সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রসঙ্গ : প্রকৃত ইসলাম ও মৌলবাদ

প্রসঙ্গ : প্রকৃত ইসলাম ও মৌলবাদ, কুমিল্লার দাঙ্গা ২০২১ - আলী হোসেন। 

বাংলাদেশ ও ভারত দুটো প্রতিবেশী দেশ। দুই দেশের সংখ্যাগুরু মৌলবাদীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য শুধু ধর্ম-দর্শনে। একদল নিজেদেরকে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বলে দাবি করে এবং অন্যটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলে। দুটো দলই মূলত তাদের ধর্ম নিয়ে যথাক্রমে ব্যবসা ও রাজনীতি করছে। আর এর কারণে মরতে হয়, ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়, উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের।

এরা ধর্মের কথা বলে মানুষকে উত্তেজিত করে। কিন্তু নিজের ধর্মের মানুষ, যারা অন্য দেশে সংখ্যালঘু, তাদের কথা মোটেই ভাবে না। উভয় সম্প্রদায়ই বিপরীত সম্প্রদায়ের ধর্ম বিষয়ে বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেয় এবং উত্তেজনা ছড়ায়। নিজ ধর্মের প্রতি প্রেম সধর্মীয়দের জন্য দরদ দেখাতে গিয়ে যে পরোক্ষভাবে নিজের ধর্মকে অসম্মান ও  সধর্মীয়দের বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়, তা এই সব ধর্মান্ধ মানুষরা বোঝে না। আর বোঝে না বলেই এদের এই নির্বুদ্ধিতার সুযোগ নেয় মৌলবাদী সমাজ।

অথচ উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মগ্রন্থে এ ধরনের বিদ্বেষ-বিভেদমূলক কোন কিছু আছে বলে আমি এখনো কিছু খুঁজে পাইনি। উল্টে সহাবস্থান ও সহমর্মিতার কথাই লক্ষ্য করেছি। কোন কোনও বিষয়ে স্ববিরোধী মত লক্ষ্য করা গেলেও তা কখনোই বিভেদমূলক নয়।

অথচ, দুই সম্প্রদায়ের মৌলবাদীরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিভেদের বীজ বোনে এই ধর্মকে অপব্যাখ্যা করে। অপব্যাখ্যা করেই একটা সম্প্রদায়ের মানুষকে অপর সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। স্রেফ রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল ও আর্থিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে। এক বাংলা দুই দুই ভাগ হল স্রেফ এই কারণেই। ভারত বিভাগের মুলেও সেই একই অংক।

দুই দেশের দুই সম্প্রদায়ের সংখ্যাগুরু মৌলবাদী গোষ্ঠী ইসলামকে নিজেদের সুবিধামতো বিকৃত করে নেয় এবং প্রচার চালায়। কিন্তু ইসলাম ধর্ম কি সত্যিই সেই রকম? যতটুকু জেনেছি তাতে আমার তা কখনোই মনে হয়নি। আমি বিভিন্ন লেখায় এবং আলোচনায় তা বলার চেষ্টা করেছি। অথচ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মৌলবাদীরা ইসলাম ধর্মকে তাদের নিজের সুবিধামতো বিকৃত করে প্রচার করে চলেছে যুগ যুগ ধরে।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশের কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের দুই গোষ্ঠীর মৌলবাদীরা উত্তেজনা তৈরী করার চেষ্টা করছে। সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে আছে।

দাঙ্গার কারণ 

আসলে এরা একে অপরের পরিপূরক। দুই গ্রুপেরই উদ্দেশ্য ক্ষমতায় পৌঁছানো কিম্বা ক্ষমতা ধরে রাখার অপচেষ্টা। তাই বাংলাদেশি মুসলিম মৌ্লবাদীরা সেখানকার সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চালিয়ে ভারতীয় হিন্দু মৌলবাদীদের হাত শক্ত করার চেষ্টা করছে আর ভারতের হিন্দু মৌলবাদীরা এখানকার সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে বাংলাদেশের মুসলিম মৌলবাদীদের হাতকে শক্ত করার কাজে সুবিধা করে দিচ্ছে। মাঝখানে পড়ে উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ যারপরনাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কিন্তু ইসলাম কি সত্যিই অসহিষ্ণু। অন্যের ধর্মের উপর আক্রমণ ইসলাম ধর্ম অনুমোদন করে?মুসলিম মৌ্লবাদীরা আক্রমন করে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে, হ্যাঁ করে। আর হিন্দু মৌলবাদীরা সেটাকে দেখিয়েই প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে, প্রকৃত ইসলাম ধর্ম অসহিষ্ণু এবং অন্য ধর্মের উপর অত্যাচারকে এই ধর্ম সমর্থন করে। এটাকে প্রচারে এনে তারাও একই কাজে নেমে পড়ে।

কিন্তু আমি এটা বিশ্বাস করি না। আমি ধর্ম গুরু নই। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম চর্চার ইচ্ছা আমার মধ্যে সেভাবে নেই। তাই আমার কথা উভয় সম্প্রদায়ের মৌলবাদীরা মানতে চাইবে না।

তাই একজন বাংলাদেশী ধর্ম ধর্মপ্রচারক (মৌলবী) কি বলছেন শোনুন। শুনে প্রকৃত ইসলাম কী বলে জানুন ও সচেতন হন। কোনও মৌলবাদীর প্ররোচনায় পা দেবেন না। এতে আপনার ক্ষতি হবে আর মৌলবাদীদের ক্ষমতায়ন সুনিশ্চিত হবে। আমি আপনি যে তিমিরে ছিলাম, সেই তিমিরেই থেকে যাব। সে আমি মুসলিম হই আর আপনি হিন্দু, যাই হই না কেন।

আসুন ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই,জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে। যে-কোন মৌলবাদ,তা যেখানেই হোক,তাকে ঘৃণা করি।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন