সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যুক্তি ছাড়া মুক্তি নেই, ভক্তিতে সে শক্তি নেই

মুছাদুল ইসলাম আপনার মতামত প্রকাশের ভঙ্গিটা খুব সুন্দর। শব্দ চয়নের পরতে পরতে রয়েছে সহনশীলতার মসৃন প্রলেপ, যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

আপনার সাথে আমি একমত যে, শব্দ চয়নে আমাদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। আমার খুশির প্রকাশ প্রক্রিয়া বা ভঙ্গি যেন কাউকে কষ্ট না দেয়, তা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা মেনে চলার চেষ্টা করি। কাউকে আঘাত করা নয়, তাকে সম্মানের সঙ্গে তার ভ্রান্ত ভাবনা (যদি থাকে) থেকে আমার কাছেই (সত্যের কাছে) অনাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। তাই বিনয়ের সঙ্গেই আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে, শব্দ চয়নের ব্যাপারটায় আমি অসতর্ক ছিলাম না।

আপনি খেয়াল করলে দেখবেন যে, 'মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত' এটা একটা শব্দবন্ধ বা প্রবচন। এখানে 'মোল্লা' শব্দটা একা কোনো অর্থ প্রকাশ করতে পারে না। পুরো প্রবচনটার অর্থ হচ্ছে 'যে দুর্বল সে বেশি দূর যেতে পারে না।' ভক্ত এবং মন্দির সংক্রান্ত বাক্যাংশটিও একই অর্থ বাহক। 

সুতরাং বুঝতেই পারছেন শব্দ চয়নে কোনো ত্রুটি আমি জ্ঞানত রাখিনি।

যুক্তির ক্ষেত্রে আমি একটু ভিন্ন ধারণা পোষণ করি। সেটা বলার আগে আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা মনের থাকতে থাকতেই বলে নি।

আমার সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরা কেউ আমার ভক্ত নয়, আমি কারও গুরুও নই। আপনি যদি খেয়াল করেন, তবে আপনি দেখবেন আমি প্রত্যেককে 'সাথি' বলে সম্বোধন করি। অর্থাৎ গুরু শিষ্যের ধারণার আমি ঘোর বিরোধী।

এমনকি ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কেও আমার ধারণা একটু বিশেষ রকমের। এই সম্পর্ককে আমি একটি বিশেষ শব্দবন্ধ দিয়ে প্রকাশ করি। আর সেটি হল 'শিক্ষক বন্ধু'। অর্থাৎ কোনো ছাত্র বা ছাত্রি আমাকে তার নিকটতম বন্ধু বলেই ভাববে, যাঁর কাছে সে সব কথাই খুলে বলতে পারবে। প্রেম থেকে পড়াশোনা - সব বিষয়েই । শুধু ব্যবহারের সময় বা কথা বলার সময় শব্দ চয়নে সে মনে রাখবে আমি একজন তার শিক্ষকও বটে। কেন আমি এভাবে ভাবি, তা ব্যাখ্যার সুযোগ এখানে নেই। তাই অন্য কোনো দিন, অন্য কোনোখানে, নিশ্চয়ই কথা হবে।

এবারে আসি যুক্তির কথায়। আমি ঐশ্বরিক তত্ত্বে বিশ্বাস করি বা না করি, এর সঙ্গে যুক্তির কোনো বিরোধ আমি ব্যক্তিগতভাবে মানি না। বিশ্বাসও করিনা। আমার উপলব্ধি বলছে জগতের যা কিছুই আছে বা ঘটছে তার পিছনে আছে কার্যকারণ সম্পর্ক। অর্থাৎ কারণ ছাড়া কোনো কিছু ঘটার ব্যাখ্যাকে আমি স্বীকার করি না।

তবে একথা সত্যি যে, আমরা এখনও সব বিষয় কার্যকারণ সম্পর্ক দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি না। পারি না, তার কারণ সেই সম্পর্ক আমরা এখনও আবিষ্কার করতে পারিনি। আমরা যতদিন কলেরা রোগের কারণ আবিষ্কার করতে পারেনি, ততদিন তার কারণ হিসেবে ঈশ্বরকে সামনে রেখে বাঁচার চেষ্টা বা ব্যাখ্যা করেছি। এমন আরও অজস্র উদাহরণ দেওয়া যায়।

সুতরাং আমার জানা থাকুক আর না থাকুক, সব ঘটনার পিছনে কার্যকারণ সম্পর্ক আছে। আর এই সম্পর্কের মূলে পৌঁছানোর একমাত্র অস্ত্র যুক্তি। তাই যুক্তি ছাড়া মুক্তি নেই। কারণ, ভক্তিতে ( বিশ্বাসে) সে শক্তি নেই।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন