সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মাননীয় গৌতম বাবুর প্রতি এক মূর্খের মুর্খামি

Joyanta Roy Chowdhury অসুবিধা তুলে ধরেছো। ঠিক। কিন্তু যে প্রশ্নগুলো করেছিলাম তার উত্তর এড়িয়ে গেছো। এর মধ্যেই রয়েছে আসল সত্য।

মৌলিক চাহিদা সবার সমান। তুমি মিষ্টি কম খাও। আমি মিষ্টি বেশি খাই। তুমি লাল পছন্দ করনা, আমি লাল পছন্দ করি। এই পার্থক্য দেখিয়ে সমাজে আর্থিক বৈষম্য থাকাটার ব্যাখ্যা দেওয়াটা হাস্যকর।

একদল সমাজপতি দিয়ে দেশ চলে তোমাকে কে বলেছে? আমাদের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সবাই কি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে? তুমিও কি নেতা নাকি? আমিও কি নেতা হিসেবে কাজ করি? আমাদের মন্ত্রিসভায় কতজন লোক আছে? 130 কোটি? না। এখানেও তো একদল লোক এই দেশটা শাসন করছে।😀😀

সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিত্বের সংখ্যা আরো বেশি থাকে। সেখানে জনগণ প্রত্যক্ষ ভাবে প্রশাসকদের নির্বাচন করে। ধনতান্ত্রিকদের ভাবনা মাথায় গেঁথে থাকলে, সমাজতন্ত্রকে বোঝা যাবে না। আগে যে কথাগুলো বললাম সে কথাগুলো ভালো করে বোঝার চেষ্টা কর।

আজকে যে ধনতন্ত্র দেখছো, সেই ধণতন্ত্রের জন্ম কতদিন হয়েছে জানো? আমাদের দেশে মেরেকেটে 70 বছর। তার আগে কি ছিল? স্বাধীনতার পরপর যে ধণতন্ত্র ছিল সেই ধণতন্ত্র কি এখনো আছে? নেই। তাহলে সমাজতন্ত্র এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকবে কেন? ভারতে ধনতন্ত্র ছিলনা, এসেছে। একেও একসময় যেতে হবে অথবা নিজেকে পাল্টাতে হবে। বিশ শতকের শুরুতে পৃথিবীজুড়ে পাল্টে যেতে হয়েছে ধনতন্ত্রকে। কেন জানো? এই সমাজতন্ত্রের দ্রুতগতিতে এগোনোর জন্য। আজ ধনতন্ত্র যে সুবিধাটুকু তোমাকে দিচ্ছে তা সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার চাপে পড়ে। নিজের অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখার তাগিদে।মানবসভ্যতার ইতিহাস পড়োনি বলে সেসব জানা হয়ে ওঠেনি। সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার জন্মের আগের  সমাজ ব্যবস্থার ইতিহাসটা পড়ো তাহলেই জানতে পারবে ভয়ংকর ছিল ধনতন্ত্রের পূর্বসূরীরা।

একবিংশ শতকে সমাজতন্ত্র একটু পিছিয়েছে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। পৃথিবীতে কটা দেশে বামপন্থীরা সরকারে আছে জানো? সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে তার মানে কি সমাজতন্ত্র মুছে গেছে? সমাজতান্ত্রিক ভাবনা অকেজো হয়ে গেছে? এগোনো পিছনোটাই  জগতের রীতি। মানব সভ্যতার আদিতে ছিল সাম্যবাদ। লক্ষ লক্ষ বছর এই ব্যবস্থা কায়েম ছিল বিভিন্ন চেহারায়। তারপর তাকে সরে যেতে হয়েছে। এসেছে দাস ব্যবস্থা। সেও কয়েক লক্ষ বছর কাটিয়ে দিল। টকেও পরাজিত হয়েছে সমাজের নিপীড়িত মানুষের লড়াইয়ের কারণে। সেই লড়াই শেষে এসেছে দাসমুক্তি। তারপর এল সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের পর এসেছে ধণতন্ত্র। খেটে খাওয়া মানুষের লড়াই জারি আছে। ধনতন্ত্র-এর খুবই কাঁচা বয়স এখন। এর মধ্যেই সে নিজেকে বদলাতে বাধ্য হয়েছে। এখন আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ধর্মীয় এবং উগ্রজাতীয়তাবাদকে হাতিয়ার করে। ইতিহাস বলছে, একাজ করতে গিয়ে হিটলার কালের গভীরে ডুবে গেছে। সুতরাং এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত করোনা। কে থাকবে আর কে থাকবে না তা কেবলমাত্র ইতিহাসই বলতে পারে। সেটা পড়ে দেখো।

আর সেই ইতিহাস বলছে ধনতন্ত্রের বাড়বাড়ন্ত হয়েছিল যাদের হাত ধরে, ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেই রাজতন্ত্রের পতন হয়ে গেছে ইউরোপে। এসেছে গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রের বুলি আউড়ে ধণতন্ত্র বাঁচার চেষ্টা করছে। সমাজতন্ত্রের চাপে পড়ে তাকে নিজেকে পাল্টে ফেলতে হয়েছে অনেক।

আগেই বলেছি আজ তারা আবার নিজের জায়গায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যেমন ইউরোপে মেটারনিক ও তার সহযোগীরা রাজতন্ত্রকে ফিরিযে আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আজ সে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে স্হায়ীভাবে। সুতরাং ইতিহাস বলছে চিরতরে বলে কিছু নেই। পরিবর্তিত আকারে সে এসে হাজির হবে। আর ও শক্তি নিয়ে। 

তোমার কি মনে হয় যে গরীব মানুষরা সব ফাঁকি দেয়? গরিব মানুষ ফাঁকি দিলে জগৎ চলে? গরিব চাষি ফাঁকি দিলে তোমার পেটের ভাত হবে? তুমি মনে করো বড়লোক যারা, তারা ফাঁকি দেয় না। তারা তাদের ভাগ্য ফেরানোর জন্য যে পরিশ্রম করে তুমি আমি তা করি না।

সুতরাং সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে মানে কমিউনিজম এবং সমাজতন্ত্র শেষ হয়ে গেছে একথা তুমি কোন যুক্তিতে বলছো?

সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভাঙার জন্য আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের ধানতান্ত্রিকরা লড়াই করতে হয়েছিল দীর্ঘ সত্তর বছর। তাতেও পেরে  ওঠেনি। শেষমেষ কমিউনিস্ট পার্টির ভিতরে ধনতান্ত্রিকদের এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নকে শেষ করা হয়েছে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন যেটা ভুল করেছিল সেটা হচ্ছে রাশিয়ার আশপাশের এলাকাগুলোতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে গিয়ে।

চিন যদি সেই ভুলটা না করে, তাহলে ধনতন্ত্রকে পিছু হটতে হবে। চিন পুরোপুরি সমাজতান্ত্রিক দেশ এখন আর নেই। তার মধ্যে মনে হচ্ছে একটি সাম্রাজ্যবাদী ঝোঁক রয়েছে মনে হচ্ছে। যদি এটা থাকে, তাহলে সোভিয়েত ইউনিয়নের দশা হতে বাধ্য। আর এই ঝোঁককে যদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে সমাজতন্ত্র অন্য চেহারায় দেখা দেবে।আর সেই চেহারার কারণে ধনতান্ত্রিকদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে।

সমাজতন্ত্রের কিছু নিয়ম-নীতি তারা মেনে চলে। তাই পৃথিবীতে ধনতান্ত্রিকদের যে লেজেগোবরে অবস্হা তা কিন্তু সমাজতান্ত্রিকদেশগুলোর হয় নি। আজ এই সময়ে আমেরিকার মত ধনতান্ত্রিকদের দাদা নিজের পিঠ বাঁচাতে চীনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে মুখ রক্ষার চেষ্ঠা করছে। করোনা মহামারিতে সে যখন এক নং ক্ষতিগ্রস্তদেশ, যখন মুখ থুবড়ে পড়েছে তার সাধের ধনতন্ত্র, চীন সেখানে সারা পৃথিবী ধনতান্ত্রিকদের সামনে দাদাগিরি করে যাচ্ছে। এই দাদাগিরি সমর্থনযোগ্য নয়।  কিন্তু ভেবে দেখেছো কি এই দাদাগিরির শক্তি সে পেল কোথায়? সেটা ভাবার দরকার আছে। কোন মন্ত্রে তারা এত শক্তিশালী হয়ে উঠলো? ভাবার সময় হয়েছে। না ভাবলে ধনতান্ত্রিকদের মরক মহামারীর আকার নেবে। এবং মানব সভ্যতাকে আরো এক বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি ঠেলে দেবে। 
 ------////-----

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে