Goutam Ray দেশ ভরা 'লোক' নয়, বলেছি দেশ ভরা 'মানুষ' চাই। আচ্ছা, এই দুটো শব্দ যে সমার্থক নয়, এটা আপনি জানেন না? যদি না জানেন, আমি কী বা করতে পারি বলুন?
আপনি যে অর্থে 'মানুষ' কথাটা ব্যবহার করলেন, দ্বিতীয় কেউ এই অর্থে ব্যবহার করবেন বলে মনে হয় না।
যাই হোক, দেশে মানুষের সংখ্যা কমলে দেশের সংকট তৈরি হয়। জনসংখ্যা বাড়লে সেটাও সংকটের কারণ হয়, যদি না তাকে মানুষ করে তোলা যায় অর্থাৎ জনসংখ্যাকে মানব সম্পদে পরিণত না করা হয়। তবে, জনসংখ্যা যদি অত্যধিক হয়ে যায়, তাহলে সেই জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করা খানিকটা কঠিন হয় একথা সত্য।
কিন্তু এই জনসংখ্যাকে মানুষ বা মানব সম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব কার? আমার, না আপনার, না সরকারের? ভেবে দেখেছেন কখনো?
যদি বলেন, হ্যাঁ দেখেছি, তাহলে তার ব্যাখ্যা কী, জানতে খুব ইচ্ছা করে। জানালে খুশি হব।
তবে আমি জানি। জানি যে শুধু জনসংখ্যা কমালেই দেশের উন্নতি হয় না। ব্যাপারটাকে আমি এভাবে দেখি :
১) দেশের জনসংখ্যা অত্যধিক হলে সমস্যা হয়।
২) পরিমিত জনসংখ্যাই দেশের জন্য মঙ্গলজনক, একথা ততক্ষণ ঠিক, যতক্ষণ সরকার সেই জনসংখ্যাকে উপযুক্ত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা বিধান করতে পারে এবং জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করে। এই দুটোকে বাদ দিয়ে জনসংখ্যা কমানোর কথা বলাটা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।
৩) দেশের সরকার যদি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের কথা লাটে তুলে দিয়ে মন্দির-মসজিদ নিয়ে পড়ে থাকে, তাহলে জনগণের মধ্যে শিক্ষার প্রবেশ ঘটে না। যা ঘটে, তা অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার। এই অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার যে জনগণের সঙ্গী, তার পক্ষে মানুষ হয়ে ওঠা খুব কঠিন কাজ।
৪) তাই এই জনগণ স্বাস্থ্যকর্মীর কান ছিঁড়ে দেবে এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। উপযুক্ত শিক্ষা না দিয়ে, যদি ইনজেকশনের সিরিঞ্জ নিয়ে উপস্থিত হন সরকার, তাহলে সরকারের নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে শুধু কান ছিঁড়ে নেয়া নয়, উল্টে ওই সিরিঞ্জ স্বাস্থ্যকর্মীর পেটে ঢুকিয়ে দিলেও আশ্চর্য হবার কথা নয়। দেখছেন না চারিদিকে কি হচ্ছে? দেখে কি মনে হয় ভারতবর্ষের জনগণ শিক্ষিত হয়ে মানব সম্পদে পরিণত হয়েছে?
তাই অসহায় গরীব মানুষগুলোকে দোষ না দিয়ে, আমাদের সরকারের দিকে আঙ্গুল তোলা উচিত। দেশের সরকার যদি এই দায়িত্ব ঠিকঠাক না পালন করে এবং উল্টে মন্দির-মসজিদ মাথায় ঢুকিয়ে দিয়ে মাথাটাকে, বুদ্ধিটাকে চিবিয়ে খায়, তাহলে আমার আপনার কবিতা লিখে কোন কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না।😀😀
তবু লিখি, যদি দুটো জনগণও কবিতাটা পড়ে সত্যি সত্যি মানুষ হয়ে ওঠেন এবং আমার সঙ্গে ভাবার চেষ্টা করেন এই আশায়।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, এতে উল্টো বার্তা যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনি যদি জোর করে বলেন তাতেও আমার কিছু করার নেই। কিন্তু আপনি অপেক্ষা করে দেখুন উল্টো বার্তার কথা আর কজন বলেন।
যাই হোক ভালো থাকুন, সাবধানে থাকুন। আর আপনার যা মনে হয় নির্দ্বিধায় বলে যান। আপনার মতামত, আমি গ্রহণ করি বা না করি, খুবই মূল্যবান। তাই মতামত দিতে কুণ্ঠা করবেন না।
উৎস জানতে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন