সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সমাজতন্ত্র গণতান্ত্রিক পথেই আসবে।

সমাজতন্ত্র গণতান্ত্রিক পথেই আসবে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে লক্ষ্যে পৌঁছানোর পদ্ধতি এবং প্রকৌশল বদলায়। বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে যে পদ্ধতিতে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে বিপ্লব (পরিবর্তন) করা আজ অনেক কঠিন। তার প্রয়োজন আছে বলেও আমার মনে হয় না।

আর মতপার্থক্যের কথা বলছেন? তা তো থাকবেই। ধনতান্ত্রিকদের মধ্যে মত পার্থক্য নেই? তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত নয়? সুতরাং মতপার্থক্য থাকবেই। আর এটাই স্বাভাবিক।

এই মতপার্থক্যকে মতৈক্যে পরিণত করার দায় এবং দায়িত্ব একমাত্র জনগণেরই নিতে হয়। আমার, আপনার এবং আমাদের। আমরা যদি বুঝতে পারি, দুটো অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে কোনটা আমাদের জন্য উপযুক্ত, তাহলে সেই ব্যবস্থার সমর্থকদেরকে আমাকে নির্বাচিত করতে হবে। তারা বহু দলে বিভক্ত হলেও, একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের ভিত্তিতে তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। ঐক্যবদ্ধ যে হতে পারে, তার উদাহরণ বামফ্রন্ট তৈরি হওয়া, ইউপিএ তৈরি হওয়া এবং এনডিএ তৈরি হওয়া। মানুষ যেদিকে যাবে, রাজনৈতিক দল সেই দিকেই পথ হাঁটতে বাধ্য হবে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।

এখন আমি বা আপনি, এককথায় আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে, আমরা কোন মতাদর্শের পক্ষে থাকবো। যেটা আমার শ্রেণীর, অর্থাৎ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে  বৃহত্তর জনসমাজের কল্যাণের কথা ভাববে, তাদের পক্ষে, না ধনিক এবং বণিক শ্রেণীর পক্ষে। আমাকে তাদেরকেই ভোট দিতে হবে, তাদেরকেই বেছে নিতে, যারা আপনার (বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর) শ্রেণির ( ধর্ম বর্ণ বা গোষ্ঠীর ভিত্তিতে তৈরি শ্রেণি নয) আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করবে। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কথা বলে যদি কেউ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে প্রমোট করে, তবে তাকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই উপড়ে ফেলে দিতে হবে।

জনগণ কখনো কোন দলের দলদাস হতে পারেনা। দলদাসে পরিণত হলেই, যে কোনো রাজনৈতিক দলই স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করবে এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করবে। পৃথিবীতে এমন  উদাহরণ-এর অভাব নেই। আমার আপনার কষ্টার্জিত সম্পদ, যা রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ নামে পরিচিত, তা ধনিক শ্রেণির হাতে তুলে দিতে দ্বিধা করবে না। আজকের সরকার ঠিক সেই কাজটাই করে চলেছে এবং সাধারণ মানুষের জীবন গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে।

তাই জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত হয়ে ওঠা দরকার।  সেক্ষেত্রে আপনার ভূমিকাও কম নয়। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের ভিত্তি মূলে যে মতাদর্শ রয়েছে, তা জানতে হবে। কারণ, তা জানা খুবই জরুরী। ভোটের সময় দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কিংবা ধর্ম বর্ণ এবং জাতিগত ভেদাভেদ সৃষ্টি করে যারা ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে, তারা সাধারন জনগনের বন্ধু হতে পারেনা - এই সত্য অর্থাৎ রাজনৈতিক শিক্ষা, আপনার মধ্যে থাকতে হবে। এর জন্য দরকার ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ও উপলব্ধি। এই উপলব্ধি বিনা আপনার আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, কারা আমার সত্যিকারের বন্ধু, আর কারা ছদ্দবেশী। এই শিক্ষা জনগণের মধ্যে তৈরি হলেই জনগণের শাসন অর্থাৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে বাধ্য। আর প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা একমাত্র রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত জনগণেরই আছে। আপনিও তাদের একজন। আপনাকেও সেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, জানতে হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে যে লড়াইযের বিবরণ আছে, তা মূলত ধনী এবং ধনহীনদের লড়াইযের বিবরণ।

তাই আমার আপনার প্রয়োজন জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শিক্ষিত করে তোলা। আর তা সম্ভব হলেই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম হওয়া অবশ্যম্ভাবী।

সুতরাং হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আপনার লক্ষ্য ও চেতনা যদি নির্দিষ্ট থাকে, আপনার রাজনৈতিক চেতনা যদি যথাযথ হয়, তাহলে হতাশা আপনার জন্য নয়। আপনি শুধু তা মানুষের মধ্যে প্রচার করে যান। জয় আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে