার অধিকার বৈধতা পেয়ে গেল? যদি যায়, তবে তা কোন্ যুক্তিতে?

৩) তিনি তিন তালাক বন্ধ করেছেন? বেশ। আপাত দৃষ্টিতে এটা একটা ভালো কাজ বলেই মনে হবে। সে কথায় পরে আসছি। আচ্ছা, এর সঙ্গে রাজা হয়ে বসার অধিকার কীভাবে সম্পর্কিত? 

৪) আর আইন করলেই বুঝি অপরাধ বন্ধ হয়ে যায়? আচ্ছা আইন হওয়ার পর, একটা উদাহরণ দেন তো, তিন তালাক দেয়ার কারণে কারও বিচার হয়েছে এবং সেই বিচার পেয়েছে কোনো গরীব ঘরের সন্তান? দেখাতে পারবেন না। মেয়েদের বিচার চাওয়ার ক্ষমতা তৈরি না করে দিয়ে, তার জন্য আইন তৈরি করাটা খাবার না দিয়ে কোন ক্ষুধার্ত মানুষকে ললিপপ ধরিয়ে দেওয়ার মত হাস্যকর লাগে না আপনার কাছে?

তালাক দেয়ার ঘটনাটা ঘটে শতকরা ৯৯ শতাংশ নিম্নবিত্ত পরিবারে। এই ধরণের পরিবারের তালাকপ্রাপ্ত একজন মহিলা সে বিচারালয়ে বিচার চাইতে যাবে কীভাবে? সে আইনী লড়াই লড়ার অর্থ কোথায় পাবে? আইন বোঝার শিক্ষা তার আছে? যদি না থাকে, ওই আইন ওর কী কাজে লাগবে? এসব ছেলে ভোলানোর জন্য লজেন্স ধরিয়ে দেওয়ার মত চালাকি ছাড়া আর কিছু নয়। এসব গরিব ঘরের মেয়েরা জীবন থেকেই বুঝতে পারে, এই আইন তাদের কোন কাজেই আসবে না। তাই তারা নিরবে মেনে নেয় কিন্তু থানায় যায় না। আর একারণে আপনি কোনো দৃষ্টান্তও দেখাতে পারবেন না।

তালাক বন্ধ করতে চাইলে আগে মুসলিম মেয়েদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শুনে রাখুন, তবেই এটা বন্ধ হবে। নাহলে, ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরামকে সরদার বানিয়ে যুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো অর্থহীন ও হাস্যকর বিষয় হয়ে দাড়াবে। আদতে হয়েছেও তাই।

সরকার কি মুসলিম মেয়েদের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী করে তোলার কোন স্কিম হাতে নিয়েছে? যদি না নেয়, তো একজন গরিব মেয়ে সে কীভাবে এই আইনী সহায়তা নেবে? আপনি একজনকে নৌকা না দিয়ে, নৌকা চালানোর প্রশিক্ষণ না দিয়ে, একটা বৈঠা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, যাও নিরাপদে নদী পার হওয়ার ব্যবস্থা করে দিলাম। তুমি নিশ্চিন্তে ওপারে চলে যাও। সত্যিই তারিফ করতে হয় আপনাদের বুদ্ধিমত্তা ও যুক্তি-বোধের।

 ৫) অযোধ্যার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে? কীভাবে হয়েছে? রায়ের নিচে বিচারকদের সহি ছিল না কেন? আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসে একটা বিচার ও তার রায়ের দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবেন, যেখানে বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে রায় দান হয়েছে এবং রায়ের কপির নিচে কোন বিচারকের সাক্ষর নেই?

বিষয়টা তো এই রকম : হয় ওখানে রামের মন্দির ছিল, নয় তো ছিলনা। ছিল আবার ছিল না — এমন হয় নাকি কখনো? যদি রাম মন্দির ছিল প্রমাণ হয়, তবে নিঃশর্তে সেখানে মন্দির হবে। মসজিদের জন্য জমি দিতে যাওয়া হবে কেন?

আচ্ছা বলুন তো, মন্দির তো তৈরি হয়ে গেছে। মসজিদের জমির মিউটেশন এখনও আটকে আছে কেন?

এইবার এতগুলো প্রশ্নকে সামনে রেখে কোন যুক্তিতে বলছেন যে সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে? হ্যাঁ এটা ঘটনা যে, যা হয়েছে তা বৈধ হোক বা অবৈধ হোক ভারতীয় মুসলিম সমাজ দেশের স্বার্থে সেটা মেনে নিয়েছে। অংকের ভাষায় মেনে নেওয়াকে সমাধান বলে না, বলে গাঁয়ের জোরে গোঁজা মিল দেওয়া।

৬) শুনলে হাসি পায়, ভারত বিশ্বের পষ্ণম অর্থনৈতিক উন্নত দেশ হয়েছে। তাতে কী প্রমাণ হয়? প্রমাণ হয়, বিশ্বে বড়ো লোকের তালিকায় ভারতের কয়েকজন ধনী ব্যক্তির নাম উঠেছে। বলুন তো, তাতে আপনার কী লাভ হয়েছে? কী লাভ হয়েছে ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে কম বেশি ৭৫ % গরিব মানুষের। বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স বা জিএইচআই) বলছে, ২০২২-এ বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১০৭তম স্থানে। ২০২১ এর এই তালিকায় ভারতের স্থান ছিল ১০১।
৭) আমি মোল্লা মৌলবাদের জ্ঞান কতটা কীভাবে দেই দেখতে পান না? চোখ বন্ধ রাখেন বুঝি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে? এক কাজ করুন। একবার চোখ বুলিয়ে আসুন আমর টাইম লাইনে। দেখতে পাবেন, আমি এক চোখ দিয়ে বিশ্ব দেখিনা, যেটা আপনি করেন।

আপনি আমাকে আধুনিকতার জ্ঞান দিতে বলছেন মৌলবিদের, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের। বেশ। শুনে ভালো লাগলো। আমি সেটা করি কিনা আর একবার ঘুরে দেখুন টাইম লাইনে। এবার বলুন তো  আধুনিকতার সংজ্ঞা কী? কী তার বৈশিষ্ট্য? তা আপনার মধ্যে কতটা আছে? আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কতটা আছে?

ছেড়ে দিন। আপনাকে কষ্ট করতে হবে না। আমি বলছি, আপনি মিলিয়ে নিন। নিজেকে আধুনিক দাবি করতে গেলে :

ক) নিজেকে যুক্তিবাদী হতে হয়, বিশ্বাসী নয়? 
এবার নিজের কাছে প্রশ্ন করুন। আপনি পুজো করেন? আমাদের প্রধানমন্ত্রী পুজা করেন? যদি হ্যাঁ হয় উত্তর, তাহলে এবার নিজে দায়িত্ব নিন নিজেকে আর দেশের প্রধনমন্ত্রীরকে আধুনিক করে তোলার। ধর্মের ভিত্তি এক এবং একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে নিঃশর্ত বিশ্বাস স্থাপন করা। কারণ,  যুক্তি দিয়ে ঈশ্বরকে প্রমাণ করা যায় না।

খ) চিন্তায়-চেতনায় বিজ্ঞানমনস্কতা থাকতে হয়।

অর্থাৎ কোন কিছুকে গ্রহণ বা বর্জন করতে হলে তাকে যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, এবং তথ্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তার সত্যাসত্য যাচাই করার পর তাকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ এর মাধ্যমে সেই সত্যতাকে যাচাই (ভেরিফাই) করে নিতে হয়। তারপর উপলব্ধ সত্যকে বাস্তবে  প্রয়োগ ঘটিয়ে তবে তা সার্বিকভাবে গ্রহণ বা বর্জন করতে হয়। এই ভাবে কোনো বিষয়কে গ্রহণ বা বর্জন করার মানসিক প্রস্তুতি সম্বলিত মানসিক অবস্থাকে বিজ্ঞানমনস্কতা বলে।

তা আছে আপনার মধ্যে? থাকলে, আমার পোস্টের সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন এই অবান্তর প্রশ্নগুলো করতেন না। কারণ, আপনার বিজ্ঞানমনস্ক মানসিকতাই বলে দিত যে এখানে এই প্রশ্নগুলো করা যায় না।

গ) মানবতাবাদী চিন্তাভাবনার অধিকারী হতে হয়।

যার অর্থ হল, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ সমান। অধিকার এবং সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রে সমস্ত মানুষের জন্য এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়, প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেকের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

যে সমাজ ব্যবস্থার গড়ে উঠেছে বর্ণ ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে, নিম্ন বর্ণের একটা কিশোর উচ্চবর্ণের নির্ধারিত কলসির জল পান করার তথাকথিত অপরাধে যাকে মেরে ফেলা হয়, সেই সমাজকে আপনি বলবেন আধুনিক? যদি না বলা যায়, তাহলে এই সমাজ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের দায় কার? আমার না আপনার? আমাদের প্রধানমন্ত্রী কি এ দায় এড়িয়ে যেতে পারেন? যদি না পারেন, তাহলে মুখ চোখ বন্ধ করে থাকেন কীভাবে?

ঘ) আত্মশক্তিতে বিশ্বাসী হতে হয়।
অর্থাৎ ঈশ্বরের মুখ চেয়ে বসে না থেকে নিজের ভাগ্য নিজেকে গড়ে নিতে হয়। মানুষের ভাগ্যের উপর বা ভালো মন্দের উপর মানুষেরই দায় এবং দায়িত্ব আছে কোন ঐশ্বরিক শক্তির উপর তা নির্ভর করে না — এই বিশ্বাসে বলিয়ান হতে হয়।

আছে এই আত্মবিশ্বাস? আপনার বা আপনার সমাজের প্রত্যেক মানুষের? থাকলে অযোধ্যায় রাম মন্দির নয় মসজিদ ভেঙ্গে তৈরি হতো বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র।

সুতরাং অপরের সমাজের দিকে আমল না তুলে নিজের ও নিজের সমাজের দিকে আঙ্গুল তুলুন, তাকে আদর সত্যি কার আধুনিক করে তোলার চেষ্টা করুন। তাতেই দেশের ভালো হবে। আমি সে চেষ্টাই লাগাতার ভাবে করে যাই, আমার সমর্থ অনুযায়ী।

আধুনিকতার এই বৈশিষ্ট্যগুলির অপর ভিত্তি করে ই তৈরি হয়েছিল, আমার পোস্টে দেওয়া, ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকার সনদ বা ‘Declaration of Rights of Man and Citizen’ — 26 August 1789

চোখ কান মন খোলা রেখে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন ‘আধুনিকতা কাহারে কয়’।

আসুন আর একবার দেখে নেওয়া যাক কী বলা ছিল এই ঘোষণা পত্রে, একঝলকে :

১) মানুষ জন্মগতভাবে মুক্ত ও স্বাধীন; অর্থাৎ স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার।
২) মানুষের জন্মগত অধিকারগুলো পবিত্র ও অলংঘনীয়।
আইনের চোখে সব মানুষ সমান।
৩) রাষ্ট্রের প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হল জনগণ।
যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার অধিকারী প্রত্যেকটি মানুষ।
৫)!বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার প্রভৃতি হল মানুষের সর্বজনীন অধিকার।

ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। আর নিজেকে সত্যিকারের আধুনিক করে গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। আপনার জন্য আমার আন্তরিক শুভকামনা রইল।

--------xx---------
প্রসঙ্গ জানতে ফেসবুকে আসুন ক্লিক করুন এখানে

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে