Subhankar Chakaraborty বা! বেছে বেছে সেইটুকুই বললেন, যেটুকু দিয়ে আপনার বিভেদ নীতিকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ করা যায়। আর বাকিটুকুকে বাদ দিয়ে দিলেন!
১) সংখ্যালঘু শব্দটার অস্তিত্ব স্বীকার করেন? যদি করেন, তাহলে বলুন তো, পৃথিবীতে যত ভাষার অভিধান আছে বা আপনার ডিকশনারিতে সংখ্যালঘু শব্দটা কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য বলে বলা আছে? সেখানে কি ধর্ম কথাটা বাদ দেয়া আছে? অর্থাৎ ধর্মের ভিত্তিতে সংখ্যালঘু হওয়ার বিষয়টি অভিধানিক শব্দ নয় কিংবা সংবিধানসম্মত নয়?
২) এক দেশ ভিন্ন আইন মানে কী? একজন হিন্দু খুনিকে আইনের যে ধারায় বিচার করা হয়, একজন মুসলিম খুনিকে কি সেই ধারায় বিচার করা যায় না? অর্থাৎ আলাদা ধারায় বিচার করা হয়? যদি না হয় তাহলে এক দেশ ভিন্ন আইন হলো কোথায়? বিনয়ের সঙ্গে আপনাকে একটা পরামর্শ দেই, যদি মানেন, বন্ধু হিসেবেও ধরতে পারেন, পরের মুখে ঝাল খেলে ঝালের স্বাদটা ঠিকঠাক বোঝা যায় না। ঝালটা একটু নিজের মুখে নিজে দিয়ে দেখুন বুঝতে পারবেন, ঝালের আসল স্বাদটা কী।😀
৩) ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা। উদ্দেশ্যটা নিশ্চয়ই মাদ্রাসা শিক্ষা। বেশ বলেছেন। ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা দেশ থেকে উঠে যাওয়াই উচিত। আপনি তার বিরুদ্ধে বলেছেন। সমর্থন করলাম। আমিও সর্বান্তকরণে সেটাই চাই। এবার আপনি বলুন তো, আরএসএস সারাদেশে যে কয়েক লাখ স্কুল চালায় সেগুলো কোন ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা?আধুনিক শিক্ষা?
৪) আপনার বোধ হয় জানা নেই যে, আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ ধর্ম বিষয়টা আধুনিক শিক্ষার অঙ্গ নয়। দুটো পরস্পরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন শুধু নয়, দুই মেরুর জিনিস। আর এটা যদি মানেন, তাহলে সরকারি বা বেসরকারি স্কুলগুলোতে ঘটা করে সরস্বতী পুজো করেন কেন? এটা বুঝি ধর্ম শিক্ষা নয়?
৪) আপনি তো পড়াশোনায় জানা মানুষ। নিশ্চয়ই শিক্ষিত বলেও দাবি করেন। আরেকটু পড়াশোনা করুন, জানতে পারবেন, সামাজিক এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে কিছু কিছু নিজস্ব আইন আছে, যেগুলো ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম এবং সমাজে ভিন্ন ভিন্ন রকমের। রাষ্ট্রীয় একতা ও সংহতির জন্য সেগুলোকে মান্যতা দেওয়া হয় এবং তার খাতিরেই তাদের জন্য ভিন্ন আইনি সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। আর যুক্তরাষ্ট্রীয় রাষ্টব্যবস্থার এটা একটা বৈশিষ্ট্য। এটা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যায়। আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয়। তাই এই ধরণের কিছু আইন এখানে আছে।
আর আপনার সমস্যা হল এক্ষেত্রে আপনি শুধু মুসলিমদের কথাটা জানেন, হিন্দুসহ আরো যে ধর্ম সম্প্রদায়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইন আছে সেটুকু জানেন না। অথবা জানলেও সেটা চেপে যান। কারণ সেটা চেপে না গেলে আপনার বিভেদ ছড়ানোর কাজটা বিঘ্নিত হবে। তাই না?
তো আপনি তা-ই করুন। আর ভাবতে থাকুন, দেশের সমস্ত মানুষ, আপনি যেটুকু জানেন কিংবা প্রকাশ করেন তারাও শুধু সেইটুকুই জানেন। আর কিছু জানেন না। ভাবুন, আর আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলুন।
আমি ক্ষুদ্র মানুষ আপনাকে বোঝানোর ক্ষমতা রাখবো সে স্পর্ধা আমার নেই।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন