সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্ম কখন অশান্তির কারণ হয়ে উঠেছে?

অশান্তির মূল কারণ কী ধর্ম?

When did religion become a cause of unrest?

যার জন্ম পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, সেই ধর্মই হয়ে উঠেছে পৃথিবী জুড়ে অশান্তির অন্যতম প্রধান কারণ। শুধু আজ নয়, যুগ যুগ ধরেই চলছে ধর্মের নামে এই হত্যাযজ্ঞ। এটাই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, প্রত্যেকটি ধর্মের মূল উদ্দেশ্যই হলো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে ধর্মের উৎপত্তি, সেই ধর্ম যখনই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, দলে দলে মানুষ তাকে মান্যতা দিয়েছে, জায়গা করে দিয়েছে নিজ হৃদয়ের গভীরে; তখনই ধর্মকে রাজনীতিকরা কব্জা করার চেষ্টা করেছে এবং সফলও হয়েছে। আর তখন থেকেই ধর্ম অশান্তির কারণ হয়ে উঠেছে। এভাবে বৌদ্ধ ধর্ম হীনযান ও মহাযান হয়েছে, ইসলাম ধর্ম শিয়া ও সুন্নি সহ অসংখ্য মযহাব - এ বিভক্ত হয়ে গেছে, সনাতন ধর্মে এক ব্রহ্মা ৩৩ কোটি দেবতায় বিভক্ত হয়ে গেছেন।

আমাদের দেশের সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল মতুয়া ধর্ম। যে ধর্ম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ এই ধর্মমতের উদ্ভব, তারাই রাজনৈতিকভাবে তাকে ব্যবহার করা শুরু করেছেন। এবং বর্তমানে মতুয়াদের বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এক সময় হয়তো দেখবেন এই বিভক্তি স্পষ্ট চেহারা নিয়েছে এবং গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিরোধ ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে। রাজনীতি মুক্ত রাখতে পারলেই কেবল আমার এই ভবিষ্যৎ চিন্তা মিথ্যা প্রমাণিত হতে পারে; অন্যথায় নয়।

অনেকেই হয়তো বলবেন, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে, ধর্ম যদি শান্তির কথা বলে, তবে এই ধর্মীয় কারণে কেন সংঘাত হয় এবং অসংখ্য মানুষের প্রাণ যায়?

লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, পৃথিবীর সমস্ত ধর্মেরই জন্ম হয়েছে অসংযত মানুষকে সংযত করার জন্য। অন্যান্য বহু জীবের মতো  মানুষও এক প্রকার জন্তু। তাই তার মধ্যেও রয়েছে জান্তব বৈশিষ্ট্য। আজ মানুষ জগতের অনেক রহস্যের সন্ধান করতে পেরেছে। মানুষ বুঝেছে, মানুষে মানুষের দ্বন্দ্বই মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় শত্রু। এই বোধ থেকেই জন্ম নিয়েছে মানবতাবোধ।

কিন্তু পৃথিবীতে এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষের মধ্যে এই মানবতাবোধের প্রচন্ড অভাব ছিল। তাই মানুষ অন্যান্য জন্তুর মতোই জীবন যাপন করতো। হিংসা লুটতরাজ ছিল স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সেখানে ন্যায় অন্যায় বোধ ছিল না, ছিল না সততা ও অসততার ধারণা। ফলে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব এবং সেই দ্বন্দ্বের পরিণতিতে মানুষ মানুষের উপরে যে জুলুম করতো তার চরিত্র ছিল ভয়ানক। মানুষের মধ্যে থাকা এই জন্তুজ স্বভাবকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই পৃথিবীতে ধর্মের আবির্ভাব। উন্নত চিন্তা চেতনার মানুষ যাদের মধ্যে মানবতাবোধ গভীরভাবে দাগ কেটেছিল, তারাই জন্ম দিয়েছিল ধর্মীয় চিন্তার।

আপনি যদি সর্বাধিক প্রচলিত মূল ধর্মগ্রন্থগুলো পড়েন এবং যারা এই ধর্মের প্রবর্তন করেছিলেন, তাদের জীবন যাপন প্রণালী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে দেখতে পাবেন, প্রত্যেকটা ধর্মের উদ্দেশ্য ছিল মনুষ্য সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। মানুষের মধ্যে যে জন্তু লুকিয়ে থাকে, তাকে লাগাম পরানোই এর উদ্দেশ্য। আপনি যদি মন দিয়ে এই ধর্মগ্রন্থগুলো (কোরআন, বেদ, বাইবেল, ত্রিপিটক ইত্যাদি) পড়েন, দেখবেন তাদের সকলের সুর বাঁধা আছে শান্তির তানে।

আর এ কারণেই নিতীড়িত মানুষ দলে দলে এইসব ধর্মের অনুসারী হয়েছে সারা পৃথিবীব্যাপী। কারণ, মানব মুক্তির কিংবা এই নির্যাতিত মানুষদের রক্ষা করার জন্য কোন উন্নত জীবন দর্শন বা রাষ্ট্র দর্শনের তখনও জন্ম হয়নি।

কিন্তু মানব সভ্যতার জন্য সবচেয়ে দুঃখের এবং লজ্জার বিষয় হলো, যখনই কোন ধর্ম আমজনতার মন জয় করেছে, তখনই সেই ধর্মের দখল চলে গেছে কোন না কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের (রাষ্ট্রের) হাতে। মূলত রাজনৈতিক অর্থনৈতিক আধিপত্য কায়েম করার জন্য এরা মূল ধর্মগ্রন্থগুলোকে নির্বিচারে সংস্কার করেছে এবং মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। ফলে, শান্তির ধর্ম অশান্তির কারণ হয়ে পড়েছে। এক একজন নেতা বা ধর্মগুরু নিজের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধপত্যকে নিরঙ্কুশ করার জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে ধর্মের বিকৃত দর্শনকে হাতে ধরিয়ে লড়াই লাগিয়ে দিয়েছে। ধর্ম-কেন্দ্রিক হিংসার জন্ম এখান থেকেই। মূল ধর্মগ্রন্থকে পাশ কাটিয়ে জন্ম নিয়েছে অসংখ্য শাখা প্রশাখা। ইসলাম ধর্মে তা হাদীস এবং শরীয়ত নামে পরিচিতি পেয়েছে। সনাতন ধর্মে মনুসংহিতা সহ ১০৮ টি উপনিষদ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য ঋকবেদের প্রায় ৬০০০ বছর পরে মনুসংহিতা এবং কোরআন আবির্ভাব এর প্রায় ৩০০ বছর পর হাদিস ও শরীয়ত লেখা হয়েছে। জন্ম হয়েছে একই ধর্মের অনুসারী অসংখ্য গোষ্ঠী। পৃথিবীর প্রত্যেকটা বড় বড় ধর্ম সম্প্রদায় তাই অসংখ্য গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে গেছে।

তবে, এই অশান্তির মূল কারণ কিন্তু ধর্ম নয়। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আধিপত্য কায়েম করার উদ্দশ্যেই শাসকশ্রেণি (বা ধর্মীয় নেতারা) জনগণের হৃদয় সত্তাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার ও ধরে রাখার চেষ্টা করে। এবং সেই নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘস্থায়ী করতে বা ধরে রাখতেই ধর্মকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

কারণ, ধর্মীয় বিশ্বাস সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। অলৌকিক শক্তির ওপর বিশ্বাস ও এই বিশ্বাসের ওপর ভর করে, নানা রকম আচার অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির পালন এবং তার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার কাছে আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে (এটাই সবচেয়ে সহজ মাধ্যম বলে অধিকাংশ মানুষ মনে করে এবং বিশ্বাস করে) সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে বলে তারা ভাবেন এবং বিশ্বাস করেন। এই বিশ্বাস সাধারণ মানুষকে ধার্মিক নয়, ‘ধর্ম দাস’-এ পরিণত করে। 

প্রশ্ন হতে পারে, ‘ধার্মিক’ ও ‘ধর্ম দাস’র মধ্যে পার্থক্য কোথায়? মনে রাখতে হবে, প্রায় প্রত্যেক ধর্মে বিশ্বাসের জায়গা খুবই নির্দিষ্ট করা আছে এবং  তার পরিসর অত্যন্ত ছোট। ইসলাম ধর্মের কথা যদি ধরা হয়, তবে তা হল, ‘এক ঈশ্বরে বিশ্বাস’ এবং ‘মৃত্যুর পর তোমার কৃত কর্মের হিসাব হবে’ — এটার (কেয়ামতের) প্রতি বিশ্বাস। এর বাইরে বিশ্বাসের কোন জায়গা নেই। আর যা আছে, তা হল, মানুষকে সৎ থাকা ও ভালো কাজ করার পরামর্শ। আর এটাই ইহকাল ও পরকালের সব কিছু প্রাপ্তির ও শান্তির মূল চাবিকাঠি। কোরআন শরীফের পাতায় পাতায় এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সূরা ‘আস শামস’- এর ৮, ৯ ও ১০ নং আয়াত দেখুন। সেখানে আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টির প্রতি শপথ নিয়ে জানানো হচ্ছে যে, আল্লাহ মানুষকে কী কী পরামর্শ দিচ্ছেন। সেখানে পরিষ্কারভাবে বলা হচ্ছে,

অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। সে-ই সফলকাম হয়েছে, যে নিজ আত্মাকে পবিত্র করেছে। সে-ই ব্যর্থ হয়েছে, যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে।

এখানে মুক্ত চিন্তার ও যুক্তিবাদী হওয়ার স্পষ্ট পরামর্শ রয়েছে। সমস্ত কাজ করার সময় যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্যের ভিত্তিতে বিচার বিবেচনা করার পরামর্শ রয়েছে। সামুদ জাতির উদাহরণ দিয়ে ১১ ও ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে তারা সফল ও ব্যর্থ হওয়ার এই মূল শর্ত (সৎ ও অসৎ কর্মের জ্ঞান) লঙ্ঘন করায় তারা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই উদাহরণ আসলে তথ্য ব্যবহারের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই মূল সত্য যারা মেনে জীবন যাপন করে তারাই ধার্মিক। আর যারা এটা বোঝে না, শুধুমাত্র কোনো নেতা বা ধর্ম গুরুর অঙ্গুলি হেলনে নিজেকে ধার্মিক হিসাবে গড়ে তোলে সে-ই হচ্ছে ‘ধর্ম দাস’।

একই রকমভাবে, বৌদ্ধ ধর্মের মানুষদের জন্য ত্রিপিটকের মূল বাণী ‘আর্য সত্য’ ও ‘অষ্টাঙ্গিক মার্গে’র দিকে তাকালে একই রকম বিধান আপনার নজরে আসবে।

স্বৈরাচারী শাসক চায়, প্রত্যেক মানুষ ‘ধর্মদাস’-এ পরিণত হোক। কারণ, তাহলেই তার সমর্থন ও তার ওপর নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়ে যায়। নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধিতে সহজেই এই সব মানুষদের কাজে লাগানো যায়। শাসক (কখনও কখনও ধর্মীয় নেতা) একাজ যুগ যুগ ধরে করে চলেছে। আর একারণেই ধর্ম শান্তির পরিবর্তে অশান্তির কারণ হয়ে উঠেছে।

পাঠকের মতামত দেখুন ফেসবুকে


Azim Hossain নন মুসলিম দেশগুলো কিছু বলছে না, এই ধারণা অনেকটাই ভুল। কারণ, চিন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, কিউবা সহ বহু দেশ এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। কিন্তু তেমন কিছু হচ্ছে না। কারণ, আমেরিকা ভেটো প্রয়োগ করে তা বানচাল করে দিচ্ছে।

মুসলিমদের হত্যা এদের উদ্দেশ্য — ওপরে ওপরে দেখলে সেটাই মনে হয়। কিন্তু গভীরে রয়েছে অন্য কারণ। সেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা খুব কঠিন।

আসলে ধর্ম শাসকের কাছে একটা হাতিয়ার মাত্র। তাকে শাসকরা ব্যবহার করে যার যার সুবিধা মতো। যদি তাই না হত, দীর্ঘদিন আরব দেশগুলো প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়ায়নি কেন? আজ তারা দুই রাষ্ট্রের দাবি তুলছে, আগে এটাই তারা মানেনি কেন? এখনই বা তারা বিবৃতি দিয়ে দায় সারছে কেন? আসলে এদের কেউ কেউ চায় না এই সমস্যার সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে। কারণ, উদ্যোগ নেওয়ার মতো ক্ষমতা তাদের এখনও আয়ত্ব হয়নি। আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়ার মতো সামর্থ্য অর্জন তারা এখনও কেউ করতে পারেনি। তাই বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব পালন শেষ করে।

দ্বিতীয়ত, এটাকে আপনি মুসলিম হত্যা বলছেন? কেন মুসলিমরা বেশি মরছে তাই? বেশ। তাহলে ইউক্রেনে যে যুদ্ধ হচ্ছে, সেখানে কারা কাদের হত্যা করছে? ইয়েমেনে কারা কাদের মারছে? সুদানে?

আসলে লড়াইটা হচ্ছে জমি দখলের। ধর্ম হচ্ছে একটা হাতিয়ার মাত্র। সেখানে সাধারণ মানুষকে ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেদের পক্ষে রাখার চেষ্টা হয় মাত্র। যুদ্ধে লাগানো যায়, সহজে। এছাড়া কিছুই নয়।

স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক থাকে না। পৃথিবীর সেই স্বাধীনতা আন্দোলনই সফল হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছে। ধর্ম বা সম্প্রদায়কে যারাই এই আন্দোলনকে জড়ানো হয়েছে, সেখানেই এই আন্দোলন হয় ব্যর্থ হয়েছে, নয় তো দেশ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে বিভক্ত হয়েছে, নতুবা ব্যর্থ হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে