সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমরা কি সত্যিই স্বাধীনতা পেয়েছি?

 স্বাধীনতা দিবস ও একটি সরল প্রশ্ন আমরা কি সত্যিই স্বাধীন হয়েছি?

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বিদেশী বণিক সংস্থা। আমাদের স্বাধীনতা মানে এই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অর্থাৎ বিদেশি বণিক সংস্থার শাসন থেকে মুক্ত হওয়া। এটাকেই আমরা স্বাধীনতা বলে মনে করি। দেশীয় বণিকদের মিডিয়া ও দেশীয় বণিক নিয়ন্ত্রিত সরকার আমাদের সেটাই শেখায়। আর ঘটা করে তা পালন করতে বলে। কিন্তু সত্যিই কী আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি? 

গভীর ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় যে ভারতীয় জনগনের একটা ক্ষুদ্র অংশ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই ক্ষুদ্র অংশ ‘আমরা’ অর্থাৎ আম জনতা নয়। এই ‘আমরা’ হল ভারতীয় শিল্প-মালিক ও বণিক সংস্থাগুলো।

ব্রিটিশ আমলে এই শিল্প মালিক ও বণিক সংস্থাগুলো স্বাধীনভাবে এবং সরকারি আনুকূল্যে শিল্প ও বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারত না। ব্রিটিশ সরকারের শিল্পনীতি ও বাণিজ্য নীতি পরিচালিত হত ইউরোপীয় শিল্পপতি ও বণিক-গোষ্ঠীর অনুকূলে। এই কারণেই স্বাধীনতা উত্তর কালে ভারতে কোনো ভারি-শিল্প ও বড় কোন বনিক গোষ্ঠী গড়ে উঠতে পারেনি।

১৮১৩ সাল পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একচেটিয়া ভাবে এদেশে বাণিজ্যিক সুবিধা ভোগ করে এসেছে। ১৭৬৫ সাল থেকে এই একচেটিয়া অধিকার তারা ভোগ করেছে এবং দেশীয় বণিকরা বঞ্চিত থেকেছে।

অন্যদিকে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের আগে পর্যন্ত ভারতীয় উদ্যোগে কোন শিল্পের বিকাশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রিত সরকার করতে দেয়নি; তাদের বৈষম্যমূলক শিল্পনীতি নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে। দীর্ঘ সময় পার করে ১৯০৩ সালে ভূবিদ্যার বাঙালি অধ্যাপক প্রমথনাথ বসু ময়ূরভঞ্জের গরুমহিষানী অঞ্চলে লৌহ খনি আবিষ্কার করলে তার ওপর ভিত্তি করে ১৯০৭ সালে জামশেদ জি টাটা ‘টাটা আয়রন এন্ড স্টিল কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতা-পূর্ব কালে এই একটিমাত্র ভারী শিল্পকেন্দ্র ব্রিটিশ সরকারের ছাড়পত্র পায়।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিয়ন্ত্রণাধীন সরকার এদেশ থেকে চলে গেলে ভারতীয় বনিক ও শিল্পপতিদের বঞ্চনার অবসান ঘটে। তারা এদেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের অনুকূলে শিল্প ও বাণিজ্য নীতি প্রণয়নের সুযোগ পায়। অর্থাৎ এই নীতির মাধ্যমে তারা শিল্প ও বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অধিকার লাভ করে। 

সুতরাং প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা লাভ করেছে ভারতের শিল্প ও বণিক গোষ্ঠী।

আগে বিদেশি বণিকরা আমাদের শাসন ও শোষণ করতো আর এখন স্বদেশী বণিক কোম্পানিগুলো তাদের নিয়ন্ত্রিত সরকারকে দিয়ে তাদের অনুকূলে শিল্প, বাণিজ্য ও কৃষি নীতি প্রণয়ন করে সাধারণ মানুষকে শোষণ ও বঞ্চনা করে চলেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ ব্রিটিশ আমলে যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।

তাহলে তারা কোন স্বাধীনতা পেল? তারা পেল বিদেশি বণিক সংস্থার নিয়ন্ত্রিত সরকার কর্তৃক শোষিত হওয়ার পরিবর্তে দেশীয় বণিক ও শিল্পগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারের মাধ্যমে শোষিত ও বঞ্চিত হওয়ার অধিকার।

এই স্বাধীনতা এসে কাদের কী লাভ হয়েছে? ইংরেজরা এসে ভূমি রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য কৃষকের কাছ থেকে জমি কেড়ে জমিদার (পূর্ব ভারতে এরা জমিদার ও পশ্চিম ভারতে অতিদার বা প্যাটেল নামে পরিচিত) নামক একটি অনুগত মধ্যস্বত্তভোগী শ্রেণি তৈরি করল এবং জমির মালিকানা তাদের হাতে দিয়ে দিল। এভাবে কৃষক এই প্রথম জমির মালিকানা হারিয়ে ভূমিহীন কৃষকে পরিণত হল। সেই কৃষক কী জমির মালিকানা আজও ফিরে পেয়েছে? পায়নি। তাহলে ভূমিহীন কৃষক কিসের স্বাধীনতা পেল?

আগে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মনোনীত শাসক কোম্পানির স্বার্থে কাজ করত। তাদের স্বার্থে শিল্পনীতি, কৃষিনীতি নির্ধারণ করত। আর এখন স্বদেশী বণিকদের নিয়ন্ত্রিত সরকার তাদের স্বার্থেই শিল্পনীতি ও কৃষি নীতি নির্ধারণ করছে। ফলে কৃষক, কৃষি-শ্রমিক ও শিল্প শ্রমিক তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাহলে শিল্প শ্রমিকরা কীসের স্বাধীনতা পেল?

এবার দেখুন, রূপ বদলে সেই পরাধীনতার নাগপাশ কীভাবে আমাদের আটকে রেখেছে। স্বাধীনতা উত্তর কালে আদিবাসী সম্প্রদায় ইংরেজদের নতুন ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার (১৭৯৩ সালে প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা জমিদারি প্রথা) কারণে জমি হারাচ্ছি। ফলে চুয়াড়, কোল, সাঁওতাল, মুন্ডা, ভিল প্রভৃতি জনজাতি একের পর এক ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংঘটিত করে।জমিদারদের সহযোগিতায় এই বিদ্রোহ ইংরেজরা নির্মমভাবে দমন করে। ফলে আদিবাসীরা জমির ওপর শত-সহস্র বছরের অধিকার হারিয়ে ফেলে। সেই জমির অধিকার তারা আজও ফিরে পায়নি। সেই জমির লড়াই আজও চলছে। আগে এদেশীয় জমিদারদের সহযোগিতায় ব্রিটিশ সরকার তাদের জমি কেড়ে নিত, এখন এদেশীয় শিল্প মালিক ও বণিকদের হয়ে দেশীয় সরকার শিল্পের নামে জমি অধিগ্রহণ করে নিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাম মাত্র ক্ষতিপূরণ দিয়ে।

১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহ। প্রধান নেতা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ। সঙ্গে আছেন ঝাঁসি রানী লক্ষ্মীবাঈ, নানা সাহেব তাঁতীয়াটোপির। হিন্দু মুসলমানের যৌথ অভিযান। ১৭৮৩ সালে রংপুর বিদ্রোহ। নেতা নুরুল উদ্দিন, সহকারী নেতা দয়ারাম শীল। দুই জনই নিম্নবর্গের মানুষ। কৃষি জমিই তাদের একমাত্র সম্বল। ইংরেজ সরকার নিযুক্ত ইজারাদার দেবী সিং খাজনা আদায়ের নামে জুলুম শুরু করে। তাই এই বিদ্রোহ। ১৭৬৩ সালে সন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ। নেতা দেবী চৌধুরানী, মজনু শাহ ও অন্যান্যরা। ১৮৫৯ সালের নীল বিদ্রোহ। নেতা দিগম্বর বিশ্বাস, বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস, কাদের মোল্লা, রফিক মন্ডল প্রমুখ। ১৮৭০ সালে পাবনার কৃষক বিদ্রোহ। জমি বাঁচানোর লড়াই। নেতা ঈশান চন্দ্র রায় ও ক্ষুদি মোল্লা। এভাবে একের পর এক হিন্দু-মুসলিম কৃষকের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন দেখে ব্রিটিশ বণিক গোষ্ঠী প্রমাদ গোনে। শুরু করে বিভাজনের রাজনীতি। হিন্দু ও মুসলমানকে আলাদা জাতি হিসাবে দেখাতে মরিয়া হয়ে ভারতের জন্য নতুন ধারার ইতিহাস রচনায় মন দেয়। যা সাম্রাজ্যবাদী ধারা নামে পরিচিত। এই ধারার ইতিহাসেই বিভাজনের রাজনীতর বীজ বোনা হল। একের পর এক মুসলিম শাসককে হিন্দু বিশ্বাসী হিসাবে তুলে ধরে হিন্দু-মুসলমানের যৌথ আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা হল।

কারা কী উদ্দেশ্যে কী করল? বিদেশি বনিকগোষ্ঠি তার সরকারকে টিকিয়ে রেখে শিল্প ও বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করার জন্য বিদ্বেষের রাজনীতির জন্ম দিল। কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে তারা জোরালো প্রচার শুরু করল। আজ কী দেখছেন? সেই একই চিত্র। শুধু ব্রিটিশ শিল্প বণিকের জায়গায় দেশীয় শিল্প বণিকের উজ্জ্বল উপস্থিতি। তারা তা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ তৈরি এবং সেখানে বিকৃত ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে, আর দেশীয় শিল্প-বণিকরা নিজস্ব ডিজিটাল মিডিয়ার (টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির) মাধ্যমে সেই কাজটাই করছে একই উদ্দেশ্যে। সাধারণ মানুষ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি ধর্মের মানুষ ধর্মের নামে মারামারি করছে। অন্যদিকে অনুগত রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় এনে একের পর এক জনবিরোধী আইন পাশ করে নিজেদের সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

এরই সূত্র ধরে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক বেচে দেওয়া হচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ব ও লাভজনক সংস্থাগুলো বেচে দিয়ে এই শিল্প বণিকদের কাছে ওই ক্ষেত্রগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। মনে রাখতে হবে রাষ্ট্রায়ত্ব সম্পত্তি মানে সাধারণ জনগণের সম্পত্তি আর তার লাভ মানে শিক্ষা স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতে ভর্তুকি হিসাবে জনগণের কাছে লভ্যাংশ  হিসাবে ফিরে আসা। বেসরকারি বণিক তার মালিক হলে সেই মালিকের পুঁজির পাহাড় জমে।

ব্রিটিশ শাসনের সঙ্গে এই সরকারের তাহলে পার্থক্য কোথায়? তাহলে কে স্বাধীন হল? স্বদেশী শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থাগুলি। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কী পেলো? তারা পেল বিদেশি বণিক সংস্থার নিয়ন্ত্রিত সরকার কর্তৃক শোষিত হওয়ার পরিবর্তে দেশীয় বণিক ও শিল্পগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারের মাধ্যমে শোষিত ও বঞ্চিত হওয়ার অধিকার।
----------xx-------


মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ ...

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে, ...

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা? বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

ইতিহাস কী?

ইতিহাস কী? ইতিহাস হচ্ছে মানুষের তৃতীয় নয়ন। এই তৃতীয় নয়ন মানুষকে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বিষয়ে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই পর্যবেক্ষণই জগত এবং জীবনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। একজন মানুষ, জগত ও জীবন সম্পর্কে  প্রকৃত সত্য যতটা উপলব্ধি করতে পারেন, তিনি ততটাই শিক্ষিত বলে বিবেচিত হন। তাই ইতিহাস জানা এবং বোঝা ছাড়া একজন মানুষ পূর্ণাঙ্গ শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারেন না। ইতিহাস কেন তৃতীয় নয়ন? একটা উদাহরণ নেওয়া যাক। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা ধরুন। আমরা এই ঘটনাকে যখন প্রত্যক্ষ করি, তখন দেখি দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংস হয়ে উঠছে। আমরা খুব সহজেই এই ঘটনাকে ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দিই এবং ধর্মকে এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করি। ধর্মীয় বিদ্বেষের ফল হিসেবে সেগুলোকে ব্যাখ্যা করি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ইতিহাসকে কার্যকারণ সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এই দাঙ্গাগুলোর পিছনে ধর্মের চেয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য খুবই শক্তিশালী ভূমিকায় রয়েছে। অর্থাৎ মূলত, ...

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম শিক্ষার প্রভাব দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে