অভিবাসন কী?
অভিবাসন এক স্বাস্থ্যকর, উন্নত ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া
আমরা সকলেই আসলে অভিবাসী। তাই অবৈধ অভিবাসনের নাম করে মানুষকে লাঞ্ছিত করা অযৌক্তিক এবং অমানবিক। মানবজাতির উৎপত্তির ইতিহাস মানলে আমাদের আদি বাসভূমি পৃথিবীর কোন এক ও অদ্বিতীয় এবং কোনো অজানা কিন্তু নির্দিষ্ট স্থান। এখনও পর্যন্ত যে আর্কিওলজিক্যাল প্রমাণ মিলেছে, তাতে আফ্রিকাই সেই পবিত্র ভূমি।অভিবাসন একটি স্বাস্থ্যকর এবং উন্নত প্রক্রিয়া। এবং আমরা প্রত্যেকেই আসলে এক একজন অভিবাসী। তাই অবৈধ অভিবাসনের নাম করে মানুষকে লাঞ্ছিত করা অযৌক্তিক এবং অমানবিক।
এই অভিবাসন প্রক্রিয়া মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। কারণ, অভিবাসনের ফলেই মানবজাতির ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক ও জলবায়ুগত অবস্থানে আগমন ঘটেছে এবং অভিযোজনের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। এই অধিবাসী হওয়ার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আবার ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মানুষের মধ্যে মিশ্রণ (সংকরায়ন) ঘটেছে। আর এই সংকরায়নের মাধ্যমেই মানব প্রজাতি ক্রমান্বয়ে উন্নত থেকে উন্নততর পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই অভিবাসন একটি স্বাস্থ্যকর এবং উন্নত প্রক্রিয়া।
জাতিরাষ্ট্রের নাম করে এই প্রক্রিয়াকে জোর করে আটকালে মানবজাতির বিবর্তনের প্রক্রিয়া বিঘ্নিত ও বিপথগামী হবে এবং মানবজাতির জিনগত উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হবে।
বৈধ অথবা অবৈধ যেভাবেই এই অভিবাসন প্রক্রিয়া চলুক না কেন, এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া মানুষদের মানসিক এবং শারীরিক শক্তি অনেক বেশি। এই শ্রেণির মানুষের উত্তর প্রজন্ম উন্নত ও শক্তিশালী জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উন্নত সভ্যতার নাম করে, উন্নয়নের ধুয়া তুলে অভিবাসন নামক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে আটকে দিয়ে কিছু মানুষ মানব সভ্যতাকে ক্ষতি করছেন। মানুষ সাময়িক লাভের আশায় সুদূর আগামীকে বিপদজনক দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। একশ্রেণীর মানুষ অন্য শ্রেণির মানুষের উপর একাধিপত্য কায়েম করতে গিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মকে অমান্য করছেন এবং কখনও তা ধ্বংস করছেন। পৃথিবীর কোনও প্রাণী গোষ্ঠী এভাবে নিজ জাতির উপর একাধিপত্য কায়েম করে না।
এই একাধিপত্য কায়েম করতে গিয়ে এক পৃথিবী শতধাবিভক্ত হয়েছে। এক মানবজাতি অসংখ্য জাতিতে বিভক্ত হয়ে গেছে। এবং প্রত্যেক জাতিকে অপর জাতির কাছে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আসলে এই অভিবাসন অবৈধ হয়েছে তখন, যখন কিছু মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে নিজের অধীনে জমা করতে চেয়েছে। জমা করতে চাইলে অন্যকে বঞ্চিত করতে হয়। বঞ্চিত করলেই গড়ে ওঠে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ। আর এই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধকে দমাতেই লাগে নিয়ন্ত্রণ। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ আসলে এই ধরনেরই এক নিয়ন্ত্রণ কৌশল, যা কায়েম করার জন্য জাতি রাষ্ট্রের নাম করে রাষ্ট্রীয় আইনে পরিণত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক আইনকে ভিনে রাষ্ট্রীয় আইনের নাম করে মানুষকে একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক খাঁচায় বন্দি থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন