সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হিন্দু বাঙালি না বাঙালি হিন্দু

Supratim Mondal চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু বোঝাতে পারবো কিনা জানিনা।😀😀

স্বাধীনতা-উত্তর কাল থেকে বৃহত্তর বাঙলা ছিল বাঙালির নিজ ভূমি। সেই ভূমিতেই যে সংস্কৃতির জন্ম হয়েছিল, তার নাম বাংলা সংস্কৃতি। এই বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস, তার সংস্কৃতির ইতিহাস, এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ইতিহাস ও সেখান বাঙালির উজ্জ্বলতম উপস্থিতি বাংলাকে এবং বাঙালি জাতিকে উচ্চতর মর্যাদায় উন্নীত করেছিল। একসময় এই জাতির সুনাম সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছিল। আপনার বোধহয় গোপালকৃষ্ণ গোখলের সেই অমূল্য বাণীর কথা মনে আছে, ' বাংলা আজ যা ভাবে সারা ভারতবর্ষ আগামিকাল সেটা ভাবে।' আপনার বোধহয় একথাও মনে আছে, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান' কথাটিও একজন বিশ্ববরেণ্য বাঙালি বলেছিলেন। সাহিত্য ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান নোবেল ভারতবর্ষকে উপহার দিয়েছিলেন যিনি, তিনিও একজন বাঙালি। এবং তার সম্মানের গ্রন্থটিও ছিল বাংলা ভাষায়।

সুতরাং ভাষা এবং ভাষার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাঙালি জাতিসত্তা বাঙালির গর্বের বিষয়।

কিন্তু আজকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকান। সারা বাংলার অলিতে-গলিতে দেখবেন হিন্দি চর্চা চলছে। বাংলা সিনেমা দেখার লোক হয়না। হিন্দি সিনেমা আসলে হাউসফুল হয়। কারোর মোবাইল বা ল্যাপটপ এ কিংবা ডেক্সটপে মাউস ঘুরিয়ে দেখুন কমবেশি 95 শতাংশ মানুষের স্টোরেজঃ ভর্তি হয়ে আছে হিন্দি গানে। তারও (গানের)পার্সেন্টেজ করলে দেখবেন কমবেশি 90-95 শতাংশ হয়ে যাবে। বাংলায় কথা বলার চেয়ে হিন্দিতে কথা বলতে পারাটা একটা গর্বের ব্যাপার হয়ে। দাঁড়িয়েছে আমাদের। আমরা বাংলা গান গাওয়ার চেয়ে হিন্দি গান গাইতে বেশি পছন্দ করি। বাংলা বলতে বলতে মাঝে মাঝে হিন্দি না বলতে পারলে আমরা হীনমন্যতায় ভুগী

নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে যে কৌশলে স্কুল-কলেজে হিন্দি ভাষা শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। এবং ফাঁদে যারা পা দিচ্ছেন, তাদের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। বলতে বাধা নেই তার বৃহত্তম অংশই হিন্দু জনগোষ্ঠীর।

এই লক্ষণগুলো কিসের লক্ষণ? বাংলা ও বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ?

সবচেয়ে বড় প্রমাণ পেয়ে যাবেন যদি আপনার প্রতিবেশী কে জিজ্ঞাসা করেন তার পরিচয় কী। তিনি নির্দ্বিধায় উত্তর দেবেন 'হিন্দু বাঙালি'। 'বাঙালি হিন্দু' কথাটা প্রায় শুনতেই পাবেন না। আরো যদি একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন এরা নিজেদেরকে হিন্দু বলতেই বেশি পছন্দ করে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় মজাদার সংগ্রহ আছে, তাও আপনাকে ভাবাবে। অধিকাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ 'হিন্দু' মানে 'বাঙালি' আর বাঙালি মানে হিন্দু - এভাবেই বোঝেন। আমাকে মাঝে মাঝেই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যে, আপনি বাঙালি না মুসলমান? কেউ কেউ এ কথা বলে বসেন যে আপনি মুসলমান হলেও আপনাকে বাঙালি বাঙালি লাগে। আমি কিন্তু সাধারন ও লেখাপড়া না জানা মানুষের কথা বলছি না।

অন্যদিকে মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাউকে জিজ্ঞাসা করলে আপনি দেখবেন তারা প্রথমেই বলবে আমরা মুসলমান। কিন্তু যখনই জাতিগত দিক থেকে প্রশ্ন করবেন তখন তারা বলবেন 'বাঙালি মুসলিম'। 'মুসলমান বাঙালি' কেউ বলে না বললেই চলে। ব্যতিক্রম যে নেই তা বলা যায় না। অবশ্যই আছে। কিন্তু হিন্দি প্রীতির প্রাবল্য রয়েছে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

সবশেষে একটা কথা বলা খুব জরুরী। সেটা হল আমি মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করাকে দুর্ভাগ্যজনক মনে করি। কারণ পৃথিবীতে কোন মানুষই কোন ধর্ম নিয়ে জন্মায় না। পৃথিবীর মানুষ ধর্মের জন্মদাতা এবং পৃথিবীতে কোন নতুন অতিথি এলে তার পরিবারই থাকে জানিয়ে দেয় তার ধর্মের কথা। তাকে শেখানো হয় তোতা পাখির মত। আর সেই মুখস্থ বাণী সারা জীবন বয়ে বেড়ায়। তাই এ দুটো শব্দকে (হিন্দু মুসলিম ইত্যাদি) আমি এড়িয়ে চলি। এখানে শব্দ দুটোর ব্যবহার আবশ্যিকতা শর্ত নেমে এসেছে।

জানিনা আপনাকে কতটা বোঝাতে পারলাম। কিন্তু জানি আমি চেষ্টার ঘাটতি রাখিনি। ভালো থাকবেন সাবধানে থাকবেন। শুভ রাত্রি।

মন্তব্যসমূহ

আলী হোসেনের বহুল-পঠিত উক্তিগুলো পড়ুন

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয়

ধর্মের নামে রাজনীতিই প্রমাণ করে আমরা মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে এখনও যে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় বা হচ্ছে, তাতেই প্রমাণ হয় আমরা আধুনিক নয়, চিন্তায়-চেতনায় এখনো মধ্যযুগে বাস করি। কারণ, আধুনিক যুগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে। কোন জাতি, নিজেকে আধুনিক বলে দাবি করতে চাইলে, এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো হল ধর্ম-মুক্ত রাজনীতি। পৃথিবীর যেখানে যেখানে রাজনীতি ধর্মমুক্ত হয়েছে, সেখানে সেখানে রাজনৈতিক হিংসা হানাহানি অনেক কমে গেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যা আধুনিকতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায় ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত থাকলে কি ভয়ংকর রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বোঝা যায়, কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন অস্থিরতা ও রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার দাপটে একটা জাতি শতধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই, অসংখ্য ছোট ছোট, বলা ভালো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। ফলে সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর নয়া সাম্রাজ্যবাদী নাগপাশ

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না।

ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা যায় না। কারণ দুটোরই ভিত্তি হচ্ছে যুক্তিবিমুখ বিশ্বাস। তাই, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা হয়তো যায়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ধর্মান্ধতা দূর করা কখনই যায় না। একথা ভুলতে বসেছেন যাঁরা, তাঁরা নিজেদের প্রগতিশীল দাবি করতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এতে প্রগতিশীলতা গতিলাভ করে না বরং গতি হারায়। --------x------- Di Ansar Ali হ্যা, পরিস্থিতি অনুযায়ী সমঝোতা করতে হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হয়, তাতে আমার সত্যিই কোনো লাভ হচ্ছে কিনা। এবং তার অদূর ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করাটা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে হয়। কারণ, তাতে পরের যাত্রা হয়তো ভঙ্গ হয়, কিন্তু নিজের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার দখলদারি বেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হয়, এই হিসাবটা ঠিকঠাক না করতে পারলে পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পরিবর্তে প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এক্ষেত্রে 'দশচক্রে ভগবান ভুত হওয়ার' বিষয়টিও মাথায় রাখার প্রয়োজন খুব বেশি বলেই আমি মনে করি। যারা প্রগতিশীল নয়, বলে এতদিন বলে আসছি তারা যদি হঠাৎ করে প্রগতিশীল হয়ে ওঠে তবে,

বিজেপি ও আরএসএস কি আলাদা?

বিজেপি ও আরএসএস-এর রসায়ন সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন, এমন মানুষদের সবাই জানেন বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর গভীর সম্পর্কের কথা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে, আরএসএস দ্বারা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। তাই এই দুই সংগঠনকে আপাতদৃষ্টিতে আলাদা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এরা আলাদা নয়। বরং এরা একে অপরের পরিপূরক। বিস্তারিত দেখুন এখানে ক্লিক করে

সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল

মানুষ আসলে কী? সব মানুষই আসলে এক-একজন পাগল। কেউ কাজ পাগল, কেউ ফাঁকিবাজিতে পাগল। কেউ গান পাগল, তো কেউ জ্ঞান পাগল। কেউ বা আবার পান পাগল। কিছু না কিছু নিয়ে আমরা প্রত্যেকে পাগলের মত ছুটে বেড়াচ্ছি। থামবো কবে? প্রসঙ্গ জানতে এখানে ক্লিক করুন

বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবর্তে ধর্মশিক্ষার প্রচলন ও তার পরিণতি

দেশের বড় বড় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে বেদ ও পুরাণসহ ধর্মশাস্ত্র পড়ানোর ধুম লেগেছে তাতে ভারতবর্ষ খুব তাড়াতাড়ি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মত অশিক্ষার কানাগলিতে ঢুকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে,বলা ভালো যেতে বাধ্য হবে। শিবপুর আই আই ই এস টি তে যেভাবে বেদ ও পুরাণ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে তাতে এই আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে গোলওয়ালকরের ছবি ও বই রেখে যেভাবে বিচ্ছিন্নতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মতাদর্শকে হাইলাইট করা হচ্ছে তাতে ভারতের ভবিষ্যত দুর্দশার রূপটি স্পস্ট হয়ে উঠছে। বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফেসবুকে দেখুন এখানে ক্লিক করে