সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আত্মীয়তার সম্পর্ক ও ভোটার লিস্টে নাম নথিভুক্তিকরণ

আত্মীয়তার সম্পর্ক ও ভোটার লিস্টে নাম নথিভুক্তিকরণ :

প্রত্যয় সরকার : রিলেটিভ বা আত্মীয় বলতে নির্বাচন কমিশন রক্তের সম্পর্কের রিলেটিভ-এর কথা বুঝিয়েছে। স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক হয় না। এক্ষেত্রে তাই স্বামী বা স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের আত্মীয় নয়।

অরুণার নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, এবং ঠাকুরদার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নেই। কিন্তু ঠাকুমার নাম আছে।
 
ঠাকুমার সঙ্গে তার বাবার রক্তের সম্পর্ক আছে। আর বাবার সঙ্গে তার নিজের রক্তের সম্পর্ক আছে। এই সূত্রে তার সঙ্গে তার ঠাকুমার রক্তের সম্পর্ক আছে। এই কারণে ঠাকুমার নাম সে ডানদিকের ঘরে আত্মীয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে।

এই ডানদিকের ঘরে অরুণার ঠাকুমার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় তুলে ধরার কথা বলা হচ্ছে। যেমন, উপরে সে নিজের সম্পূর্ণ পরিচয় তুলে ধরেছে। এই পূর্ণাঙ্গ পরিচয়ের সূত্রে অরুণার নাম ভোটার লিস্টে ওঠার ক্ষেত্রে তার ঠাকুরমা-ই তার একমাত্র ভরসা। তার ঠাকুরদার এখানে ভূমিকা নেই বললেই চলে। কারণ, ঠাকুরদার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টেই তো নেই। এই কারণে অরুণার ঠাকুরমার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় এর সঙ্গে তার ঠাকুরদার নাম আত্মীয় হিসেবে জুড়ে দিয়ে কিছুই প্রমাণ করা যাবে না। কেননা করুণার ঠাকুরমার সঙ্গে ঠাকুরদার রক্তের সম্পর্ক নেই। তাই কোনো ব্লাড রিলেটেড আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই।

কৌশল্যা দেবীর (অরুণার ঠাকুরমার) আত্মীয় তিনি, যার সঙ্গে কৌশল্যা দেবীর আত্মীয়তার অর্থাৎ রক্তের সম্পর্ক আছে। এক্ষেত্রে কৌশল্যা দেবীর আত্মীয় হল তার বাবা অথবা তার মা। তাই তাদের নাম বসাতে হবে। এক্ষেত্রে কৌশল্যা দেবীর বাবার নাম বসালে সম্পর্ক হবে পিতা (মা হলে মাতা)।

প্রশ্ন হল তাহলে অরুণা কীভাবে নাগরিকত্ব পাবেন? উত্তর হল পাবেন। এক্ষেত্রে তাকে এমন কোন কাগজ দেখাতে হবে, যার মাধ্যমে তার সঙ্গে তার বাবার (বার্থ সার্টিফিকেট ইত্যাদি) এবং বাবার সঙ্গে বাবার মায়ের (বাথ সার্টিফিকেট, রেসিডেন্সিয়াল প্রুফ ইত্যাদি) রক্তের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ অরুণার বার্থ সার্টিফিকেট তার বাবাকে চিহ্নিত করবে। আর বাবার সঙ্গে ঠাকুরমার রক্তের সম্পর্ক চিহ্নিত করবে এমন একটি কাগজ দিতে হবে। তাহলেই ঠাকুরমার সঙ্গে তার রক্তের সম্পর্ক প্রমাণ হবে এবং নাগরিকত্বের প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হবে।

এই তথ্য দিয়েছেন অরিন্দম নিয়োগী, অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, অল ইন্ডিয়া রেডিওর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে। 

অরিন্দম নিয়োগীর সাক্ষাৎকারটি দেখুন

যেহেতু ঠাকুরদা হিসেবের বাইরে (কারণ, ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম নেই), তাই নিচে ডান দিকের ঘরে ঠাকুরদার নাম উল্লেখ করে রক্তের সম্পর্ক প্রমাণ করা যাবে না। তাই এখানে ঠাকুরদার নাম উল্লেখ করা এবং সম্পর্ক উল্লেখ করার কোন যৌক্তিক প্রয়োজনীয়তা নেই।

তবে সাম্প্রতিক একটি নির্দেশ বিএলও-দের কাছে এসেছে বলে কোনো কোনো বিএলও দাবি করছেন (এবিষয়ে আপনার বিএল ও এর সঙ্গে কথা বলুন)। এই নির্দেশ সত্যি হলে অরুণার ঠাকুমার স্বামী দশরথের নাম রিলেটিভ-এর ঘরে বসতে পারে। এবং সেক্ষেত্রে কৌশলাদেবীর (অরুণার ঠাকুরমার) ভোটার লিস্টে তার স্বামী হিসেবে দশরথ বাবুর নাম আছে। সেখানে কৌশল্যা দেবীর নামের ডানদিকে সম্পর্কের ঘরে যে সম্পর্ক উল্লেখ করা হয়েছে সেটাই উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ সম্পর্কের ঘরে স্বামী থাকলে এই ফর্মে ‘স্বামী’ লিখতে হবে।

মনে রাখতে হবে, সেখানে ভুল সম্পর্ক উল্লেখ থাকলে সেই ভুলটাই দিতে হবে। না হলে ২০০২ সালের ভোটার লিস্টের সঙ্গে এই তথ্য ম্যাচ করবে না। ফলে ম্যাপিং ব্যর্থ হবে। এবং আপনাকে হেয়ারিং-এ ডাকবে নির্বাচন কমিশন।

এবার সিদ্ধান্ত আপনার?


মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ ...

ইতিহাস কী?

ইতিহাস কী? ইতিহাস হচ্ছে মানুষের তৃতীয় নয়ন। এই তৃতীয় নয়ন মানুষকে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বিষয়ে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই পর্যবেক্ষণই জগত এবং জীবনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। একজন মানুষ, জগত ও জীবন সম্পর্কে  প্রকৃত সত্য যতটা উপলব্ধি করতে পারেন, তিনি ততটাই শিক্ষিত বলে বিবেচিত হন। তাই ইতিহাস জানা এবং বোঝা ছাড়া একজন মানুষ পূর্ণাঙ্গ শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারেন না। ইতিহাস কেন তৃতীয় নয়ন? একটা উদাহরণ নেওয়া যাক। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা ধরুন। আমরা এই ঘটনাকে যখন প্রত্যক্ষ করি, তখন দেখি দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংস হয়ে উঠছে। আমরা খুব সহজেই এই ঘটনাকে ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দিই এবং ধর্মকে এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করি। ধর্মীয় বিদ্বেষের ফল হিসেবে সেগুলোকে ব্যাখ্যা করি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ইতিহাসকে কার্যকারণ সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এই দাঙ্গাগুলোর পিছনে ধর্মের চেয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য খুবই শক্তিশালী ভূমিকায় রয়েছে। অর্থাৎ মূলত, ...

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে, ...

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা? বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষার প্রভাব দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে