Goutam Ray তিনটে কেন, সে যদি 50 টা ভাষা শিখতে চায় তাতে তো দোষের কিছু নেই। কিন্তু হিন্দিকে কাজের ভাষায় রূপান্তরিত করতে পারলে এবং তাই স্কুল পাঠ্য আনলে এই ভাষার আগ্রাসনের শিকার হবে বাংলা ভাষা। যেভাবে ইংরেজি ভাষা কাজের ভাষায় পরিণত হওয়ার কারণে সেও আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে অনেকটাই পঙ্গু করে ফেলেছে। এখন আর কেউ ছেলেমেয়েদের বাংলা মিডিয়ামে পড়াতে চায় না। ইংরেজি আন্তর্জাতিক ল্যাংগুয়েজ বা এই ধরনের অনেক যুক্তি দেয়া যেতে পারে ইংরেজির পক্ষে কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না যে, এই ভাষা বাংলা সহ অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষাকে প্রায় গিলে ফেলেছে। তার কারণ, উপনিবেশিক শাসনকালে ইংরেজ সরকার এই ভাষাকে কাজের ভাষায় রূপান্তরিত করতে সফল হয়েছিলেন।
আর পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা বলছেন? তারা তো নিজের ভাষাটাই ভালো করে শেখার সুযোগও পান না; তো অন্য ভাষা কীভাবে শিখবেন?
আর পরিযায়ী শ্রমিক শুধু পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্য প্রদেশের শুধু যায় তা তো নয়? অন্য প্রদেশে থেকেও মানুষ বাংলায় আসেন, পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে। আপনার চারপাশে তাকালেই দেখতে পাবেন, তারা আছে বহাল তবিয়তে এবং আপনার সঙ্গে অনায়াসে তারা বাংলা বলতে পারেন। এবার প্রশ্ন করুন তো নিজের কাছে, তারা কি বাংলা ভাষার কোর্স করে এখানে এসেছিল পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করার জন্য? না। তার দরকার হয় না। ভারতীয় ভাষাগুলোর মধ্যে যে আত্মীয়তা রয়েছে, যে নাড়ীর টান রয়েছে, তা-ই তাদেরকে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ভাষাগত সক্ষমতা তৈরি করে দেয়। এর জন্য স্কুলে কোন আঞ্চলিক ভাষা শেখার পাঠক্রম চালু করার প্রয়োজন হয় না। শিক্ষিত মানুষের জন্য হিন্দি শেখার প্রয়োজন হয় না, ইংরেজিই তাদের জন্য যথেষ্ট। এটা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকরী। তাই অতিরিক্ত তৃতীয় ভাষা চাপানোটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন