সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্ম বিষয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা ও তার দুর্বলতা

ধর্ম বিষয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা কেমন?

Common people's ideas about religion?

ধর্ম হলো একটা বিশাল বড় পুকুরের মতো। সেখানে সুস্বাদু মাছ যেমন আছে, তেমনই বিষাক্ত কীটপতঙ্গও আছে। আমরা যারা মানুষ, তারা কেউ জলে নেমে দেখিনা, সত্যিকারে সেখানে কী কতটা আছে।

আমরা (ধর্ম নামক) পুকুরকে দেখলে বা নাম শুনলেই দু’ভাগে ভাগ হয়ে যাই। দাঁড়িয়ে যাই বিপরীত দুই পাড়ে। একপক্ষ সাপকে দেখেই সিদ্ধান্ত করে ফেলি, পুকুর মানেই সাপে ভরা একটা ভয়ংকর জলাভূমি। অন্য পক্ষ সুস্বাদু মাছ দেখে সিদ্ধান্ত করে ফেলে ওটা একটা স্বচ্ছ ও নিরাপদ জলাশয়, যেখানে শুধু সুস্বাদু মাছই থাকে। সুতরাং নিশ্চিতে, চোখ বুঁজে তাতে নামা যায়, যেমন খুশি সাঁতার কাটা যায় এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের সব কিছুরই প্রাপ্তি ঘটে।

মূলত, এই ভাবনা থেকেই আমরা পড়ে যাই অন্ধবিশ্বাস নামক এক ভয়ংকর রোগের কবলে। 

আমরা, একপক্ষ তখন ভুলে যাই, ধর্ম জগৎ ও জীবন বিষয়ক একটা দর্শন। তাই তাকে বুঝতে গেলে নৈর্বক্তিক দর্শন চিন্তার অধিকারী হতে হয় এবং অন্য পক্ষ ভুলে যায়, এই ধরনের দর্শন চিন্তার অধিকারী হতে হলে তাকে একটি যুক্তিবাদী চিন্তাধারার সাহায্য নিতে হয় এবং তার অধিকারীও হতে হয়।

ভুলে যাই, বিশ্বাসকে বুঝতে গেলে অবিশ্বাসকেও ভালো করে জানতে হয়। না হলে উভয়ের মধ্যে প্রকৃত পার্থক্য কোথায় এবং কার মধ্যে কতটা ভালো-মন্দ আছে তা বোঝা যায় না। একই রকম ভাবে অবিশ্বাসকে বুঝতে গেলেও বিশ্বাসকে ভালোভাবে জানতে হয়।

আমরা অধিকাংশ মানুষ এভাবে ভাবিনা। যিনি বিশ্বাস নিয়ে আছেন, তো তিনি অন্ধভাবেই বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেছেন। আবার যিনি অবিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেছেন, তিনি অন্ধভাবেই অবিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এই দুপক্ষের কেউই বোঝেন না যে, বিশ্বাস (একধরনের অনুমান) এবং অবিশ্বাসের (সন্দেহ বা সংশয়) কষ্টিপাথরে ঘষাঘষির মাধ্যমেই জগত ও জীবনের প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে। তার এই ঘষাকষির কাজটা কাজটা করতে পারে একমাত্র যুক্তিবাদ।

আসলে, যুক্তিবাদ হল এই ঘষাঘষি করার মতবাদ। তাই বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসকে বুঝতে হলে মানুষকে আগে যুক্তিবাদকে ভালো করে বুঝতে হবে এবং যুক্তিবাদী হতে হবে। যুক্তিকে এবং যুক্তি প্রয়োগের পদ্ধতিকে জানতে হবে। তবেই বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করা যাবে। এবং তাদের নিয়ে ঘষামাজা করাও যাবে।

মনে রাখা দরকার বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীরা এই যুক্তিবাদকে হাতিয়ার করেই ঘষা মাজার প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রেখেছেন। ফলে একটার পর একটা বৈজ্ঞানিক সত্য বা প্রকৃত সত্য বা সত্যাংশ মানুষের নাগালে আসছে।

পৃথিবীতে যে যত বেশি পরিমাণে এই প্রকৃত সত্যের মুখোমুখি হয়েছেন এবং তা অর্জন করেছেন, তিনি তত বেশি শিক্ষিত হিসেবে বিবেচিত হন। যারা এভাবে প্রকৃত সত্যের মুখোমুখি হতে পারেন না, তারা লেখাপড়া জানা মানুষ হলেও প্রকৃত শিক্ষিত বলে স্বীকৃতি পান না।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে