Goutam Ray দাদা, নিজেকে পন্ডিত ভাবাটা, আর অন্যকে মূর্খ ভাবাটা একটু কম করুন। কাউকে সম্মান করতে না পারেন, অসম্মান করা উচিত নয়, এই বোধটা আপনার একটু জন্মানো উচিত। মানুষের সঙ্গে কথা বলতেই তো এখনও শেখেন নি দেখছি। ‘এই আলী হোসেন অন্তত 50 বছর আগের বুদ্ধুশুদ্ধিতে আছে’ মানে কী দাদা? আমি যদি বলি, আপনি কটা বই পড়েছেন মশাই? আপনার ভালো লাগবে? মার্ক্সবাদ আমি পড়িনি! আপনি পড়েছেন? পড়েছেন বলে আম্বানিদের প্রশংসা করছেন? কাল মার্কস পুঁজিপতিদের প্রশংসা করে গেছেন? কোন্ বইতে দাদা! নাম বলুন তো? আপনি তো আবার পন্ডিত মানুষ। নিশ্চয়ই মনে আছে। টুপ করে পৃষ্ঠা নাম্বারটা বলে ফেলুন তো! যাদের নাম বললেন, তারা কখন, কোথায় আর কোন বিষয়ে কথা বলেছেন, শুধু আপনিই বুঝি জানেন? যাদের মতবাদগুলো সময়ের দাবিতে কার্যকারীতা হারিয়েছে, তাদের নিয়ে নাচানাচি করাটা, খানিকটা পিছিয়ে থাকারই প্রমাণ দেয়া বোধ হয়! কী বলেন?
এক কাজ করুন। আমার অন্য মন্তব্যগুলির উত্তর তৈরি করুন। তারপর এখানে পোস্ট করুন। পুঁজিপতিদের বস্তাপচা কথা শুনে শুনে ৫০ টা বছর পার করে ফেলেছি। চোর চুরি করবে বলে কোন উৎপাদন না করে বসে থাকব, নিজের জমি বিক্রি করে দেব, নিজের কারখানা নিলামে তুলব, এসব বোকা বোকা যুক্তি আমাকে দেখাবেন না। কর্মচারী কাজ না করলে বেসরকারি কোম্পানি শাস্তি দিতে পারে, সরকার পারেনা? কেন? আম্বানির কর্মচারীরা ধর্মঘট করলেই পুলিশ পাঠিয়ে তো তাদের শাসন করে দিতে পারেন। রাষ্ট্রের হাতে থাকা, সমাজের হাতে থাকা কোম্পানিগুলোর কর্মচারীরা অন্যায় করলে তার শাস্তি দিতে পারেন না? কোথায় বাঁধে?
আমরা বুঝি, আপনারা ধর্মঘটের অজুহাত দেখিয়ে কারখানাগুলোকে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিতে চান। তাই প্রচার করেন, যত দোষ নন্দ ঘোষ।
পুঁজিতিদের হাতে মিডিয়া আছে, হাতে শ্রমিকের শুষে নেওয়া টাকা আছে। কিছু ছড়িয়ে দিলেই কিছু অভুক্ত মানুষকে লেলিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে। সুতরাং কত শক্তি আপনার। এসব আমরা বুঝি। অন্য জায়গায় গিয়ে বলুন দাদা। আমাকে একথা বলে লাভ নেই ।
আজকে এই মহামারীর দিন, সরকার হাত গুটিয়ে বসে পড়ে রয়েছে কেন? সরকার শুধু ট্যাক্সের টাকায় চলে। সরকারের নিজস্ব উৎপাদন যদি না থাকে, নিজস্ব ইনকাম যদি না থাকে, আপদকালীন সময়ে জনগণকে রক্ষা করবে কি করে? এসব প্রশ্নের উত্তর আছে আপনার কাছে?
চিন আমার শত্রু দেশ। তাকে আমি সমর্থন করতে পারি না। কিন্তু সেই দেশ, সেদেশের জনগণকে যেভাবে সুরক্ষা দিয়েছে, অন্য সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো যেভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করছে, তা আমার দেশ পাচ্ছে না কেন? কে দেবে এর উত্তর?
সরকার সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করে, জনগণের সম্পত্তি বিক্রি করে, নেতামন্ত্রীদের এবং পুঁজিপতিদের পেটপূজা করতেই সব ফাঁকা হয়ে গেছে। পঞ্চায়েতকে বলবেন নিজের খরচের টাকা নিজে ইনকাম করুন, রাজ্যকে বলবেন রাজ্য চালানোর জন্য নিজে ইনকাম করুন, আর আপনি সবগুলো বিক্রি করে দেবেন পুঁজিপতিদের হাতে? আপনার ইনকামের চেষ্টার দরকার নেই? বাহ দাদা, বাহ।
আজ সরকারি কর্মচারীদের মাইনে বন্ধ করে দিচ্ছেন, ডিএ দিচ্ছেন না। সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে আন্দোলনকারীদের দমন করছেন। করছেন না? আন্দোলন করতে দিচ্ছেন? দিচ্ছেন না। তাহলে ইউনিয়ন যদি অন্যায় দাবি করে, তার শাস্তি না দিয়ে সম্পদগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন কেন? কোম্পানির বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে সরকারের পুলিশ গিয়ে কোম্পানির হয়ে দালালী করতে পারে, আর সরকারের সম্পত্তিকে রক্ষা করার জন্য পুলিশকে কাজে লাগাতে পারে না, আইনকে কাজে লাগাতে পারে না? এসব কি ধরনের বোকা বোকা যুক্তি!
এসব বোকা বোকা কথা বলবেন না আমাকে? আমি আপনাকে বোকা ভাবি না। কিন্তু আপনি আমাকে বোকা ভাবছেন। ভাবুন। কিন্তু মনে রাখুন,
গোটা কতক দার্শনিকের নাম, গোটা কতক অর্থনীতিবিদের নাম, মুখস্ত করে তাঁদের নাম বললেই, সে বিষয়ে নিজে পন্ডিত, এটা কাউকে কাউকে বোঝানো যায়, প্রমাণ করা যায় না। এটা বোঝাতে গেলে যুক্তি আর তথ্য দিয়ে অন্যের মতকে খন্ডন করতে হয়। আপনার চেয়ে কম বয়সি জয়ন্ত রায়চৌধুরীর যে সৌজন্যটুকু আছে, আপনার মধ্যে সেটুকুও নেই। ভেবে দেখেছেন। ও যতটা যুক্তি এবং তথ্য দেয়ার চেষ্টা করে আমার মতকে খন্ডন করার চেষ্টা করেছে, আপনার মধ্যে তার একরত্তিও নেই। থাকবে কীকরে? আপনি তো ‘পন্ডিত’ মানুষ! পাণ্ডিত্যের একটা অহংকার থাকবেনা? আমার মতো তো ‘মূর্খ’ নন আপনি। তাই না?
আপনি এক কাজ করুন। আমার সব মন্তব্যগুলো পড়ুন আর যে কটা প্রশ্ন করেছি সেই প্রশ্নের উত্তর এক এক করে দিন। তবেই বুঝতে পারব আপনার দৌড় কতটা?
আপনি বোধ হয় ভেবেছেন অধিকাংশ মানুষ যেমন নোট মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি করে, আর চাকরি পাওয়া হয়ে গেলে পড়াশোনা লাটে তুলে দেয়, আমিও তেমনই একজন। তাই না?
জয়ন্ত রায় চৌধুরীর সঙ্গে যে যে মত বিনিময় হয়েছে ওগুলো পড়ুন তারপর প্রশ্ন ধরে ধরে উত্তর দিন।
কাউকে না জেনে না বুঝে ছোট করতে যাবেন না। এতে নিজের শিক্ষার দৈন্যতাই প্রকাশ পায়।
আপনি মাঝেমাঝেই সৌজন্যের সীমা ছাড়ান। তাই একটু চড়া গলায় বললাম। আশা করি এটুকু সহ্য করার শক্তি আপনার আছে। আমি জানি, যার কারণে-অকারণে অন্যকে অপমান করা অভ্যাস থাকে, তার অপমান হজম করার ক্ষমতাও প্রখর হয়। কি ঠিক বললাম না গৌতমবাবু?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন