ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক :
ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক কী, কতটা এবং কীভাবে — এ বিষয়ে ভেবেছেন কখনো? আমরা অধিকাংশ মানুষ এর উত্তরে বলি, কখনো কেন, সবসময় ভাবছি। সারা পৃথিবী জুড়ে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ (মৌলবাদ) ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা হল, হিন্দু হিসাবে এই ‘আমি’ শুধুমাত্র ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদ’কে দেখতে পাই। আর মুসলিম হিসেবে শুধুমাত্র ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদ’কে দেখতে পাই। এই পরিস্থিতিতে ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনা ‘এই আমাদের’ আরও বেশি বেশি করে ভাবাচ্ছে। এবং আমরা তাই চাই, এর অবসান ঘটুক। আর সেকারণেই আমার করণীয় হিসেবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা পোস্ট দিয়ে ‘দিপু দাসকে পুড়িয়ে মারার’ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অথবা কেউ কেউ আফরাজুলকে সামনে এনে চুপচাপ থেকে এই ভেবে আনন্দ পাচ্ছি যে, ‘দেখ্ কেমন লাগে’।
হ্যাঁ এভাবেই ভেবেছেন এবং এখনোও ভেবে চলেছেন। এই আপনিই আবার চান সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটুক। কিন্তু মজার কথা হল, আপনি বা আমি তা পাচ্ছি না। এবার আসুন ভাবি, কেন আমরা পাচ্ছি না।
আসলে প্রকৃত ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই। ধর্ম একটা আলাদা দর্শন। যেমন রাজনীতি আরেকটি আলাদা দর্শন, যা রাষ্ট্রদর্শন নামে পরিচিত একটি বৃহৎ দর্শনের অংশ মাত্র। অর্থাৎ রাজনীতি রাষ্ট্রদর্শনের ব্যবহারিক বা প্রায়োগিক রূপ। সুতরাং ধর্মের সাথে সন্ত্রাসবাদের নয়, রাজনীতির সাথে সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক শুধু গভীর নয়, গভীরতর। এভাবে কি আপনি ভেবেছেন কখনও?
যদি বলেন হ্যাঁ ভেবেছি। তাহলে প্রশ্ন আসবে, আপনি তবে সন্ত্রাসবাদকে হিন্দু-মুসলমান বলেন কেন?
আপনি নিজেকে হিন্দু বা মুসলমান বলেন কোন্ কারণে? তার কারণ, আপনি বা আমি এ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের এক বা একাধিক সৃষ্টিকর্তাকে মানি এবং তাঁকে নিয়ে গড়ে ওঠা এক বা একাধিক দর্শনতত্ত্বকে নিজের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত বলে মনে করি। সেই দর্শনের নাম ধর্ম দর্শন। আপনার কাছে তার ব্যবহারিক রূপ হয়তো হিন্দু ধর্ম, আমার কাছে হয়তো বা ইসলাম ধর্ম।
পৃথিবীতে যত ধর্ম দর্শন আছে, তার মূলে প্রবেশ করুন, দেখতে পাবেন মানুষ ঈশ্বর নামক এক সত্তাকে খুঁজেছেন (খোঁজার কারণ এখানে আলোচ্য নয়) এবং একসময়ের পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এবং এই খোঁজার উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। মানুষে মানুষে সম্পদের ভাগাভাগি নিয়ে খুনো-খুনি বন্ধ করা। এক কথায় একটি সাম্যবাদী সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে ঈশ্বরের সৃষ্টি হিসেবে সব মানুষই সমান হিসাবে বিবেচিত হবে। এভাবেই ভেবেছেন, কারণ, আপনি আপনার সব সন্তানকে যেমন সুখী এবং সফল দেখতে চান, সেভাবেই, ঈশ্বরের সৃষ্ট সমস্ত জীব সুখী এবং শান্তিতে থাকবেন এটাই তার স্বাভাবিক ‘চাওয়া’ হওয়া যুক্তিসংগত। এখন প্রশ্ন হল এই সত্য কি আপনি মানেন? যদি মানেন, তবে আপনি ধার্মিক। যদি না মানেন, আপনি ধার্মিক নন। যদি না মানেন, অথচ ধর্মপালন করছেন, তাহলে আপনি আসলে একজন ধুরন্ধর রাজনীতিক অথবা ধর্ম ব্যবসায়ী, যিনি ধর্মকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে এই পৃথিবীতে আপনার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন একজন রাষ্ট্রনেতা কিংবা সমাজপতি হিসাবে। উদ্দেশ্য, পৃথিবীর সম্পদের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা।
আসলে পৃথিবীতে সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করাই হচ্ছে রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। ধর্ম এ কাজ করে না। প্রকৃত ধর্ম এ কাজ করতে বলে না। সমস্ত ধর্মের প্রথম ও প্রধান ধর্মগুরু একথা বারবার তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। যীশু থেকে হযরত মুহাম্মদ, গৌতম বুদ্ধ থেকে স্বামী বিবেকানন্দ, যেখানে চোখ রাখবেন, দেখবেন তাদের ‘পাখির চোখ’ ছিল মানব সমাজকে সুখ এবং শান্তিতে থাকতে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা।
কিন্তু মুশকিল হলো, এই ধর্ম দর্শন জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে যুগ যুগ ধরে রাজনীতকরা হাইজ্যাক করেছেন এবং তাকে বিকৃত করে ফেলেছেন। আর এ কাজ তারা জেনে বুঝেই করেছেন, সম্পদের উপর একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার জন্য। এবং এ কারণেই জন্ম দেওয়া হয়েছে (মূল ধর্মগ্রন্থকে এড়িয়ে, কখনো বা তাকে সংযোজন ও পরিমার্জন করে) একের পর এক ধর্ম শাস্ত্রের। দেওয়া হয়েছে এমন একটা চেহারা, যেখানে সম্পদের উপর বিশেষ শ্রেণির নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে সুবিধা হয়। এভাবেই জন্ম নিয়েছে স্ববিরোধী কথায় ভরা হাজারো ধর্মশাস্ত্রের। মনে রাখতে হবে, ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মশাস্ত্র দুটো আলাদা জিনিস। ধর্মগ্রন্থে মূল কথাগুলো সংক্ষেপে বলা থাকে। আর ধর্মশাস্ত্রে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা থাকে। এই ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই ধর্ম রাজনীতিকদের কব্জায় চলে গেছে।
আজ আমরা যে ধর্ম পালন করি, তা হিন্দু বা ইসলাম যাই হোক না কেন, তা আসলে রাজনৈতিক ধর্ম, আধ্যাত্বিক ধর্ম নয়। কারণ, এই ধর্মের বয়ান তৈরি করেছেন রাষ্ট্রনেতারা তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা ধর্মতাত্ত্বিকদের মাধ্যমে। এবং এ কারণেই মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ইসলামিক আইন (ধর্মশাস্ত্র) ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয়েছে। আবার হিন্দু ধর্মকে কেন্দ্র করে এভাবেই গড়ে উঠেছে প্রায় ১৮ টি পুরাণ সহ অসংখ্য ধর্ম শাস্ত্রের। ইসলাম ধর্মকে কেন্দ্র করেও এভাবে রচিত হয়েছে চারটি ‘সহি’ হাদিস সহ অসংখ্য হাদিস গ্রন্থ এবং শরীয়তী গ্রন্থ।
এভাবে যদি আপনি ভাবতে পারেন, তাহলে আপনার চিন্তায় এটা পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, মৌলবাদ বা সন্ত্রাসবাদ কোন ধর্মীয় মতবাদ নয়, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক মতবাদ।
কিন্তু আমরা কি এভাবে ভাবি? এক কথায় এর উত্তর হল, না। যদি ভাবতাম, তাহলে বাংলাদেশের মৌলবাদ আর ভারতের মৌলবাদ আপনার কাছে মুসলিম বা হিন্দু মৌলবাদ হিসেবে বিবেচিত হতো না। বিবেচিত হতো শুধুই ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে। যে সন্ত্রাসবাদের উদ্দেশ্য ধর্মকে ব্যবহার করে আসলে একটি দেশের সম্পত্তির উপর বিশেষ শ্রেণির নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা। এই কাজ কেউ গণতন্ত্রের নাম করে করেন, কেউ ধর্মদর্শনের নাম করে করেন।
এখন আপনি বলতে পারেন, ধর্মকে ব্যবহার করে যদি কোন মৌলবাদ গড়ে ওঠে, তাহলে তাকে ধর্মকেন্দ্রিক মৌলবাদ বলবো না কেন? ইসলামী মৌলবাদ, হিন্দু মৌলবাদ একথা ব্যবহার করা কেন অযৌক্তিক?
প্রথম কারণ হলো, ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা বিষয়। এটা যদি আপনি আলাদা করতে না পারেন, তাহলে রাজনীতি ধর্মব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে বাধ্য। ধর্ম দর্শনের মূল ভিত্তি হল বিশ্বাস। তাই এই দর্শন দ্বারা পরিচালিত সংগঠনের যারা নিয়ন্ত্রক, তাদের কাছে আধুনিক যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতা এবং মানুষকেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার যে ‘আধুনিক রাষ্ট্র দর্শন’ যার মূল কথা মানবতাবাদ, তার প্রয়োগ ও প্রসার রাষ্ট্রীয় জীবন ও নাগরিক জীবনের উপর পড়বে না। ধর্ম দর্শনের নাম করে তারা অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও অমানবিক মূল্যবোধকে প্রশ্রয় দিয়ে আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি, এক কথায় আমাদের জীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলবে। যার পরিণতি হবে ভয়াবহ, যার বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি ভারত এবং বাংলাদেশ সহ প্রায় সমগ্র উপমহাদেশে এবং মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন অনুন্নত দেশগুলোতে।
দ্বিতীয়ত কারণ হলো, রাজনীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ, যারা সংখ্যায় সিংহভাগ, নিদারুণভাবে শুধু অসচেতন নয়, রাজনীতি যে দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে কতটা গভীরভাবে সম্পর্কিত, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন। কিন্তু ধর্মের প্রভাব ঠিক এর উল্টো। সাধারণ খেটে খাওয়া নিরক্ষর বা লেখাপড়া জানা মধ্যবিত্ত মানুষ, যার সিংহভাগ বিশ্বাস করেন, ঈশ্বর আছেন এবং ধর্ম কেন্দ্রিক সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই একমাত্র তার ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক। তাই এই ঈশ্বরই পারেন একমাত্র তার ভাগ্যের পরিবর্তন করতে। এখানে যে রাজনৈতিকদের ভূমিকা ১০০ শতাংশ, সে সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ অথবা অসচেতন। ধর্ম তাই তাদের কাছে বেঁচে থাকার, সুখী থাকার প্রধান হাতিয়ার; প্রধান অবলম্বন।
এখন সন্ত্রাসবাদের নাম করে যদি আপনি হিন্দু বা ইসলাম ধর্মকে পাশাপাশি রেখে বিশ্লেষণ করেন, আপনি একজন তাত্ত্বিক মানুষ হিসেবে হয়তো এই বিশ্লেষণ বুঝতে পারবেন এবং দুটোকে আলাদা করেই বিচার করবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের সেই ক্ষমতা নেই। কারণ, এটা বুঝতে গেলে যে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী চিন্তা চেতনার অধিকারী হতে হয়, তা তাদের মধ্যে প্রবেশ করেনি আধুনিক যুক্তিবাদী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ না ঘটায়। তাই তারা এদুটোকে আলাদা করে ভাবতে পারবেন না। হিন্দু মৌলবাদ বললেই, প্রত্যেক সরলমনা হিন্দু ভাববেন হিন্দু ধর্মকে মৌলবাদী বা সন্ত্রাসবাদী বলা হচ্ছে। একই রকম ভাবে মুসলিম মৌলবাদ বললে প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম ঠিক একই রকমভাবেই ভুল বুঝবেন। এটাকে ধর্মের উপর আঘাত ভাববেন, এবং এই সূত্রে ধর্মরক্ষার জন্য জীবন দিতে পিছপা হবেন না। পিছপ হবেন না ধর্মরক্ষার স্বার্থে অন্যের ধর্মকে অবমাননা করতে, কিংবা ধর্মের অবমাননার অজুহাতে ভিন্ন ধর্মের একজনকে মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করতে।
কেন একজন মানুষের এমন কাজ করেন? আমরা কখনো ভেবে দেখেছি। না, ভেবে দেখিনি। ধর্মকেন্দ্রিক রাষ্ট্রদর্শনের সমার্থক যারা তারা এই ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোকে মগজ ধোলাই করে এই কাজে নিযুক্ত করে। ধর্ম এবং রাজনীতিকে যারা পেশা বা ব্যবসা হিসেবে দেখেন, তারা জেনে বুঝেই সাধারণ মানুষের ধর্মের প্রতি যে আস্থা, তাকে ব্যবহার করেন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থে।
এই অন্ধকার ভাবনা থেকে যদি সাধারণ মানুষকে বের করে আনতে না পারেন, আপনার এই মহৎ উদ্দেশ্য কখনোই সফল হবে না। এবং যদি তা করতে চান তাহলে রাজনীতি এবং ধর্মকে আলাদা করে দেখানোটা অত্যন্ত জরুরি। এটা যে প্রকৃতপক্ষেই আলাদা সেটা প্রমাণ করাই আপনার প্রধান কাজ হওয়া উচিত। ইসলামি মৌলবাদ বা সন্ত্রাসবাদ, হিন্দু মৌলবাদ বা সন্ত্রাসবাদ বললে এই সিংহভাগ মানুষের ভুল আপনি ভাঙাতে পারবেন না। এই দুটো যে আলাদা বিষয়, তা তারা নিজে থেকে কখনোই বুঝতে পারবেন না। আরও পরিষ্কার করে বললে দাঁড়াবে, সন্ত্রাসবাদকে যারা আশ্রয় করে রাজনৈতিক স্বার্থে, গোষ্ঠী বা ব্যক্তি স্বার্থে, তারা তাদের বুঝতে দেবেন না।
আসলে আপনিও বোঝা বোধ হয় খেয়াল করেননি, অজ্ঞতা থেকে জন্ম নেয় ভয়, আর ভয় থেকে জন্ম নেয় ভগবান বা ঈশ্বর ভাবনার। যে শব্দগুলোকে ভর করে সাধারণ মানুষ এই ভয় থেকে মুক্তি পেতে চান, তার নাম ঈশ্বর, ভগবান, আল্লাহ ইত্যাদি। আর এই ঈশ্বরকে পেয়ে, জীবনকে সুরক্ষিত করতে, যে শব্দের কোন বিকল্প নেই, তার নাম ‘ধর্ম’। আর এই ধর্মের সঙ্গে যদি আপনি সন্ত্রাসবাদ শব্দটি জুড়ে দেন আর বোঝাতে চান তা আপনাকে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, এই মানুষদের কাছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। এবং এই ভীত মানুষদের মগজধোলাই করে রাজনীতিকদের বড়ে হিসাবে কাজ করানো থেকে দূরে রাখতে পারবেন না। এরা দুবার না ভেবেই ধর্মরক্ষার নাম করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের আশা নিয়ে আফরাজুল বা দিপু দাসকে নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে, পুড়িয়ে মেরে ফেলবে এবং আনন্দে উল্লাস করবে।
তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার প্রতিবাদ যদি করতেই হয় তাহলে সন্ত্রাসবাদ বা মৌলবাদের সামনে থেকে ধর্মীয় ট্যাগ মুছে ফেলুন। যদি তা না করেন, তাহলে আপনিও পরোক্ষভাবে কোন না কোন মৌলবাদ বা সন্ত্রাসবাদের পরোক্ষ ইন্ধনকারী হিসেবে বিবেচিত হবেন। একজন হিন্দু হিসেবে আপনি শুধুমাত্র মুসলিম মৌলবাদীদের দেখতে পাবেন, অথবা মুসলিম হিসেবে হিন্দু মৌলবাদকে দেখবেন। আর যদি আপনার চেতনার মান এই পর্যায়ের হয়, তাহলে আফ্রাজুল এর হত্যার সময় আপনি আনন্দ পাবেন এবং দিপু দাসের হত্যার সময়ে আপনার চোখ জলে ভরে উঠবে। একই রকমভাবে একজন মুসলিম হিসাবে, ঠিক এর উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে আপনার শরীরে এবং আপনার মনে। আপনি পালাক্রমে কোন না কোন সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীর কবলে পড়ে ধন অথবা প্রাণ হারাতে থাকবেন।
------------xx-----------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন